বাংলারজমিন
ভৈরবে ব্যস্ততা বেড়েছে পাদুকা কারিগরদের
মো. রফিকুল ইসলাম, ভৈরব থেকে
২৩ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:১৭ পূর্বাহ্ন
দেশের বন্দরনগরী ভৈরব উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের নবী হোসেন। ৯ বছর পূর্বে তিনি মাত্র ৩ জন কারিগর নিয়ে মারিয়া সুজ নামে একটি পাদুকা কারখানা গড়ে তোলেন। গুণগত মানসম্পন্ন ও নান্দনিক পাদুকা তৈরির ফলে বাজারে মারিয়া সুজের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। পরের বছর থেকে আস্তে আস্তে বড় আকার ধারণ করে তার পাদুকা কারখানাটি। বর্তমানে শহরের শুম্ভুপুরের বাহার মার্কেটে নবী হোসেনের কারখানায় ৩০ জনের বেশি কারিগর কাজ করছেন। এক সময় নবী হোসেনও কাজ করতেন। এখন তিনি কারখানার হিসাব-নিকাশ আর দূরের পাদুকা ব্যবসায়ীদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নবী হোসেনের ব্যস্ততা। তার মতো সেলিম মিয়া, আলকাছ মিয়া ও শামীম আহমেদ এখন সফল পাদুকা কারখানার মালিক। অনেকের মতে, তারা জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। তাদেরকে দেখে এই শহরে গড়ে ওঠে দেশীয় হস্ত শিল্পের একের পর এক পাদুকা কারখানা। আর এসব পাদুকা তৈরির কাঁচামাল জোগান দিতে শতাধিক ম্যাটেরিয়ালসের দোকান এবং বক্সের চাহিদা মেটাতে অন্তত ২০টির বেশি বক্স কারখানা গড়ে উঠেছে। জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভৈরবের কমলপুর, শুম্ভুপুর, শিবপুর, গজারিয়া, কালিকাপ্রসাদে প্রায় ১০ হাজারের অধিক কারখানায় অন্তত ৬০ হাজার পাদুকা কারিগর কাজ করছেন। এসব কারখানায় সারা বছর কাজ না থাকলেও বছরের প্রথম ঈদ অর্থ্যাৎ রমজান মাসকে সামনে রেখে ৩ মাস কাজের যেন অন্ত নেই। ছোট-বড় সবার বাহারি রঙের নিত্যনতুন ডিজাইনে পাদুকা তৈরিতে ব্যস্ত তারা। পাদুকা কারিগর তোফাজ্জল হোসেন জানান, পিটিং, সেলাই ও রঙ করার জন্য আলাদা আলাদা কারিগর রয়েছে। ফলে একজন কারিগর দৈনিক এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আর এক মৌসুমে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার কাজ করতে পারেন তারা। তাছাড়া নিপুণ হাতের তৈরি এসব পাদুকা বিক্রি করতে শহরে ৬টি পাইকারি মার্কেট গড়ে উঠেছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ও পরিবহন খরচ কম হওয়ায় দেশের অধিকাংশ জেলা থেকে পাইকাররা এসব পাদুকা নিতে ভিড় করেন। ফলে রাজধানী ঢাকার পরেই ভৈরবে দেশের দ্বিতীয় পাদুকার বাজার গড়ে উঠেছে। এছাড়াও পানামা ও সৈনিক সুজসহ বেশ কয়েকটি কারখানা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে পাদুকা রপ্তানি করছে।
পাদুকা কারখানা মালিক, কারিগর ও ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশীয় পাদুকা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও ইন্ডিয়ান ও চায়না পাদুকার আগ্রাসনে বাজারে এর চাহিদা কমেই চলেছে। ফলে কারখানাগুলো সারা বছর পাদুকা উৎপাদন বা কারিগররা কাজ করতে পারছেন না।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শের মো. সোহরাব আলী বলেন, দেশীয় এই পাদুকা শিল্পের সঙ্গে নানাভাবে ভৈরবের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ অর্থ্যাৎ এক লক্ষাধিক লোক জড়িত রয়েছে। বাজারে এই পাদুকার চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু বাজারে চোরাই পথে আসা ভিনদেশি পাদুকার আগ্রাসনের শিকার এই শিল্পটি। ফলে আশানুরূপ বেচা-কেনা নেই। তাই, দেশীয় এই হস্ত শিল্পকে বাঁচাতে তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
পাদুকা কারখানা মালিক, কারিগর ও ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশীয় পাদুকা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও ইন্ডিয়ান ও চায়না পাদুকার আগ্রাসনে বাজারে এর চাহিদা কমেই চলেছে। ফলে কারখানাগুলো সারা বছর পাদুকা উৎপাদন বা কারিগররা কাজ করতে পারছেন না।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শের মো. সোহরাব আলী বলেন, দেশীয় এই পাদুকা শিল্পের সঙ্গে নানাভাবে ভৈরবের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ অর্থ্যাৎ এক লক্ষাধিক লোক জড়িত রয়েছে। বাজারে এই পাদুকার চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু বাজারে চোরাই পথে আসা ভিনদেশি পাদুকার আগ্রাসনের শিকার এই শিল্পটি। ফলে আশানুরূপ বেচা-কেনা নেই। তাই, দেশীয় এই হস্ত শিল্পকে বাঁচাতে তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।