বিশ্বজমিন
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিকল্প অর্থায়ন চায় বাংলাদেশ
মানবজমিন ডেস্ক
২৩ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
ভবিষ্যত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ চায় বাংলাদেশ। তবে এ অর্থায়নের জন্য শুধু ঋণ বা লোনের উপর নির্ভশীলতা নয় বরং ইনোভেটিভ বা উদ্ভাবনী ফাইন্যান্সিং এর পথ খূঁজছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের সম্মেলনের আগে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে একথা বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, যেসব দেশ উচ্চ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে না, তাদের জন্য যে কোন অংকের ঋণ বিপজ্জনক হতে পারে। বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সম্পর্কিত ঋণ শোধ করার মতো অর্থনৈতিক শক্তি অর্জন করেছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমৃদ্ধ করতে ঢাকা এখন অন্য অর্থনৈতিক মডেলের দিকে নজর দিয়েছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট লিখেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। সে সময় দু’দেশের সরকার বিনিয়োগ ও ঋণ সংক্রান্ত ২৭টি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর অর্থমূল্য ২৪০০ কোটি ডলার। ওই সময় উদ্বেগ দেখা দেয় যে, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির জন্য এটা হতে পারে ঋণের একটি ফাঁদ। এমন সমালোচনাকে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের উপ প্রধান চেন ওয়েই পুরোপুরি ভুল বোঝাবুঝি, পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
আসন্ন বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে ঢাকা কি আরো ঋণ চাওয়ার পরিকল্পনা করছে? এমন প্রশ্ন করা হলে শাহরিয়ার আলম বলেছেন, তার সরকারের কখনো এমন ইচ্ছা ছিল না। কখনো আর অধিক ঋণ চাইবে না। তিনি বলেন, আমরা বহু কোম্পানি ও দেশের সঙ্গে অনেক প্রকল্প স্বাক্ষর করেছি। এটা হলো একটি প্রতিযোগিতামূলক ‘বিডিং’ পদ্ধতি। আমরা ওইসব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছি যারা বাংলাদেশে নিজেদেরকে কমকান্ড চালাতে পারে এবং নিজেরাই নিজেদের জন্য ঋণ আনতে পারে। এটাই আমাদের কাছে উত্তম।
তিনি বলেছেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মতো অন্যান্য আর্থিক মডেলও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এই মডেলের অধীনে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি বিদেশী কোম্পানি তাদের বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করতে পারে এবং উৎপাদিত বিদ্যুত বিক্রি করে খরচ তুলে নিতে পারে। এরপর একটি সুনির্দিষ্ট সময় শেষে ওই বিদ্যুতকেন্দ্রের মালিকানা চলে যাবে সরকারের হাতে। আমরা নতুন নতুন অর্থনৈতিক মেকানিজম বা কৌশল প্রণয়ন করছি। এভাবেই আমাদের ভবিষ্যতকে অর্থায়ন করতে চাই।
এই অর্থবছরে ঢাকা শতকরা ৮.১৩ ভাগ জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা করছে, যা আগের বছর ছিল শতকরা ৭.৮৬ ভাগ। প্রত্যাশিত এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এই বছর বাংলাদেশকে এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুতগতির অর্থনীতিতে পরিণত করবে।
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের মতে, ১০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোতে বিদেশী ঋণের চেয়ে ক্রমবর্ধমান হারে অর্থায়ন হয়েছে দেশের জাতীয় বাজেট থেকে বেশি। তিনি বলেছেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। অন্য অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। তিনি বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের ৮২০ কোটি ডলারের কথা তুলে ধরেন। তার ভাষায়, আমরা কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের চেন ওয়েই আলাদা এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, বাংলাদেশ যে বিদেশী ঋণ পেয়েছে তার বেশির ভাগই বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের। এর মধ্যে চীনা ঋণ শতকরার হিসাবে খুবই সামান্য। তিনি চীনকে বাংলাদেশের এক নম্বর বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন। এক্ষেত্রে গত বছরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৮৭৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে বলে তিনি তুলে ধরেন, যা ২০১৭ সালের তুলনায় শতকরা ১৬.