দেশ বিদেশ
টিএসসিতে দুই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে ইউপি চেয়ারম্যানের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
২৩ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির দুই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তাকে মারধর করে ভুক্তভোগী ও তাদের বন্ধুরা। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী সবাইকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, সবাই বহিরাগত হওয়ায় তাদের থানায় দেয়া হয়েছে। থানা তাদের বিষয়টি মীমাংসা করবে। যেন তারা ক্যাম্পাসে এসে ভবিষ্যতে এ ধরণের কোন কর্মকাণ্ড না করে। যদিও ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন উল্টো অভিযুক্তকে রক্ষা করে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী ও তাদের এক বন্ধুকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছেন। এবং ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হেনস্থা করেছেন। জানা গেছে, সোমবার দুপুরে টিএসসিতে আড্ডা দিচ্ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ও এক ছাত্র। এ সময় তাজুল ইসলাম তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে দুই ছাত্রীকে লক্ষ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। বিষয়টি নজরে আসলে ওই শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামকে ধরে মারধর করেন। এরপর তাজুল তার এলাকার পরিচিত ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজকে বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনা শুনে রিয়াজ কিছু লোকবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং ওই তিন শিক্ষার্থীকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে থানায় সোপর্দ করেন। এরপর তিনি অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বলেন, সোমবার দুপুরের আমরা আমাদের এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ওই বন্ধুর আসতে দেরী হচ্ছিল দেখে আমরা তিন বন্ধু টিএসসিতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমরা দেখতে পাই মাঝ বয়সী এক লোক আমাদের দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে। তখন আমরা তার পরিচয় জানতে চেয়ে এমন করছে কেন জানতে চাই। অন্যদিকে আমাদের সঙ্গে থাকা এক বন্ধু টিএসসির মামাদের কাছে এ লোক কোথাকার জানতে চায়। এরই মধ্যে বন্ধুকে দূরে দেখে দৌঁড়ে পালাতে চায় ওই ব্যক্তি। তখন আমরা দৌঁড়ে গিয়ে তাকে ধরে ফেলি। এবং কয়েকটি চড় থাপ্পড় দেই। এরই মধ্যে ওই লোকের পক্ষ হয়ে কিছু লোক এসে আমাদের নানাভাবে হেনস্থা করে ও বিভিন্ন অভিযোগ দিতে থাকে। পরে পুলিশ আমাদের থানায় নিয়ে আসে। ওসি আসার পর তিনি জানতে চান আমরা অভিযোগ দেব কিনা। কিন্তু আমরা চাইনি বিষয়টি নিয়ে আর ঝামেলা পোহাতে। যেখানে আমরা ভুক্তভোগী হয়েও প্রথমে হেনস্থার শিকার হয়েছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম বলেন, আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলছিলাম। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে আগালে তারা পিছন থেকে আমাকে ডেকে মারধর করে। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সত্য নয়। ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন বলেন, ওই লোক আমার এলাকার। তিনি একজন চেয়ারম্যান, সম্মানিত ব্যক্তি। তার নামে বহিরাগত ওই তিন শিক্ষার্থী যে অভিযোগ করেছে তা সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানিনা। তারা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেছে। এটা খুবই খারাপ করেছে তারা। এজন্যই তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।