এক্সক্লুসিভ

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা

ওসি’সহ পুলিশের গাফিলিতির বিষয়ে ফের তদন্ত কমিটি

ফেনী প্রতিনিধি

২৪ এপ্রিল ২০১৯, বুধবার, ৯:৩০ পূর্বাহ্ন

ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় ফের তদন্তে নেমেছে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত দল। নুসরাত হত্যায় পুলিশের গাফিলিতির বিষয়টি ফের তদন্ত করছে দলটি। এদিকে সোমবার থেকে সিআইডির একটি তদন্ত দল মানি লন্ডারিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। অপরদিকে মাদ্রাসার পুরোনে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত দলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান জানান, নুসরাত হত্যার ঘটনায় তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ পুলিশের গাফিলতির বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ৫ সদস্যের তদন্ত দলটি গত ১৭ থেকে ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত তদন্ত করে ঢাকা ফিরে যায়। চার দিনের তদন্ত শেষে অধিকতর তদন্তের জন্য দুদিন পর ওই কমিটির দুই সদস্য ফের তদন্ত শুরু করেছে। ২২শে এপ্রিল থেকে দুদিনের তদন্ত শেষে ২৩শে এপ্রিল ঢাকা ফিরে যায় তদন্ত দলটি। এ দু’দিনে তদন্তদলটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭ জন চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, দুইজন শিক্ষার্থী ও ৪/৫ জন সাংবাদিকদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এদিকে সিআইডি তদন্ত দলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন জানান, সিআইডি পুলিশের একটি দল সোমবার থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তারা নুসরাত হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সোনাগাজীতে অবস্থিত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে অভিযান পরিচালনা করছে। এসময় তারা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ, মাদ্রাসার একাউন্ট ও বিভিন্ন ব্যক্তির একাউন্ট তদন্ত করছেন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যে সকল তথ্য উঠে এসেছে, সে সব বিষয়ে তদন্তে নেমেছে সিআইডির তদন্ত দলটি। তদন্ত শেষে ঢাকা সদর দপ্তরে তারা প্রতিবেদন জমা দিবেন।   

অপরদিকে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করার পর নতুন এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক) আহবায়ক করে ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি মাদ্রাসা পরিচালানার কাজ শুরু করেছে। তবে নুসরাত হত্যার ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

ওই কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এম এনামুল করিম প্রশিক্ষণে সিলেটে থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় লাগছে।  
গত ৬ই এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি পরীক্ষা প্রথম পত্র দিতে গেলে মাদ্রাসায় দুর্বৃত্তরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ দিন পর ১০ই এপ্রিল রাতে মারা যায়। পরদিন ১১ই এপ্রিল বিকেলে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ই এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।

আলোচিত এ মামলায় এজহারভুক্ত আট আসামিসহ এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী ৫ জন শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মনিসহ ৮ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন হুকুমদাতা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, আশ্রয়দাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, অর্থ যোগানদাতা পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবছার উদ্দিন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status