শেষের পাতা

চট্টগ্রামে পাসপোর্টের জন্য হাজারো মানুষের আহাজারি

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে

১৮ মে ২০১৯, শনিবার, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হাজেরা খাতুন ওমরা করতে সৌদিয়া আরব যাবেন। পাসপোর্টের জন্য তিনি আবেদন করেছেন ৫৯ দিন আগে। কিন্তু তিনি এখনো পাসপোর্ট হাতে পাননি। তিনি বলেন, যে নরমাল পাসপোর্ট ২০ দিনের মধ্যে দেয়ার কথা, সে পাসপোর্ট পেতে তাকে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে, তা-ও জানি না। পাসপোর্ট অফিস থেকে কোনো সদুত্তরও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই প্রতিদিন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এসে পাসপোর্টের জন্য তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকি।  একই কথা বলেন, চন্দনাইশ উপজেলার কেশুয়া ইউনিয়নের নাসরিন আক্তার (৬২)। হার্টের চিকিৎসা করাতে ভারত যাবেন তিনি। জরুরি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন ২৯ দিন আগে। যে জরুরি পাসপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে তাঁর হাতে আসার কথা, ২০ দিনেও তিনি তা পাননি। পাসপোর্ট পেতে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে, তা-ও জানেন না তিনি। এ নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও মিলছে না কোনো সদুত্তর।

একই অবস্থা চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডবলমুরিং পাসপোর্ট কার্যালয়েও। দুই কার্যালয়ে দেখা যায় পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষমান কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তি। মূলত পাসপোর্ট বই সঙ্কটের কারনে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাসপোর্ট কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও গ্রাহকরা।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন মৃধা বলেন, ঢাকার সমস্যার কারণে ঠিক সময় পাসর্পোট পাচ্ছেনা গ্রাহকরা। প্রায় ৮ হাজার পাসপোর্ট আটকা পড়ে আছে। নির্ধারিত তারিখের পর প্রায় দেড় মাস পরে পাসপোর্ট পাচ্ছে। এ কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে অফিসে।

তিনি জানান, পাসপোর্ট অফিসের চাহিদার অর্ধেক পাসপোর্ট বই সরবরাহ করছে না ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। প্রতিদিন গড়ে এ অফিসে দুইশ থেকে আড়াইশ পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়লেও সে অনুপাতে পাসপোর্ট সরবরাহ করতে পারছে না। সমপ্রতি এই সংকট অত্যন্ত প্রকট হয়ে উঠেছে। ২ মাস যাবত ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।

সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফয়সল বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের নির্ধারিত সময়ের দুই মাস পর বুধবার রাতে মেসেজ পেয়েছেন তিনি। বৃহসপতিবার পাসপোর্ট নিতে এসেছেন। কিন্তু দুপুর ১টা পর্যন্ত বসে থেকেও পাসপোর্ট হাতে পাননি। পরে দুইশ টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মচারী তাঁকে পাসপোর্ট এনে দেয়।

টাকার বিনিময়ে আবেদনকারীদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দেওয়া একাধিক দালাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের মাধ্যমে অনেকে আবেদন করে। আমরা সিস্টেম মাধ্যমে কাজ করিয়ে দেই। কিন্তু পাসপোর্ট বই সংকট শুরুর পর আমরাও পাসপোর্ট যথাসময়ে এনে দিতে পারছি না।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু সাঈদ বলেন, হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাসপোর্ট বইয়ের সংকট দেখা দেয়। ফলে যথাসময়ে পাসপোর্ট পাচ্ছে না গ্রাহকরা। তবে দেরীতে হলেও আমরা পাসোপোর্ট দেওয়া অব্যাহত রেখেছি। সেই সাথে সংকট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status