বাংলারজমিন
চট্টগ্রামের ১৭ পাহাড়ে ৮৩৫ পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ
ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে:
১৭ এপ্রিল ২০১৯, বুধবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৭ পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন ৮৩৫ পরিবার। অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে এসব পরিবার বাস করছে পাহাড়গুলোতে। গতকাল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৈরি করা একটি তালিকায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। সভায় বলা হয়, আসন্ন বর্ষায় পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকানোর অংশ হিসেবে পাহাড়ের ওপর অবৈধভাবে বসতি গড়ে তোলা এসব পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যাদেরকে উচ্ছেদ বা নিরাপদে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। তথ্য মতে, নগরীর ১৭ পাহাড়ের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন ১০ পাহাড়ে অবৈধভাবে বাস করছে ৫৩১ পরিবার। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন ৭ পাহাড়ে বাস করছে ৩০৪ পরিবার।
সভায় জানানো হয়, তালিকাটি প্রণয়নের আগে চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করতে গত ৩রা মার্চ জেলা প্রশাসন থেকে নগরীর সদর, কাট্টলি, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ ও পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে চিঠি দেয়া হয়।
পরে ছয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের নাম ও মালিকানা, অবৈধ বসবাসকারীর নাম, পরিবারের সদস্যসংখ্যা উল্লেখ করে একটি হালনাগাদ তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন চলতি সপ্তাহে। ওই তালিকায় অবৈধ স্থাপনার বিবরণ এবং অবৈধভাবে ভাড়া প্রদানকারীর নাম ও ঠিকানাও রয়েছে। হালনাগাদ তালিকা মতে, নগরীর রেলওয়ের লেকসিটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২২ পরিবার, পূর্ব ফিরোজ শাহ ১ নাম্বার ঝিল সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২৮ পরিবার এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মালিনাকানাধীন কৈবল্যধামস্থ বিশ্ব কলোনি পাহাড়ে আছে ২৮টি পরিবার, পরিবেশ অধিদপ্তর সংলগ্ন সিটি করপোরেশন পাহাড়ে আছে ১০ পরিবার, রেলওয়ে, সড়ক যোগাযোগ বিভাগ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ওয়াসার মালিকানাধীন মতিঝর্ণা ও বাটালি হিল সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ১৬২ পরিবার, ব্যক্তি মালিকানাধীন একে খান অ্যান্ড কোম্পানির পাহাড়ে আছে ২৬ পরিবার, হারুন খানের পাহাড়ে আছে ৩৩ পরিবার, খাস খতিয়ানভুক্ত পলিটেকনিক কলেজ সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ৪৩ পরিবার, মধুশাহ পাহাড়ে আছে ৩৪ পরিবার, ফয়েজলেক আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে নয় পরিবার, ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ৩৩ পরিবার, ভিপি সম্পত্তি লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ১১ পরিবার, এম আর সিদ্দিকীর পাহাড়ে আট পরিবার, মিয়ার পাহাড়ে ৩২ পরিবার, ভেড়া ফকিরের পাহাড়ে ১১ পরিবার, আামিন কলোনি সংলগ্ন ট্যাংকির পাহাড়ে ১৬ পরিবার ও আকবরশাহ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২৮ পরিবার। সব মিলে উল্লিখিত ৮৩৫ পরিবারই প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ।
সভায় আরো বলা হয়, পাহাড়ের আশপাশের স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড় কিংবা পাহাড়ের পাদদেশ কেটে সমতল করে কাঁচা-পাকা ঘর নির্মাণ করে আসার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পাহাড়ের মালিকরা থাকেন নীরবে। বরং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব পাহাড়ে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করা হয় বলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দেয়া এক তদন্তে উঠে এসেছিল। এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হলেও কিছুদিন পর তারা আবারো ফিরে আসে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া হিসেবেই পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়ে অবৈধ বসতকারীরা। এসব বসতির মালিকরা বরাবরই থেকে যায় আড়ালে। ফলে পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।
এ বিষয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, এবার বর্ষাকে সামনে রেখে কঠোর ও গোছানো পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কাজের সুবিধার্থে এ সংক্রান্ত সভায় এবার যুক্ত করা হয়েছে ইউএনও, র্যাব, বিজিবিসহ সরকারি-বেসরকারি ৭০ ব্যক্তি ও সংস্থাকে।
তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে যেন আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে এ পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দুর্যোগের সময়কে বিবেচনায় রেখে আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। কিন্তু পাহাড়গুলোর মালিকদের কি কোনো ভূমিকা নেই? পাহাড় ধসের দায় কি তাদের নেই? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের করা আগের তালিকায় মহানগর ও আশপাশের এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৬৮৪ পরিবার বাস করার কথা বলা হয়েছিল। পাহাড় ধসে প্রভাবশালী ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দুর্বৃত্তায়ন অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী উল্লেখ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দাখিল করা প্রতিবেদনে বিরাজমান সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো মূল্যে পাহাড় কাটা বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাস, পাহাড় কর্তন ও করণীয় সম্পর্কে রূপরেখা সংবলিত প্রতিবেদন গত বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জমা দেয়া হয়েছিল। এছাড়া পাহাড় ধসের মহাবিপর্যয় ঠেকাতে প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশও করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
