বাংলারজমিন

সেতু আছে রাস্তা নেই!

খালিদ হোসেন সুমন, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) থেকে

১৬ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ছত্রপুর খালের মাঝখানে সেতু নির্মাণ করা হলেও সেতুটির দুই পাশে মাটি ভরাট নেই পাশাপাশি সংযোগ সড়কের অস্তিত্বও নেই। চূড়ান্ত বিল তুলে নেয়া হলেও রাস্তা সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করা হয়নি। এর কোনো সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় জনগণের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হৃদিম কনস্ট্রাকশন ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেন। সে সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু সেতুর গোড়ায় দেয়া হয়নি মাটি, নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ রাস্তা। ফলে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে সেতুর ওপরে ওঠাই অসম্ভব।
স্থানীয়রা জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক হলে কান্দাবাড়িল্যা, বড় বাড়িল্যা, বাড়িল্যা, নবগ্রাম, কুমার বাড়িল্যাসহ আশপাশের এলাকার মানুষ খুব সহজেই পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও দোহার যেতে পারবে। প্রায় এক বছর আগে সেতুটি নির্মাণ হলেও আশার আলো দেখেনি স্থানীয়রা। কিন্তু সেতুর দুইপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় মানুষ বিপাকে পড়েছে। অথচ সড়কটি হলে অল্প সময়ের মধ্যে স্থানীয়রা নবাবগঞ্জ বান্দুরা সহজে যাতায়াত করতে পারতো। এ ছাড়াও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ে তাদের বিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারতো।
কলেজ শিক্ষার্র্থী মো. মিরাজ জানান সেতুটি নির্মাণে খুশি হয়েছিলাম। মনে করেছিলাম রাস্তা হলে বাড়িল্যা কবরস্থানে যেতে ছত্রপুর করপাড়া সমাজের মানুষের অনেক উপকার হবে উপকার হবে শিক্ষার্থীদেরও। রাস্তাই যদি না থাকে সেতু কোনো কাজে লাগবে না।
 বারুয়াখালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, সেতুর দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে পাকা রাস্তা উত্তর দিকে রয়েছে বিল এখানে রাস্তা ছাড়া সেতু নির্মাণ জনগণের সঙ্গে মশকরা ছাড়া আর কিছু না। তা ছাড়া ঠিকাদার সেতুটি তৈরিতে নিম্ন মানের মাল সামগ্রী ব্যবহার করেছে এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি।
কুমার বাড়িল্যা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা রানী মণ্ডল বলেন, আমাদের স্কুলে খালের ওপাড় থেকে  অনেক ছেলে-মেয়ে পড়াশুনা করতে আসে। সামান্য বৃষ্টি হলেই খালে পানি জমে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে ঠিকমতো আসতে চায় না। রাস্তাটি হওয়া খুব জরুরি।
 স্থানীয় চাকরিজীবী আজাদ বলেন, সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে অথচ এখানে সেতু আছে, সড়ক নাই। যার কারণে আমরা সেতুটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। ফলে সেতু নির্মাণ করাটাই বেকার। সরকারি এত টাকা খরচ করে এসব করা গচ্চা যাওয়া ছাড়া আর কিছুই না।
বারুয়াখালী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মালা সুলতানা বলেন সেতু আছে রাস্তা নাই এতে করে মানুষের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। তবে খুব দ্রুত রাস্তাটি হওয়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে বারুয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাটের ব্যাপারে ঠিকাদারের সঙ্গে আমার  কথা হয়েছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। সংযোগ সড়কের বিষয়ে বলেন প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 এ ব্যাপারে রিদিম কনস্ট্রাশন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার জাহাঙ্গীর চোকদার বলেন, সেতুটি নির্মাণকালে খালে পানি চলে আসায় দুই পাশে মাটি ভরাট করা সম্ভব হয়নি তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে। চূড়ান্ত বিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিল আমি সম্পূর্ণ তুলে নিয়েছি।
 উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার সাগর হোসেন সৈকত বলেন আমি নতুন এসেছি। এসেই আমি এ ধরনের ৮/১০ সেতুর মাটি ভরাটের কাজ শেষ করেছি। ছত্রপুর খালের ওপর সেতুর মাটি ভরাটের বিষয়টি কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি। তবে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status