বাংলারজমিন
নবীগঞ্জে কালবৈশাখী আতঙ্কে কৃষক
স্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ থেকে
২৩ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জে ১৩ ইউনিয়নের বোরো ফসল খ্যাত অধিকাংশ জনপদ বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাতের প্রহরে বাড়িঘর ও গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত শনিবার বিকালে বৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি শিলা বৃষ্টির ফলে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের আমড়াখাই হাওর, মকার হাওর, বড়ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়নের শৈলা, রামপুরের হাওর, বাগাউড়ার হাওর, হরিনগর হাওর, কাজিরগাওর হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে পাকা ও আধা পাকা ধান ঝড়ে পড়েছে। কৃষক পরিবারে হাহাকার দেখা দিয়েছে। অনেকের বাড়িঘর আংশিক আবার কারো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা, বৈদ্যুৎতিক খুঁটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া এবং ব্যাপক শিলা বৃষ্টির ফলে চলতি বোর মৌসুমের পাকা,আধা পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকে ধানকাটার শ্রমিক বিদায় করে দিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের দাবি কয়েক বছরের মধ্যে এমন শিলা বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়া দেখা যায়নি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষক সূত্র জানায়,ভাটিয়াঞ্চল হিসেবে পরিচিত পূর্ব ও পশ্চিম বড় ভাকৈড় ইউনিয়ন,করগাঁও ইউনিয়ন এবং দীঘলবাক ইউনিয়নের কৃষক অনেকটাই এক ফসলা (বোরো) জমির উপর নির্ভরশীল। শিলা বৃষ্টি আর ঝড়ের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত বর্গা চাষি কৃষক পরিবারে দরিদ্রতার অভিশাপ নেমে এসেছে। মড়ার উপর খরার ঘা হিসেবে মহাজনের উৎপাতে অতিষ্ট কৃষক। স্বর্ণের দোল আর বালা বিক্রি করেও মুক্তি মিলছে না। অনেকে পরিবারের শেষ সম্বল হিসেবে গবাদি পশুর বিক্রি করছে। সুদি টাকা নিয়ে জমির চাষাবাদ করে বিপাকে বর্গাচাষী ও মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবার। অকাল শিলা বৃষ্টির ফলে কৃষক পরিবার মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্গাচাষী ও মধ্যবিত্ত কৃষক মৌসুমী ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন। পাকা ধান গোলায় তোলে সেই ঋণ পরিশোধ করেন। ফসল হারা কৃষক গ্রামীণ সুদি মহাজন আতংকে দিনাতিপাত করছে। লগ্নি আর ধান্য ঋণ পরিশোধ নিয়ে রাজ্যের হতাশা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সুদমুক্ত ঋণ দেয়ার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও শিলা বৃষ্টির ফলে প্রথমদফা কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নবীগঞ্জে ১৭০ হেক্টর বোরো জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধান পাকার আগেই ওইসব এলাকার বোরো ফসল পানিতে তলিয়া যাওয়ায় জমির ধান পুরোপুরি বিনষ্ট হয়।