বাংলারজমিন

নুসরাত হত্যাকা-ের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জড়িত: মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকা-ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ এর তৃতীয় বর্ষপূর্তী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ও প্রথম প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ড. মোশররফ বলেন, নুসরাতের হত্যাকারীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগ নেতার কারণেই এই হত্যাকান্ডের স্বপক্ষে সভা সমাবেশ হয়েছে ফেনীর সোনাগাজীতে। অধ্যক্ষ সিরাজ ওলামা লীগ নেতা। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা এখন বিভিন্ন কথা বলে এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা এখন মাদরাসা শিক্ষার উপর কটাক্ষ করছে। কিন্তু দোষ ব্যক্তির, কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষা ব্যবস্থার না। ড. মোশাররফ বলেন, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ১৪টি ব্যাংকের মূলধন এখন তিন জন আওয়ামী লীগ নেতার হাতে। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই। বিচারকরা স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারেন না। তারেক রহমানকে খালাস দেয়া বিচারককে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছিলো। বিচার ব্যবস্থা এখন এক জন ব্যক্তির ইচ্ছায় অনিচ্ছায় পরিচালিত হচ্ছে। সাক্ষী প্রমাণ ছাড়াই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়েছে উচ্চ আদালত। এই ধরনের মামলায় জামিন হয়। কিন্তু বিভিন্ন মারপ্যাচে ১৩ মাস তিনি অন্যায়ভাবে কারাগারে। দেশে যে আইনের শাসন নেই এটিই তার উদাহারণ। আলোচনাসভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে বিচার বিভাগের চরম অবনতি হয়েছে। বিচারকরা চরিত্রহীন হয়ে যাচ্ছেন। তারা আইন ভুলে গেছেন। জামিন আটকে রাখা হচ্ছে অন্যায়ভাবে। গণতন্ত্র না থাকলে বিচার বিভাগের এমন অবনতি ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। বিচারকদের মনে রাখতে হবে কখনো না কখনো তাদের জনতার আদালতে হাজির হতে হবে। ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আজকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের অফিস। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করেছেন, কিন্তু বিরোধী দলের কোনো মামলার ক্ষেত্রে কি হচ্ছে তা সবার জানা। মামলা প্রত্যাহার করছেন না, জামিন দিচ্ছেন না। বিচার বিভাগের বিবেকহীনতার কারণেই এই জাতীয় ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে না।
 খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা হলো তাকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া। পৃথিবীর আলো বাতাস দেখতে দেয়া। সেটা না করে যদি মাথা ব্যাথার জন্য পা টিপে দেয়া হয়, তাহলে কি মাথা ব্যাথা কমবে? খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় চিকিৎসা হবে তার মানসিক একাকীত্বের। এর জন্য কোনো চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়নি। তবে যাই হোক তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হোক। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা কোনো মর্মান্তিক পরিণতি চাই না। আমরা চাই আপনার ভালো কাজের জন্য আপনাকে দেশবাসী মনে রাখুক। অনুগ্রহ করে অনতিবিলম্বে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আলোচনার পথ সুগম করুন। রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিন। অন্তত খালেদা জিয়ার জামিনের ব্যবস্থা করুন। যাতে আমরা দেশে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করতে পারি। নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুমুদর রহমান মান্না বলেন, নুসরাত হত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করতে দেয়নি কে? আওয়ামী লীগ নেতার কারনেই নুসরাত মারা গেছে। নুসরাতের জন্য চোখ ভিজে যায়। কিন্তু সরকার অশ্রুর মূল্য দেয়না। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আগের বিভিন্ন ঘটনা ধামাচাপা দেয়াতেই নুসরাতের মতো এই ধরণের ঘটনা ঘটছে। তারা আমাদের সরকার নয়। তারা নির্বাচিত নয়। তাদের মানবো না। সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট মো. আল আমিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, আদর্শ নাগরিক আন্দোলন এর নেতা খন্দকার মো. মহিউদ্দিন মাহিসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status