সভায় জানানো হয়, তালিকাটি প্রণয়নের আগে চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করতে গত ৩রা মার্চ জেলা প্রশাসন থেকে নগরীর সদর, কাট্টলি, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ ও পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে চিঠি দেয়া হয়।
পরে ছয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের নাম ও মালিকানা, অবৈধ বসবাসকারীর নাম, পরিবারের সদস্যসংখ্যা উল্লেখ করে একটি হালনাগাদ তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন চলতি সপ্তাহে। ওই তালিকায় অবৈধ স্থাপনার বিবরণ এবং অবৈধভাবে ভাড়া প্রদানকারীর নাম ও ঠিকানাও রয়েছে। হালনাগাদ তালিকা মতে, নগরীর রেলওয়ের লেকসিটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২২ পরিবার, পূর্ব ফিরোজ শাহ ১ নাম্বার ঝিল সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২৮ পরিবার এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মালিনাকানাধীন কৈবল্যধামস্থ বিশ্ব কলোনি পাহাড়ে আছে ২৮টি পরিবার, পরিবেশ অধিদপ্তর সংলগ্ন সিটি করপোরেশন পাহাড়ে আছে ১০ পরিবার, রেলওয়ে, সড়ক যোগাযোগ বিভাগ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ওয়াসার মালিকানাধীন মতিঝর্ণা ও বাটালি হিল সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ১৬২ পরিবার, ব্যক্তি মালিকানাধীন একে খান অ্যান্ড কোম্পানির পাহাড়ে আছে ২৬ পরিবার, হারুন খানের পাহাড়ে আছে ৩৩ পরিবার, খাস খতিয়ানভুক্ত পলিটেকনিক কলেজ সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ৪৩ পরিবার, মধুশাহ পাহাড়ে আছে ৩৪ পরিবার, ফয়েজলেক আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে নয় পরিবার, ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ৩৩ পরিবার, ভিপি সম্পত্তি লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ১১ পরিবার, এম আর সিদ্দিকীর পাহাড়ে আট পরিবার, মিয়ার পাহাড়ে ৩২ পরিবার, ভেড়া ফকিরের পাহাড়ে ১১ পরিবার, আামিন কলোনি সংলগ্ন ট্যাংকির পাহাড়ে ১৬ পরিবার ও আকবরশাহ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে আছে ২৮ পরিবার। সব মিলে উল্লিখিত ৮৩৫ পরিবারই প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ।
সভায় আরো বলা হয়, পাহাড়ের আশপাশের স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড় কিংবা পাহাড়ের পাদদেশ কেটে সমতল করে কাঁচা-পাকা ঘর নির্মাণ করে আসার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পাহাড়ের মালিকরা থাকেন নীরবে। বরং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব পাহাড়ে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করা হয় বলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দেয়া এক তদন্তে উঠে এসেছিল। এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হলেও কিছুদিন পর তারা আবারো ফিরে আসে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া হিসেবেই পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়ে অবৈধ বসতকারীরা। এসব বসতির মালিকরা বরাবরই থেকে যায় আড়ালে। ফলে পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।
এ বিষয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, এবার বর্ষাকে সামনে রেখে কঠোর ও গোছানো পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কাজের সুবিধার্থে এ সংক্রান্ত সভায় এবার যুক্ত করা হয়েছে ইউএনও, র্যাব, বিজিবিসহ সরকারি-বেসরকারি ৭০ ব্যক্তি ও সংস্থাকে।
তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে যেন আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে এ পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দুর্যোগের সময়কে বিবেচনায় রেখে আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। কিন্তু পাহাড়গুলোর মালিকদের কি কোনো ভূমিকা নেই? পাহাড় ধসের দায় কি তাদের নেই? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের করা আগের তালিকায় মহানগর ও আশপাশের এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৬৮৪ পরিবার বাস করার কথা বলা হয়েছিল। পাহাড় ধসে প্রভাবশালী ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দুর্বৃত্তায়ন অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী উল্লেখ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরীর দাখিল করা প্রতিবেদনে বিরাজমান সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো মূল্যে পাহাড় কাটা বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাস, পাহাড় কর্তন ও করণীয় সম্পর্কে রূপরেখা সংবলিত প্রতিবেদন গত বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জমা দেয়া হয়েছিল। এছাড়া পাহাড় ধসের মহাবিপর্যয় ঠেকাতে প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশও করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন করা হয়নি।