অনলাইন

শরীফের জবানিতে নুসরাতের উপর বর্বরতার চিত্র

ফেনী প্রতিনিধি

১৮ এপ্রিল ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে আবদুর রহিম শরীফ। বুধবার বিকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফেনীর জৈষ্ঠ হাকিম (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) মো. সারাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দিতে শরিফ নুসরাতকে নিয়ে যত ষড়যন্ত্র হয়েছে তার বিশদ বর্ণনা দিয়েছে। তার জবানিতে বর্বরতার  চিত্র ফুটে উঠেছে পিবিআই-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শরিফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে দেয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে সবকিছু বলা যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান। মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, পরবরতীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

এর আগে এ মামলায় গত রোববার মধ্যরাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় মামলার অন্যতম আসামী নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পিবিআই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামীদের আটক করেছে।

আলোচিত এ মামলা এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি ও শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ। এদের মধ্যে মামলার এজহারভুক্ত আট জনের মধ্যে ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি প্রথম পত্র পিরীক্ষা দিতে গেলে মাদরাসায় দুর্বৃত্তরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫দিন পর ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়।

জবানবন্দিতে শরীফ জানিয়েছে, নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার সময়  ৭ জনকে সঙ্গে নিয়ে সে মাদরাসার গেটে পাহারায় ছিল। ঘটনার আগের রাতে মাদরাসার পাশের পশ্চিম হোস্টেলে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।  হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি আবদুর রহিম শরীফকে বুধবার ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
শরীফ জানায়, নূর উদ্দিনের নেতৃত্বে হাফেজ আবদুল কাদেরসহ মোট সাতজন ঘটনার আগে থেকেই মাদরাসার গেটে ছিল। পরিকল্পনামতো শাহাদাত হোসেন শামীমসহ পাঁচজন নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর নুর উদ্দিন তাদের নির্দেশ দেয় অবস্থান ত্যাগ করে  অন্যত্র চলে যেতে। তারপর তারা সেখান থেকে যে-যার মতো চলে যায়।

জবানবন্দিতে শরীফ বলেছে, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে যৌন নির্যাতনের মামলা দিয়ে হেয় করায় তারা নুসরাতকে কঠিন সাজা দিতে শপথ নিয়েছিল। সেই অনুযায়ী জেলখানায় গিয়ে সিরাজ উদ দৌলার কাছ থেকে হুকুম পেয়ে সে নুসরাত হত্যায় জড়িত হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status