বাংলারজমিন
নবীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে নৈরাজ্য, সড়ক অবরোধ
স্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ থেকে
২২ মে ২০১৯, বুধবার, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের নজিরবিহীন নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ সড়ক অবরোধ করেছে। গতকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। এসময় বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ ছাড়াও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার নিমিত্তে প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আতাউল গণি ওসমানী, থানার ওসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। এসময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন ছিল। সাধারণ নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিসভায় সংহতি প্রকাশ করে প্রশাসনের তরফ থেকে বক্তব্য দেয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়া হয়। আগামী এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেন আয়োজকবৃন্দ। প্রতিবাদ সভা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পবিত্র মাহে রমজান মাসে বিদ্যুতের সীমাহীন উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ইফতার, তারাবি ও সেহরির মুহূর্তেই বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে মুসল্লিরা তারাবির নামাজ আদায় করেন। এ যেন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ওদিকে, উপজেলাবাসীর ভোগান্তি লাঘবে সেন্ট্রাল জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন প্রজেক্টের আওতায় বিকল্প আরেকটি সোর্স লাইন স্থাপনের নিমিত্তে ৪৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের প্রস্থাব প্রেরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও জরাজীর্ণ তার ও খুঁটি পরিবর্তনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অসমাপ্ত কাজের গাফিলতির জন্যই বিদ্যুৎ বিভাগে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। মিটার রিডিংয়ের নামে অহেতুক বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারী ব্যক্ত করা হয়। সম্পূর্ণ প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। বিদ্যুৎ বিভাগে নৈরাজ্যের জন্য দায়িদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গত চার বছর ধরে লাইন মেরামত করার অজুহাতে সপ্তাহে ২ দিন (শুক্রবার ও শনিবার) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ নিয়ে ক্ষোভ সাধারণ মানুষ। এনিয়ে যে কোন মুহূর্তে বিস্ফোরণের আশংকা রয়েছে। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র নবীগঞ্জ বিবিয়ানা। বাংলাদেশের গ্যাস চাহিদার মোট ৬০ শতাংশ পূরণ করছে ওই ক্ষেত্র। বিবিয়ানার গ্যাস দিয়ে ৯০০ মেগওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র চালু রয়েছে। এরপরও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কলকারখানার ব্যবসায়ী, সংবাদকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। সামান্য বৃষ্টি ও বাতাসের আভাস পেলেই বিদ্যুত চলে যায়। বৈরী পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বিদ্যুৎ আসে না। কারণ জানতে চেয়ে অফিসে একাধিক বার ফোন করলে রিসিভ হয় না। আর ফোন রিসিভ করলেও প্রতিদিনই থাকছে বিভিন্ন অজুহাত। এসব অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাউল গণি ওসমানী, ওসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, নবীগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র এটিএম সালাম, মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, সাংবাদিক আলমগীর মিয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ।