বাংলারজমিন
কুড়িগ্রামে হতাশায় ঋণগ্রস্ত কৃষক
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে
২০ মে ২০১৯, সোমবার, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমে বোরোর ফলন ভালো হওয়ার পরও হাসি নেই কৃষকদের চোখে-মুখে। ধারদেনা করে ধানচাষ করে বাজারমূল্য না পেয়ে হতাশ তারা। এখন সোনাফলা ধান তাদের গলার কাঁটা হয়ে গেছে। সরকার দ্রুত প্রণোদনা ও বাজারমূল্য বৃদ্ধি না করলে কৃষক উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে বোরো চাষে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বিমল চন্দ্র দে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৮২ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯১ হেক্টর। ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ৭১ হাজার টন। যা ৫ হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছর আবহাওয়া বিরূপ আচড়ন করলেও ফলনে কোনো বিপর্যয় ঘটেনি। মাঠ জুড়ে সোনালী ধান দেখে কৃষকের মন-প্রাণ ভরে গেলেও ধান কাটতে গিয়ে বিপাকে পরেছে তারা। একদিকে শ্রমিক সংকট, অতিরিক্ত খরচ এবং কাঁচাধানের মূল্য সাড়ে ৪শ’ টাকায় নেমে যাওয়ায় ধান বিক্রি করে খরচ মেটাতে পারছে না তারা। কাঁঠালবাড়ীর শিবরাম এলাকার কৃষক হাছেন জানান, ‘যে ঋণটা করিয়াছি। ধানের ফলন দেখিয়া মনে করছি যে ধান বিক্রি করিয়া ঋণটা শোধ করমো। কিন্তু ঋণতো শোধ করা দূরের কথা আরো ঋণ করিয়া ধান কাটা নাগে। বাজারেতো কেউ ধান নেয় না। ঋণতো শোধ হবে না, আরো বাড়তি ঋণ হবে।’ হলোখানার কৃষক রুহুল আমিন জানান, ‘সরকার ১ হাজার টাকা রেট নির্ধারণ করে দিলেও পাবলিক তো পায় না। এক বিঘা জমিতে ধান গাড়া থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা খরচ লাগে। সেখানে ফলন পাওয়া যায় প্রায় ২০ মণ। যার এই মুহূর্তে বাজার মূল্য ৯ হাজার টাকা। এমন লোকসান হলে কৃষক ধান আবাদ করবে না। কাঁচাধান যদি বাজারে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মন না হয় তাহলে কৃষক বাঁচবে না। এবার যে পরিস্থিতি তাতে কৃষক মরে যাওয়ার মতো অবস্থা।’ ইতিমধ্যে একমণ ধানে শ্রমিক নিতে গিয়ে নিজেরাই ধান কাটতে লেগেছেন অনেক কৃষক। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এবার বাম্পার ফলন হলেও কৃষক ধানের মূল্য পাচ্ছে না। ধানের মূল্য অনেক কম। এর কারণে কৃষকেরা ধানচাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। ধানের মূল্য আসলে পাওয়াটা জরুরি।॥