৮ ভাগ বেশি। গত বছর এপ্রিলে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১০০ কোটি ডলার। স্থানীয় একটি পত্রিকার মতে, গত বছর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৭৬৬ কোটি ডলার। চেন ওয়েই বলেছেন, চীনের কাছে বাংলাদেশ যেসব পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার বিষয়ে উভয় পক্ষ শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো দেশ চীনের কাছে প্রচ-ভাবে ঋণের দায়ে আবদ্ধ। সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ তাদের তুলনায় অনেকটা নিরাপদ। এর অর্থ হলো, বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনায় জড়িত কিছু দরিদ্র দেশের তুলনায় বাংলাদেশ আরো ঋণ নেয়ার সক্ষমতা রাখে। কিন্তু ‘বটম লাইন’ হলো, এসব ঋণ বাংলাদেশের মতো ঋণ গ্রহীতাদের ওপর, যারা তুলনামুলক একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থানে আছে, তাদের ওপর উল্লেখযোগ্য কঠোরতা আরোপ করে। সেই ঝুঁকি থেকে ঢাকার সতর্কতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং যেসব ঋণচুক্তি করেছেন তার কোনো কোনোটিতে ২০১৭ সালে চীন সুদের হার বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছিল বলে ইঙ্গিত করেন নয়া দিল্লির সেন্টার অব পলিসি রিসার্সের প্রফেসর ব্রহ্ম চেলানি। তিনি বলেন, সরকার-টু- সরকারের মধ্যে নমনীয় শর্তে অর্থায়নের ওই চুক্তিকে বাণিজ্যিক ঋণে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রফেসর ব্রহ্ম চেলানি বলেন, বেইজিং বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর ওপর কৌশলে ও অর্থনৈতিকভাবে প্রয়োগ করে তাদেরকে তার অরবিটে নেয়ার জন্য কিভাবে চেষ্টা করছে এই উদ্যোগ সেটাকেই বড় করে তোলে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে একটি সতর্ক নীতি অবলম্বন করেছে। তারা চীনের ঋণের ফাঁদে না পড়ে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতা চেয়েছে।
অন্যদিকে চীনা ঋণ কিভাবে ঢাকা ব্যবহার করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘দ্য ফিউচার ইজ এশিয়ান’ বইয়ের লেখক ড. পরাগ খান্না। তিনি বলেন, তারা কি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বৈচিত্রে, কর্মসংস্থান ও এই জাতীয় কর্মকাণ্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে নাকি ওই অর্থ নষ্ট করা হচ্ছে? তিনি মনে করেন বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনায় চীন ও জড়িত অন্য দেশগুলো উভয়েই সুবিধা পাবে। কারণ, এতে বাণিজ্যিক করিডোর উন্মুক্ত করবে।
প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশকে তিনি কি পরিমাণ চীনা ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান ঢাকায় চীনা দূতাবাসের চেন ওয়েই। তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে বেশ কিছু সংখ্যক বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হবে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে। তবে দুই দেশের সরকারের মধ্যে ঋণ বিষয়ক কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হবে না।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট লিখেছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। সে সময় দু’দেশের সরকার বিনিয়োগ ও ঋণ সংক্রান্ত ২৭টি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর অর্থমূল্য ২৪০০ কোটি ডলার। ওই সময় উদ্বেগ দেখা দেয় যে, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির জন্য এটা হতে পারে ঋণের একটি ফাঁদ। এমন সমালোচনাকে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের উপ প্রধান চেন ওয়েই পুরোপুরি ভুল বোঝাবুঝি, পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
আসন্ন বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে ঢাকা কি আরো ঋণ চাওয়ার পরিকল্পনা করছে? এমন প্রশ্ন করা হলে শাহরিয়ার আলম বলেছেন, তার সরকারের কখনো এমন ইচ্ছা ছিল না। কখনো আর অধিক ঋণ চাইবে না। তিনি বলেন, আমরা বহু কোম্পানি ও দেশের সঙ্গে অনেক প্রকল্প স্বাক্ষর করেছি। এটা হলো একটি প্রতিযোগিতামূলক ‘বিডিং’ পদ্ধতি। আমরা ওইসব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছি যারা বাংলাদেশে নিজেদেরকে কমকান্ড চালাতে পারে এবং নিজেরাই নিজেদের জন্য ঋণ আনতে পারে। এটাই আমাদের কাছে উত্তম।
তিনি বলেছেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মতো অন্যান্য আর্থিক মডেলও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এই মডেলের অধীনে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি বিদেশী কোম্পানি তাদের বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করতে পারে এবং উৎপাদিত বিদ্যুত বিক্রি করে খরচ তুলে নিতে পারে। এরপর একটি সুনির্দিষ্ট সময় শেষে ওই বিদ্যুতকেন্দ্রের মালিকানা চলে যাবে সরকারের হাতে। আমরা নতুন নতুন অর্থনৈতিক মেকানিজম বা কৌশল প্রণয়ন করছি। এভাবেই আমাদের ভবিষ্যতকে অর্থায়ন করতে চাই।
