দেশ বিদেশ

যে নোটিশে তোলপাড় সিলেট

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১৮ এপ্রিল ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

একটি নোটিশ ঝুলছে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। নয়া সাব- রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তারের তরফ থেকে এ নোটিশ জারি করা হয়েছে। এতে রয়েছে তিনটি নির্দেশনা। এই নির্দেশনাগুলো পালন করতে সিলেট সদরের সকল দলিল লেখকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আর তার এই নোটিশে তোলপাড় চলছে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাহলে কী এতদিন অবৈধদের নানা কর্মকাণ্ড ঘটতো সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে। নোটিশের পর অনেকেই খুশি। আবার ক্ষুব্ধ হয়েছে কেউ কেউ। তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রারকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। সমিতির ব্যানারে করা হচ্ছে আন্দোলনও। চলতি মাসের ৭ই এপ্রিল সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান করেছেন নতুন সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার। যোগদানের পর থেকে তিনি দলিল রেজিস্ট্রি করছেন। কিন্তু নানা বিষয়ে সন্দেহ হওয়ার কারণে গত সোমবার তিনি সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তিনটি নির্দেশনা সংবলিত নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছেন। নোটিশে সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দলিল দাখিলের সময় ধার্য করে দিয়েছেন। মোসাবিদাকারীকে নিজে দলিল দাখিল করতে হবে এবং সঙ্গে পারিশ্রমিকের রসিদ দিতে হবে, নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভিজিট কমিশন কারণ উল্লেখ পূর্বক অথবা ডাক্তারি সার্টিফিকেটসহ বিকাল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে আবেদন করার জন্য নোটিশে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে কয়েকজন সিনিয়র দলিল লেখক জানিয়েছেন, দলিল রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে এটাই নিয়ম। সরকারিভাবে এই নিয়মগুলো পালন করেই দলিল সম্পাদন করতে হয়। কিন্তু এতদিন সিলেটে এই নিয়ম পালন করা হয়নি। নতুন সাব-রেজিস্ট্রার এসে যে নিয়ম চালু করেছেন সেটি বেআইনি নয়, আইনসম্মত। এই নোটিশের পর থেকে সিলেট সদর দলিল লেখক সমিতির একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা এই নিয়মের সঙ্গে একমত পোষণ করতে পারছেন না। সিলেট সদর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ লোকমান মিয়া জানিয়েছেন, ‘সিলেটে আমার বাড়ি। অনেকেই দলিল নিয়ে আসেন। তারা আমাদের টাকা দেন না। পরে দেন। কিন্তু আমরা কীভাবে রসিদ প্রদান করি। এসব নিয়মের কারণে সদরের দলিল লেখকরা ক্ষুব্ধ রয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু পারছি, তার দেয়া নির্দেশ মতোই দলিল রেজিস্ট্রি করার চেষ্টা করছি। কিন্তু রসিদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বেকায়দায় আছেন বলে জানান। সিলেট সদর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাজী মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা রেজিস্ট্রারের দ্বারস্থ হয়েছি। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এদিকে সরাসরি এই তিন বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তারের বিরোধিতা করতে পারছেন না দলিল লেখকরা। এতে তারা পারভীন আক্তারের বিরুদ্ধে বিলম্বে অফিসে আসার অভিযোগ তুলেছেন। এই অভিযোগ গত মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট সদর দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে তারা এই প্রতিবাদ জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শেখ লোকমান মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কুতুব উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক আকবর হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক শাহীন আহমদ, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব কেন্দ্রীয় কমিটি লুৎফুর রহমান খান, দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম আলী খোকন, সদস্য মো. সাবুল মিয়া, ওয়ারিছ আলী, জালাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, মান্না, রাসেল, খালেদ, গউছ উদ্দিন,  দেলোয়ার, ফখর উদ্দিন প্রমুখ। তারা জানিয়েছেন, সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগ দেন পারভীন আক্তার। যোগদানের পর থেকেই সকালে অফিস করার তাগিদ করেন। কিন্তু তিনি ঠিকমতো অফিসে আসছেন না।
যার ফলে গ্রাহক ও দলিল লেখকরা নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ফরিদুর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব মইনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, দলিল রেজিস্ট্রি করার কিছু নিয়ম রয়েছে। সিলেটের দলিল লেখকরা সব সময়ই সঠিক নিয়ম মেনেই দলিল রেজিস্ট্রি করছেন বলে জানান তারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status