বাংলারজমিন

মুন্সীগঞ্জে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল উৎপাদন চলছে

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ থেকে

২০ এপ্রিল ২০১৯, শনিবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

কারেন্টজাল বা মনোফিলামেন্ট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত জেলা মুন্সীগঞ্জ। কারেন্টজাল উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ হলেও বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের শিল্পনগরী পঞ্চসার এলাকার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২শ’ ফ্যাক্টরিতে দিনরাতে ব্যাপকভাবে তৈরি করা হচ্ছে কারেন্টজাল। এ বিষয়ে কারেন্টজাল উৎপাদন ও বিপণনকারীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অফিস কারেন্টজাল বন্ধে দফায় দফায় বৈঠক করলেও কোনো সফলতা আসেনি। এতে করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুরস্থ গোসাইবাগ এলাকায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, ডিবি পুলিশ এবং জেলা মৎস্য অফিস যৌথ অভিযানে নামেন। এ সময় অবৈধ ৫টি ফ্যাক্টরি থেকে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫৭ লাখ ৫০ হাজার মিটার কারেন্টজাল জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ কারেন্টজাল ব্যবসায়ী তাজবীর আহমেদকে আটক করে মৎস্য সংরক্ষণ আইন ও ভোক্তা অধিকার আইনের দু’টি মামলায় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরআগে গত ১০ই এপ্রিল মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় কোস্টগার্ড এবং জেলা মৎস্য অফিস ৬৫-৭০টি কারেন্টজাল বিক্রির দোকানে অভিযান চালিয়ে ৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৪ কোটি ৭২ লাখ মিটার কারেন্টজাল জব্দ করে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বহিী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা কারেন্টজাল বিক্রির সঙ্গে জড়িত ২১ জনকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। পরে জব্দকৃত জাল ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহাম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আশফাকুজ্জামান,  এনডিসি সুবীর কুমার দাস, মুন্সীগঞ্জ ডিবি’র ওসি আলমগীর হোসেন ও আনিছুর রহমান, সদর মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর মুক্তারপুর এলাকায় কারেন্টজাল ব্যবসা শুরু হয়। মাত্র ৬ জন এ ব্যবসা প্রথম শুরু করেন। ১৯৯২ সাল থেকে ধীরে ধীরে এ ব্যবসার ব্যাপকতা বাড়তে থাকে। আর এ ফ্যাক্টরি পরিচালনা ও ব্যবসার নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য মৎস্য উপকরণ প্রস্তুতকারক মালিক সমবায় সমিতি নামে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও পঞ্চসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে আরেকটি সমিতি গঠন করে এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ শহর লাগোয়া পঞ্চসার ইউনিয়নের মুক্তারপুর, গোসাইবাগ, জোড়পুকুরপাড়, নয়াগাঁও, মালিরপাথর, ফিরিঙ্গী বাজার, মিরেশ্বরাই, বিনোদপুর, দয়ালবাজার, বিসিকসহ বিভিন্ন গ্রামে ২০০টি কারেন্টজাল তৈরি বা উৎপাদনের ফ্যাক্টরি রয়েছে। এছাড়া, মিরকাদিম পৌরসভা ও রামপালে আরও  বেশকিছু কারেন্টজাল তৈরির ফ্যাক্টরি আছে। ফ্যাক্টরিগুলোতে মেশিন রয়েছে আড়াই হাজার। এই এলাকা থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলে ও ব্যবসায়ীরা কারেন্টজাল ক্রয় করে নিয়ে যান। এক্ষেত্রে তারা নৌপথ ব্যবহার করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status