খেলা

তবুও ‘ফাইনাল’ নিয়ে ভয় মাশরাফির

স্পোর্টস রিপোর্টার

১৫ মে ২০১৯, বুধবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

১৮ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৪ রানের। শেষ রানটি আসে ওয়াইড বল থেকে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল। যে ফাইনালে যেতে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে কোন ম্যাচই খেলতে হয়নি বাংলাদেশ দলের। আর সিরিজের অপর দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালের টিকিট কাটে আইরিশদের দুবার হারিয়ে।  নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় দেখেছিল বাংলাদেশ। আর সোমবার দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ বল বাকি থাকতে আসে ৫ উইকেটের জয়। ২৪৮ রান তাড়া করে জয়ের পর অপরাজিত থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমানের মধ্যে দেখা যায়নি বাড়তি উচ্ছ্বাস। সাধারণভাবেই দু’জন হাত মিলিয়ে মাঠ ছেড়ে বেড়িয়ে গেলেন। এমন আচরণে বুঝাই যায় কতটা দাপুটে ক্রিকেট খেলেছেন তারা ফাইনাল নিশ্চিত করতে। তবে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ফাইনাল নিয়ে একটু বেশিই চিন্তিত। তার কিছুটা ভয়ও আছে। কারণ এর আগে ওয়ানডেতে আরো ৪টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু একবারও হাতে ওঠেনি ট্রফি। আর সেই কারণেই এ বিষয়ে খুব বেশি বলতে রাজি হননি সংবাদমাধ্যমকে। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে আমার কোনো ফাইনাল কথা নেই। অনেক কথা হয়েছে আগে, অনেক অভিজ্ঞতা পেয়েছি। সেগুলো সুখকর ছিল না। এবারও যে কোনো কিছুই হতে পারে। আরেকবার সুযোগ এসেছে, আমরা আবারও চেষ্টা করব।’
এক ম্যাচ বাকি থাকতেই আয়ারল্যান্ডে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ১৭ মে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল পঞ্চম ফাইনাল খেলতে মাঠে নামবে। এছাড়াও টাইগারদের আরো দুটি ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে টি-টোয়েন্টিতে। বাংলাদেশ হেরেছে সবকটিতে। তিনটি ফাইনালে শেষ বলে হেরেছে বাংলাদেশ, দুটিতে হেরেছে শেষের আগের ওভারে। দুই ফরম্যাট মিলিয়ে ছয় ফাইনাল হারের পাঁচটিতেই ছিলেন মাশরাফি। এছাড়াও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনটিতে। তাই ট্রফি হাতছাড়া হওয়ার কষ্ট তিনি বেশ ভালভাবেই জানেন। মাশরাফি বলেন, ‘ট্রফি জিততে পারলে অবশ্যই ভালো লাগবে। আগে কখনও জিতিনি আমরা। তবে শুধু সেটিই নয়, বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা ইংল্যান্ড যেতে পারব।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে দুটি ম্যাচেই দারুণ দাপট দেখিয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যান বোলাররা।  সোমবার শুরুতে ডাবলিনের মালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব মাঠে  ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৪৭ রানে আটকে ফেলে বোলাররা। যদিও ক্যারিবীয়রা টসে জিতে টাইগারদের বোলিংয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু এ দিন মোস্তাফিজুর রহমান জ্বলে ওঠায় তনছন হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং লাইন। বল হাতে অধিনায়ক মাশরাফিও ছুঁয়েছেন নতুন রেকর্ড। এখন অধিনায়ক হিসেবে ১০০ উইকেট ছোঁয়ার অপেক্ষায়। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিয়েছেন ৩ উইকেট। আগের ম্যাচে ভীষন খরুচে বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ। কিন্তু এই ম্যাচে তার শিকার ৪টি উইকেট। একটি করে উইকেট নিলেও স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ প্রতিপক্ষের রানের লাগাম টেনে রেখেছিলেন। সাইফ উদ্দিনের চোটে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া আবু জায়েদ রাহী নজর কাড়তে পারেননি।
জবাব দিতে নেমে ফের বড় জুটির অভাব দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। কিন্তু ৫৬ রানের জুটি ভাঙে তামিম অ্যাশলি নার্সকে টানা দুটি চারের পর আবার বেরিয়ে মারতে গিয়ে আউট হলে। এ ধরনের খামখেয়ালি করতে ইদানিং খুব একটা দেখা যায় না তাকে। খেসারত দিয়েছেন ২১ রানে আউট হয়ে। কিন্তু সহ অধিনায়ক সাকিবের কল্যাণে পরের উইকেটেও ৫০ রানের জুটি আসে সৌম্যের সঙ্গে।  কিন্তু এই জুটির শেষটাও ঠিক আগেরটির মতো। নার্সকে বাউন্ডারি মারার পরই আবার বেরিয়ে খেলতে গিয়ে আলতো ক্যাচে ফেরেন ২৯ রান করা সাকিব। এরপর টানা দ্বিতীয় ফিফটির পর সৌম্যও (৬৭ বলে ৫৪) উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন নার্সকে। ১০৭ রানে দলের নেই ৩ উইকেট। চাপে পড়ে দল।  কিন্তু মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে রুখে দাঁড়ান আরেক ভরসা মুশফিকুর রহীম। চাপ সরিয়ে দু’জন দলকে এগিয়ে নেন ৮৩ রানের জুটি গড়ে। ৪৩ রান করে আউট হন মিঠুন। এরপর মুশফিক ৬৩ রান করে ফিরেন সাজঘরে। তবে মাহমুদুল্লাহ ও সাব্বির দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি। জয় নিয়েই মাঠ  ছাড়েন তারা। মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মোস্তাফিজ। এখন ফাইনালে এই দাপট ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন ইতিহাস।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status