শিক্ষাঙ্গন

চাঁদপুরে গোপনে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

চাঁদপুর প্রতিনিধি

১৪ এপ্রিল ২০১৯, রবিবার, ৮:৩২ পূর্বাহ্ন

পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ইলিশের রাজধানী চাঁদপুরে গোপনে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুরের বাজারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি নিষিদ্ধ থাকায় গোপনে ইলিশ বিক্রি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় সরকার মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) পুঁজি করে এক শ্রেণির বিক্রেতা ইলিশের দাম সাধারণ সময়ের চাইতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। চাঁদপুর শহর কিংবা জেলার অন্য কোনো বাজারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না। চাহিদা থাকলেও আইনি ভয়ে ক্রেতারাও নীরব। কারণ প্রতিনিয়ত বাজারগুলো মনিটরিং করছেন জেলা ট্রাস্কফোর্স।
গত শুক্রবার সকালে জেলার সব চাইতে বড় মৎস্য আড়ৎ বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখাগেছে সবগুলো আড়ৎই নীরব। কারণ ইলিশের আমদানি না থাকলে আড়ৎগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি থাকে না। শুধুমাত্র দুপুর বেলায় শরীয়তপুর জেলা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন জলাশয়ের চাষকৃত রুই, কাতল, তেলাপিয়া ও চিংড়ি মাছ আড়তে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন লোকজন। ১ থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই এসব মাছ বিক্রি হয়ে যায়। এরপর থেকে আড়তের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
মৎস্য ব্যবসায়ী হযরত আলী মানবজমিনকে বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মান্য করে। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গত কয়েকবছরই চাঁদপুরের ইলিশ ম্যানু থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসনসহ কোনো সংগঠনেই ইলিশের চাহিদা নেই। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা তা আমার জানা নেই।
মতলব উপজেলা থেকে ইলিশ ক্রয় করতে আসা ক্রেতা মমিন জানান, মৎস্য আড়তে গিয়ে ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ কেজি ১ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি।
মৎস্য ব্যবসায়ী ছিদ্দিুকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার পূর্বে চাঁদপুরের নদীর ইলিশ সংরক্ষণ আছে। ওইসব ইলিশের মধ্যে ৫শ’ গ্রাম ইলিশ প্রতি কেজি ৬শ’ টাকা, ৮শ’ গ্রাম ১ হাজার ৫০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬শ’ টাকা ও ১ কেজি ৭শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২শ’ টাকা। তবে কেউ কেউ বার্মা থেকে আমদানিকৃত ইলিশ আরো কম দামে বিক্রি করে।
চাঁদপুর মৎস্য বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আবদুল খালেক মাল মানবজমিনকে বলেন, চাঁদপুর মৎস্য আড়তে কোনো তাজা ইলিশ বিক্রি হয় না। কেউ যদি অর্ডার দেয়, তাহলে কোল্ড স্টোরেজ থেকে এনে পূর্বে সংরক্ষিত ইলিশ সরবরাহ করা হয়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি মানবজমিনকে বলেন, চাঁদপুর মাছঘাটে গত কয়েকদিন আগে অভিযান চালানো হয়েছে। একটি আড়তে কিছু জাটকা পাওয়া গেছে। আর কোনোটিতে ইলিশ পাওয়া যায়নি। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা, তা আমার জানা নেই। তবে আমরা এখন আবার অভিযান পরিচালনা করবো।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান মানবজমিনকে বলেন, চাঁদপুরে জাটকা সংরক্ষণের জন্য মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ইলিশ বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইলিশ বিক্রয়ের কোনো সংবাদ পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চাঁদপুরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে এই দুই মাস ইলিশ খাওয়ানো বাদ দেয়া হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status