অনলাইন
মার্কিন বীর যোদ্ধা একজন নারী ছিলেন?
বিবিসি
৮ এপ্রিল ২০১৯, সোমবার, ১০:০১ পূর্বাহ্ন
কাসিমির পোলাস্কি ছিলেন ১৮শতকের পোলিশ-আমেরিকান জেনারেল। তিনি ছিলেন না নারী, না পুরুষ। বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলা হয় ইন্টারসেক্স বা উভলিঙ্গ।
যারা 'ইন্টারসেক্স' - তারা নারী ও পুরুষ উভয় ধরণের যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়।
গবেষকরা এখন বলছেন কাসিমির পোলাস্কি যিনি জর্জ ওয়াশিংটনের সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন এবং ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে ১৭৭৭ সালে লড়াই করেছেন তিনি ছিলেন হয় নারী, নাহলে উভলিঙ্গ।
প্রায় ২০ বছর আগে বিজ্ঞানীরা প্রথম পোলাস্কির কঙ্কালের মধ্যে নারীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পান কিন্তু নিশ্চিতভাবে তা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি।
কিন্তু ডিএনএ টেস্ট এখন নিশ্চিত করছে যে সেই নারী কঙ্কালটি ছিল পোলাস্কিরই।
তাদের অনুসন্ধানের তথ্য স্মিথসোনিয়ান চ্যানেলে তথ্যচিত্র হিসেবে প্রচার হওয়ার কথা ৮ই এপ্রিল, যার শিরোনাম 'আমেরিকার লুকানো গল্প: জেনারেল কি একজন মহিলা ছিলেন?'
কাসিমির পোলাস্কি কে ছিলেন?
১৭৪৫ সালে ওয়ারসতে জন্ম হয় পোলাস্কির এবং খুব অল্পবয়স থেকেই তার রাজনীতিতে আগ্রহ তৈরি হতে থাকে।
তিনি যখন কিশোর বয়সী তখনই পোলিশ স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের জেরে রাশিয়া থেকে বহিষ্কৃত হয়ে প্যারিসে পালিয়ে চলে যান তিনি।
সেখানেই তিনি সাক্ষাত করেন আমেরিকান বিপ্লবী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সাথে যিনি ব্রিটেনের বিরুদ্ধে কলোনিগুলোর লড়াইয়ে আমেরিকান বিপ্লবে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
বলা হয়ে থাকে, ১৭৭৭ সালের ব্রান্ডিওয়াইন যুদ্ধক্ষেত্রে জর্জ ওয়াশিংটনের জীবন বাঁচিয়েছিলেন তিনি, এবং একটি পালানোর রাস্তা খুঁজে বের করেছিলেন যেখান দিয়ে জর্জ ওয়াশিংটন এবং তার সৈন্যরা সরে যেতে পেরেছিলেন।
সাবানাহ অবরোধের সময় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার অল্প সময় পরে ১৭৭৯ সালে ৩৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান ।
পোলাস্কির দেহের হাড়গুলো জর্জিয়ার সাবানাহতে একটি স্মৃতিস্তম্ভের নিচে ধাতব কন্টেইনারে রক্ষিত ছিল। প্রায় দুই দশক আগে স্মৃতিস্তম্ভটি যখন সাময়িকভাবে সরানো হয়েছিল তখন গবেষকরা তার কঙ্কালটি বের করতে এবং গবেষণা করতে সক্ষম হন।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক নৃ-বিজ্ঞানী চার্লস মার্বস এএসইউ নাউ-কে বলেছেন, তিনি জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক বিজ্ঞানী ডক্টর কারেন বার্নসকে সাথে নিয়ে হাড়গুলো পরীক্ষা করেছেন ।
তিনি বলেন, "আমি ভেতরে ঢোকার আগে ডক্টর বার্নস আমাকে বলেছিলেন, 'ভেতরে যাও এবং চিৎকার করতে করতে বেরিয়ো না যেন" ।
তিনি আরও বলেন, সতর্কতার সাথে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করতে হবে এবং এরপর বসে আলোচনা করতে হবে।
"এরপর আমি ভেতরে যাই এবং সাথে সাথে বুঝতে পারি যে তিনি (ডক্টর বার্নস) কোন বিষয়টি নিয়ে বলছিলেন। নারীর দেহের কঙ্কাল যেমন হতে পারে এটা তেমনিই ছিল" বলেন মিস্টার ।
পোলাসকির কঙ্কাল- নিশ্চয়তা কী?
