প্রথম পাতা

উত্তরখানে মা ও দুই সন্তানের লাশ

নতুন তথ্য দিলেন ফরেনসিক চিকিৎসক

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর উত্তরখানে মা ও দুই সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছেন, বহিরাগত  কেউ নয় বরং তাদের তিন জনের মধ্যে একজন অন্য দুজনকে হত্যা করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার সরজমিন সিন অব ক্রাইম পরিদর্শন করেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে সাত সদস্যর একটি টিম। পরে গতকাল তিনি তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মা জাহানারা বেগম হয়তো তার দুই সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন অথবা ছেলে মহিম হাসান রশ্মি তার মা ও বোনকে হত্যা করে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু সোমবার এই তিন মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে এই চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগের নতুন তথ্য এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যকে আরও ঘনীভূত করছে।  

সোহেল মাহমুদ বলেন, ঘটনাস্থল এবং পুলিশের বর্ণনা থেকে দেখা যায় ওই বাসার দরজা ভেতর থেকে ছিটকিনি আটকানো ছিল। শাবল দিয়ে তা ভাঙ্গা হয়েছে। আমরা সিন অব ক্রাইমে গিয়ে প্রথমে ওই বাসার দরজার অবস্থানটা দেখে নিয়েছি। দরজার ভেতর থেকে ছিটকিনি ও লক করা ছিল। ভেতরে প্রবেশ করে ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখি মেঝেতে অনেক রক্তের দাগ  লেগে আছে এবং কিছু মরা মাছি দেখা যায়।  এরপর একটি বেড রুমে প্রবেশ করে দেখি তোষকের মধ্যে রক্তের দাগ ও ফ্লোরের মধ্যে বমি পাই। এছাড়া ডাইনিং টেবিলের ওপরে কিটনাশকের বোতল ও একপাতা ঘুমের ট্যাবলেট পাই। সব আলামত সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সিআইডির ল্যাবে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ক্রাইম সিন পরিদর্শন করে আমরা উত্তরখান থানায় জব্দকৃত আলামত দেখতে যাই। পুলিশের জব্দ তালিকায় ছিল, ১টি রক্তমাখা বটি ও চাকু। সেগুলো থেকে রক্ত ও আঙ্গুলের চাপ নিয়ে আমরা সিআইডির কাছে পাঠিয়েছি। ডিএনএ প্রোফাইলিং হলে আমরা এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত বলতে পারব।

প্রথমে হত্যার আলামত আর সিন অব ক্রাইম ভিজিট করে কেন মনে হচ্ছে এটা হত্যা নয় হত্যার পর আত্মহ্যা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বলেন, আমাদের কাছে মরদেহগুলো তিনদির পরে এসেছে। মরদেহ পচে বিকৃত হয়ে মাছি ভন ভন করছিল। প্রাথমিকভাবে আমরা হত্যার আলামত পেয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাস্থল সরজমিন পরদর্শন করে নতুন করে ভাবছি। তিনি বলেন, দরজা ভেঙ্গে তাদেরকে উদ্ধার, ভেতরে চিরকুট লেখা এসব দেখে আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে। কিন্তু ছেলের গলাকাটার ধরণ দেখে সন্দেহ আছে। এটি আত্মহত্যার সঙ্গে মিলে না। তাই আমরা ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি।  

গত রোববার রাতে উত্তর খান থানার ময়নারটেকের পানের টেক এলাকার একটি বাসা থেকে মা জাহানারা বেগম (৫০), ছেলে মুহিব হাসান রশ্মি (৩০) ও মেয়ে তাসফিয়া সুলতানা মিমের (১৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর পর থেকে নানা রহস্যর সৃষ্টি হয়েছে। এই মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে খোদ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ইতিমধ্যে নানামুখী তদন্তও শুরু হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status