এই অর্থবছরে ঢাকা শতকরা ৮.১৩ ভাগ জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা করছে, যা আগের বছর ছিল শতকরা ৭.৮৬ ভাগ। প্রত্যাশিত এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এই বছর বাংলাদেশকে এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুতগতির অর্থনীতিতে পরিণত করবে।
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের মতে, ১০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোতে বিদেশী ঋণের চেয়ে ক্রমবর্ধমান হারে অর্থায়ন হয়েছে দেশের জাতীয় বাজেট থেকে বেশি। তিনি বলেছেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। অন্য অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। তিনি বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের ৮২০ কোটি ডলারের কথা তুলে ধরেন। তার ভাষায়, আমরা কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের চেন ওয়েই আলাদা এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, বাংলাদেশ যে বিদেশী ঋণ পেয়েছে তার বেশির ভাগই বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের। এর মধ্যে চীনা ঋণ শতকরার হিসাবে খুবই সামান্য। তিনি চীনকে বাংলাদেশের এক নম্বর বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন। এক্ষেত্রে গত বছরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৮৭৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে বলে তিনি তুলে ধরেন, যা ২০১৭ সালের তুলনায় শতকরা ১৬.৮ ভাগ বেশি। গত বছর এপ্রিলে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১০০ কোটি ডলার। স্থানীয় একটি পত্রিকার মতে, গত বছর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৭৬৬ কোটি ডলার। চেন ওয়েই বলেছেন, চীনের কাছে বাংলাদেশ যেসব পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার বিষয়ে উভয় পক্ষ শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো দেশ চীনের কাছে প্রচ-ভাবে ঋণের দায়ে আবদ্ধ। সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ তাদের তুলনায় অনেকটা নিরাপদ। এর অর্থ হলো, বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনায় জড়িত কিছু দরিদ্র দেশের তুলনায় বাংলাদেশ আরো ঋণ নেয়ার সক্ষমতা রাখে। কিন্তু ‘বটম লাইন’ হলো, এসব ঋণ বাংলাদেশের মতো ঋণ গ্রহীতাদের ওপর, যারা তুলনামুলক একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থানে আছে, তাদের ওপর উল্লেখযোগ্য কঠোরতা আরোপ করে। সেই ঝুঁকি থেকে ঢাকার সতর্কতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং যেসব ঋণচুক্তি করেছেন তার কোনো কোনোটিতে ২০১৭ সালে চীন সুদের হার বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছিল বলে ইঙ্গিত করেন নয়া দিল্লির সেন্টার অব পলিসি রিসার্সের প্রফেসর ব্রহ্ম চেলানি। তিনি বলেন, সরকার-টু- সরকারের মধ্যে নমনীয় শর্তে অর্থায়নের ওই চুক্তিকে বাণিজ্যিক ঋণে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রফেসর ব্রহ্ম চেলানি বলেন, বেইজিং বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর ওপর কৌশলে ও অর্থনৈতিকভাবে প্রয়োগ করে তাদেরকে তার অরবিটে নেয়ার জন্য কিভাবে চেষ্টা করছে এই উদ্যোগ সেটাকেই বড় করে তোলে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে একটি সতর্ক নীতি অবলম্বন করেছে। তারা চীনের ঋণের ফাঁদে না পড়ে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতা চেয়েছে।
অন্যদিকে চীনা ঋণ কিভাবে ঢাকা ব্যবহার করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘দ্য ফিউচার ইজ এশিয়ান’ বইয়ের লেখক ড. পরাগ খান্না। তিনি বলেন, তারা কি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বৈচিত্রে, কর্মসংস্থান ও এই জাতীয় কর্মকাণ্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে নাকি ওই অর্থ নষ্ট করা হচ্ছে? তিনি মনে করেন বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনায় চীন ও জড়িত অন্য দেশগুলো উভয়েই সুবিধা পাবে। কারণ, এতে বাণিজ্যিক করিডোর উন্মুক্ত করবে।
প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশকে তিনি কি পরিমাণ চীনা ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান ঢাকায় চীনা দূতাবাসের চেন ওয়েই। তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে বেশ কিছু সংখ্যক বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হবে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে। তবে দুই দেশের সরকারের মধ্যে ঋণ বিষয়ক কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হবে না।