এই ঘটনার পর তারা প্রমাণ করেছিল যে হাড়গুলো পোলাস্কিরই ছিল এবং অন্য কারো দেহাবশেষের সাথে তা অদল-বদল হয়নি।
তারা প্রথমে কঙ্কালটির শারীরিক আঘাতগুলো পরীক্ষা করেন, যেগুলো ঘোড়ায় চড়া কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
এরপরের পদক্ষেপ ছিল কঙ্কালের ডিএনএ টেস্ট করা।
ডিএনএ টেস্টের জন্য ডক্টর মার্বস এবং ডক্টর বার্নস তারঁ ভাতিজির সাথে তা মেলে কিনা তা পরীক্ষা করেন।
কিন্তু সেই সময় পরীক্ষার পদ্ধতি ততটা উন্নত ছিলনা এবং তারা কোন ফলাফল পাচ্ছিলেন না।
স্মৃতিস্তম্ভের কাছেই হাড়গোড় পুনরায় সমাধিস্থ করা হল। এবং তাদের পাওয়া তথ্য "মতামত" হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়।
বিষয়টি বিস্মৃতই ছিল, যতক্ষণ এতদিন পর্যন্ত না আরও তিনজন গবেষক তথ্য-প্রমাণগুলোর দিকে ফিরে তাকানোর এবং যুগোপযোগী প্রযুক্তির সাহায্যে আরও ভালো কোনও ফলাফল মেলে কিনা তা জানার জন্য সিদ্ধান্ত নিলেন।
এবং তারা যখন হাড়গুলো পরীক্ষা করলেন, ফলাফল এলো ইতিবাচক-কঙ্কালের ডিএনএ ছিল পোলাস্কির সেই আত্মীয়ের সাথে "অভিন্ন"।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর জনসংখ্যার ১ দশমিক ৭ শতাংশ জন্মগত-ভাবে ইন্টারসেক্স ।
গবেষক ডক্টর মার্বস বলেন, এটা অসম্ভব যে পোলাস্কি যিনি পুরুষ হিসেবে বেড়ে উঠেছেন, তিনি কখনো বিশ্বাস করেছেন যে তিনি নারী কিংবা উভলিঙ্গ।
বিষয়টি তার কাছে ছিল "কিছু একটা সমস্যা" হিসেবে।
"সেইসব দিনে তারা আসলে কিছুই জানতো না"।
যারা 'ইন্টারসেক্স' - তারা নারী ও পুরুষ উভয় ধরণের যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়।
গবেষকরা এখন বলছেন কাসিমির পোলাস্কি যিনি জর্জ ওয়াশিংটনের সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন এবং ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে ১৭৭৭ সালে লড়াই করেছেন তিনি ছিলেন হয় নারী, নাহলে উভলিঙ্গ।
প্রায় ২০ বছর আগে বিজ্ঞানীরা প্রথম পোলাস্কির কঙ্কালের মধ্যে নারীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পান কিন্তু নিশ্চিতভাবে তা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি।
কিন্তু ডিএনএ টেস্ট এখন নিশ্চিত করছে যে সেই নারী কঙ্কালটি ছিল পোলাস্কিরই।
তাদের অনুসন্ধানের তথ্য স্মিথসোনিয়ান চ্যানেলে তথ্যচিত্র হিসেবে প্রচার হওয়ার কথা ৮ই এপ্রিল, যার শিরোনাম 'আমেরিকার লুকানো গল্প: জেনারেল কি একজন মহিলা ছিলেন?'
কাসিমির পোলাস্কি কে ছিলেন?
