এক্সক্লুসিভ

খেলা, মেলা ও ধর্মঘটে নাজেহাল চট্টগ্রামবাসী

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে

২৬ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১৩ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলা। ব্রিটিশদের দুঃশাসনের প্রতিবাদও এ খেলা। তবে কালক্রমে এ খেলা ঘিরে গড়ে উঠে মেলাও। চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এবার বসেছে এই আবদুল জব্বারের বলী খেলার ১১০তম আসর। তবে এ খেলার সাঙ্গে গড়ে উঠা মেলায় দুর্ভোগের শেষ নেই চট্টগ্রাম নগরবাসীর।

এই দুর্ভোগ যেন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের ডাকা দুদিনের ধর্মঘট। যা এখনো হুমকি হয়ে রয়েছে। আবদুল জব্বারের বলী খেলার মূল আসর গতকাল থাকলেও গত কয়েকদিন আগে থেকে গেড়ে বসে মেলা। মাটির তৈরি হাঁড়ি পাতিল ও খেলনা সামগ্রীসহ, বেত, কাঠ ও ধাতব পদার্থের তৈরি ঘর সাজানোর সব উপকরণ নিয়ে লালদীঘির মাঠের চারপাশে সড়কজুড়ে বসেছে এই মেলা। যার বিস্তৃতি ঘটেছে দুই থেকে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত। এতে শুরু হয় নানা দুর্ভোগ। এদিকে মরার ঘা হয়ে বসেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও ঢাকা মহাসড়কে ডাকা পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট। এতে এক রকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন চট্টগ্রাম নগরবাসী। পেশাজীবী থেকে ব্যবসায়ী সবাই যেন ঘুরপাক খাচ্ছেন এই নগরীর মধ্যে। সেখানেও পুলিশের বাধা। এই রুটে যাওয়া যাবে না, ওই রুটে যান।

ঘুরতে ঘুরতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার অবস্থা মানুষের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের আইনজীবী রাশেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাঙালী জাতিসত্তার সমৃদ্ধির জন্য ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলা আয়োজন দরকার। কিন্তু এই মেলাকে ঘিরে যে হারে মেলা গড়ে উঠেছে, তা যে জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে সে বিষয়টিও প্রশাসনের মাথায় রাখা দরকার। তবে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই মেলার কারণে শুধু সাধারণ জনগণ নয়, সিএমপির সববিভাগের পুলিশও চরমভাবে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের নিয়ন্ত্রণের কারণে কিছুটা হলেও মানুষ চলাফেরা করতে পারছে। জনদুর্ভোগের এই কথা চিন্তা করে লালদীঘি থেকে মেলা অন্যত্র স্থানান্তর করা দরকার বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, চট্টগ্রামে যোগাযোগের মূল নাভি হচ্ছে লালদীঘি ময়দান। মহানগরের কয়েকটি রুটের বাস স্টেশন এখানে। এ অবস্থায় আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও মেলার কারনে প্রায় ৮টি সড়কের বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, টেম্পুর, সিএনটি অটোরিকশা লালদীঘি ময়দানে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গত বুধবার থেকে যাতায়াতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তিনি বলেন, খেলা শেষ হলেও মেলা শেষ হতে সময় লাগবে আরো ৩-৪দিন। এ পর্যন্ত মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হবে। মহাসড়কে ধর্মঘটের কারণে এই ভোগান্তির মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে পরিবহণ শ্রমিক সংগঠনগুলো ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডাকলেও তারা পুনরায় নতুর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিচ্ছে। তারা যাতে নতুন কোন কর্মসূচি না দেয় তা নিয়ে পরিবহন সংগঠনগুলোর সাথে যোগাযোগ ও কথাবার্তা চলছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ সদস্য পরিচয়ে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের চালক জালাল উদ্দিনকে (৫০) নামিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে বুধবার ভোর থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় চট্টগ্রামের পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status