অনলাইন

ব্লাস্ট রোগে পুড়ছে কৃষকের ধান

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

২৪ এপ্রিল ২০১৯, বুধবার, ৩:২৯ পূর্বাহ্ন

সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার মধ্যে কমবেশি প্রতিটিতে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকের ধান পুড়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের দাবিী, কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক সময়ে ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন লাভ হয়নি। আর কৃষি অফিস বলছে, তারা সঠিক সময়ে পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু লোকবল সঙ্কটের কারণে কিছু কিছু জায়গায় সঠিক সময়ে তথ্য পৌছানো সম্ভব হয়নি। ৯টি উপজেলায় মাত্র ৪৫ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে বলে কৃষি অফিস দাবি করলেও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা এ হিসাব মানতে নারাজ।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুল হক বলেন, আক্রান্ত বীজ থেকে ধানের ব্লাস্ট রোগ ছড়ায়। ব্লাস্ট রোগ প্রথমে পাতায় ধরে, তখন সেটাকে লিফ ব্লাস্ট বলা হয়। ধীরে ধীরে এটা শীষে যায়। একটি গাছে এ রোগ ধরলে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট সময়ে বালাইনাশক দেয়া হলে এ রোগটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গত বছর এই রোগটা ব্যাপক হারে ছিল। এ বছর আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি আক্রান্ত বীজ ব্যবহার না করা এবং শীষ গজানোর আগেই ওষুধ প্রয়োগের জন্য। যে কারণে এবার রোগটা অতিমাত্রায় বিস্তার লাভ করেনি।

তিনি আরও বলেন, গত বছর যে সকল জমিতে এ রোগ দেখা দিয়েছিল, এবারও সেই সকল জমিই বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এ বছর জেলার ৯টি উপজেলায় ১ লাখ ৪০ হাজার ৪১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমির ধান ব্লাস্ট রোগে পুড়ে গেছে। আক্রান্ত এলাকার শীর্ষে রয়েছে কামারখন্দ, উল্লাপাড়া ও তাড়াশ উপজেলা। এছাড়াও কাজিপুর, সদর, রায়গঞ্জ, বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলারও কিছু কিছু জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

উপ-পরিচালক হাবিবুল হক আরও বলেন, এ রোগটি আগে গমে ধরতো। বছর তিনেক হলো এটি ধানে ধরছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে এটি হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে উপ-পরিচালক বলেন, প্রতি ইউনিয়নে কৃষি অফিসের লোক রয়েছে ২-৩ জন। কিন্তু কৃষকের সংখ্যা অনেক। লোকবল সঙ্কটের কারণে অনেক সময় দ্রুত তথ্য প্রচার করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে যারা আগে তথ্য পেয়েছে তারা উপকৃত হয়েছে। আর যারা দেরিতে তথ্য পেয়েছে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

কামারখন্দ উপজেলার পাইকোশা গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ জানান, চারা রোপণ থেকে শুরু করে শীষ গজানো পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। এরপরই ধীরে ধীরে পাতা ও শীষ পুড়ে যেতে থাকে। এভাবে ১০-১২ দিনের ব্যবধানে ক্ষেতের সব ধানই নষ্ট গেছে। কৃষি অফিসারদের কথামতো বালাইনাশক প্রয়োগ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।

উল্øাপাড়া উপজেলার চকনিহাল গ্রামের শমসের আলী ও সাইফুল ইসলাম জানান, ইরি-বোরো মৌসুমে বছরের সবচেয়ে বড় আবাদ হয়। এই সময়ে চাষ করা ধানের উপরই তাদের পুরো বছর চলতে হয়। প্রতি বিঘা ধান চাষে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়। সুদে টাকা ধার নিয়েও কেউ কেউ ধান চাষ করে থাকেন। কিন্তু ভয়াবহ এই ব্লাস্ট রোগের কারণে পুরো ধান পুড়ে গিয়ে জমিতে খড় টিকে রয়েছে। যে কারনে অনেক কৃষকই এবার সর্বশান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status