১৭৪৫ সালে ওয়ারসতে জন্ম হয় পোলাস্কির এবং খুব অল্পবয়স থেকেই তার রাজনীতিতে আগ্রহ তৈরি হতে থাকে।
তিনি যখন কিশোর বয়সী তখনই পোলিশ স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের জেরে রাশিয়া থেকে বহিষ্কৃত হয়ে প্যারিসে পালিয়ে চলে যান তিনি।
সেখানেই তিনি সাক্ষাত করেন আমেরিকান বিপ্লবী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সাথে যিনি ব্রিটেনের বিরুদ্ধে কলোনিগুলোর লড়াইয়ে আমেরিকান বিপ্লবে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
বলা হয়ে থাকে, ১৭৭৭ সালের ব্রান্ডিওয়াইন যুদ্ধক্ষেত্রে জর্জ ওয়াশিংটনের জীবন বাঁচিয়েছিলেন তিনি, এবং একটি পালানোর রাস্তা খুঁজে বের করেছিলেন যেখান দিয়ে জর্জ ওয়াশিংটন এবং তার সৈন্যরা সরে যেতে পেরেছিলেন।
সাবানাহ অবরোধের সময় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার অল্প সময় পরে ১৭৭৯ সালে ৩৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান ।
পোলাস্কির দেহের হাড়গুলো জর্জিয়ার সাবানাহতে একটি স্মৃতিস্তম্ভের নিচে ধাতব কন্টেইনারে রক্ষিত ছিল। প্রায় দুই দশক আগে স্মৃতিস্তম্ভটি যখন সাময়িকভাবে সরানো হয়েছিল তখন গবেষকরা তার কঙ্কালটি বের করতে এবং গবেষণা করতে সক্ষম হন।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক নৃ-বিজ্ঞানী চার্লস মার্বস এএসইউ নাউ-কে বলেছেন, তিনি জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক বিজ্ঞানী ডক্টর কারেন বার্নসকে সাথে নিয়ে হাড়গুলো পরীক্ষা করেছেন ।
তিনি বলেন, "আমি ভেতরে ঢোকার আগে ডক্টর বার্নস আমাকে বলেছিলেন, 'ভেতরে যাও এবং চিৎকার করতে করতে বেরিয়ো না যেন" ।
তিনি আরও বলেন, সতর্কতার সাথে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করতে হবে এবং এরপর বসে আলোচনা করতে হবে।
"এরপর আমি ভেতরে যাই এবং সাথে সাথে বুঝতে পারি যে তিনি (ডক্টর বার্নস) কোন বিষয়টি নিয়ে বলছিলেন। নারীর দেহের কঙ্কাল যেমন হতে পারে এটা তেমনিই ছিল" বলেন মিস্টার ।
পোলাসকির কঙ্কাল- নিশ্চয়তা কী?
এই ঘটনার পর তারা প্রমাণ করেছিল যে হাড়গুলো পোলাস্কিরই ছিল এবং অন্য কারো দেহাবশেষের সাথে তা অদল-বদল হয়নি।
তারা প্রথমে কঙ্কালটির শারীরিক আঘাতগুলো পরীক্ষা করেন, যেগুলো ঘোড়ায় চড়া কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
এরপরের পদক্ষেপ ছিল কঙ্কালের ডিএনএ টেস্ট করা।
ডিএনএ টেস্টের জন্য ডক্টর মার্বস এবং ডক্টর বার্নস তারঁ ভাতিজির সাথে তা মেলে কিনা তা পরীক্ষা করেন।
কিন্তু সেই সময় পরীক্ষার পদ্ধতি ততটা উন্নত ছিলনা এবং তারা কোন ফলাফল পাচ্ছিলেন না।
স্মৃতিস্তম্ভের কাছেই হাড়গোড় পুনরায় সমাধিস্থ করা হল। এবং তাদের পাওয়া তথ্য "মতামত" হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়।
বিষয়টি বিস্মৃতই ছিল, যতক্ষণ এতদিন পর্যন্ত না আরও তিনজন গবেষক তথ্য-প্রমাণগুলোর দিকে ফিরে তাকানোর এবং যুগোপযোগী প্রযুক্তির সাহায্যে আরও ভালো কোনও ফলাফল মেলে কিনা তা জানার জন্য সিদ্ধান্ত নিলেন।
এবং তারা যখন হাড়গুলো পরীক্ষা করলেন, ফলাফল এলো ইতিবাচক-কঙ্কালের ডিএনএ ছিল পোলাস্কির সেই আত্মীয়ের সাথে "অভিন্ন"।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর জনসংখ্যার ১ দশমিক ৭ শতাংশ জন্মগত-ভাবে ইন্টারসেক্স ।
গবেষক ডক্টর মার্বস বলেন, এটা অসম্ভব যে পোলাস্কি যিনি পুরুষ হিসেবে বেড়ে উঠেছেন, তিনি কখনো বিশ্বাস করেছেন যে তিনি নারী কিংবা উভলিঙ্গ।
বিষয়টি তার কাছে ছিল "কিছু একটা সমস্যা" হিসেবে।
"সেইসব দিনে তারা আসলে কিছুই জানতো না"।