এক্সক্লুসিভ
ওয়াসিম হত্যা
এজাহারে যা বলা হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে
২৭ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৯:২০ পূর্বাহ্ন
ভাড়া নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে বাসচালক ও তার দুই সহযোগী চলন্ত বাসের চাকার নিচে ফেলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ওয়াসিমকে। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে ওই ঘটনার আদ্যোপান্ত বিবরণ দেয়া হয়েছে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আব্বাসকে মৌলভীবাজারের শেরপুরে বাস চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় বাসের চালকসহ তিনজনকে আসামি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মৃত্যুঞ্জয় কণ্ড এই হত্যা মামলাটি করেন। দায়েরকৃত মামলার এজাহারে এই মর্মান্তিক ঘটনার নেপথ্যের বিবরণ উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ড ২৫শে মার্চ বিকালে ১০ সাক্ষীসহ উপস্থিত হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যা মামলা করেন। মামলানং-২২। মামলার এজাহারে হত্যার উদ্দেশ্যেই ওয়াসিম ও রাকিবকে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর মর্মান্তিক এ ঘটনাটি মিডিয়ার সুবাধে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে। ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর ওই দিন রাতেই (২৩ মার্চ) বাসের চালক জুয়েল ও হেলপার মাসুককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২৪শে মার্চ গ্রেপ্তারকৃতদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- বাস চালক জুয়েল আহমদ (২৬), হেলপার মাসুক মিয়া (৩৮) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়া (২৫)। সুপারভাইজার এখনও পালতক রয়েছে। আর সাক্ষী রাখা হয়েছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দশ শিক্ষার্থীকে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩শে মার্চ শনিবার বিকালে ওয়াসিম আব্বাস ও তার ১০ সহপাঠী একটি বিয়ের দাওয়াত থেকে ফিরে আসার পথে নবীগঞ্জের বালিধারা বাজার সংলগ্ন নাইমা ফিলিং স্টেশনের সামন থেকে সিলেটগামী (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-১২৮০) উদার পরিবহনের বাসে উঠেন।
তারা মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর পয়েন্টে বাস থেকে নামার জন্য ভাড়া নিয়ে বাসের সুপাভাইজারের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে বিকাল ৪.৪৫টায় রাকিব ও ওয়াসিম বাদে বাকি নয়জন ভালোভাবে বাস থেকে নেমে যান। রাকিব ও ওয়াসিম নামার আগেই বাসের চালক বাসটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে দেয়। এবং বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার ওয়াসিম ও তার সহপাঠী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। রাকিব হেলপারের ধাক্কায় গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে তার বাম হাতের কনুইতে আঘাত প্রাপ্ত হয়। তখন ওয়াসিম আব্বাস তার ডান হাত দিয়ে বাসের দরজার হাতল ধরে ফেলে। এ সময় তার পা দুটি ঝুলে যায় ও কোমরের নিচের অংশ গাড়ির নিচে চলে যায়। এরপর বাসের হেলপার ওয়াসিম আব্বাসের হাত দরজার হাতল থেকে ছাড়িয়ে দেয়। এ সময় ওয়াসিম আব্বাস ও তার সহপাঠীরা গাড়ি থামানোর জন্য চিৎকার করলেও গাড়ি চালক তাদের চিৎকারে কর্ণপাত না করে দ্রুত গতিতে চালাতে শুরু করলে ওয়াসিম আব্বাস রাস্তার ওপর পড়ে যায় এবং শরীরের বেশির ভাগ অংশ গাড়ির নিচে চলে যাওয়াতে চাকার সঙ্গে পিষ্ঠ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তখন বাস দ্রুত গতিতে সিলেটের দিকে চলে যায়। পরে ওয়াসিম আব্বাসের সহপাঠীরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ও রাকিব হাসানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিম আব্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে এসএমপি কোতোয়ালি পুলিশ ওয়াসিমকে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। ঘটনার পর সিলেটের ওসমানী থানাধীন উনিশমাইল নামক স্থানে গাড়ি চালক ও তার দুই সহযোগী বাস ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গাড়িটি আটক করে পুলিশ। মামলার বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর, দাফন কাফন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। মামলার তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন খানকে দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী ওই কর্মকর্তা গতকাল বিকালে মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন থানা হেফাজতে থাকা গাড়ির মালিকানা ও ফিটনেস যাচাই। আটককৃত কারাগারে থাকা আসামিদের রিমান্ডের জন্য আবেদনসহ মামলার এজাহারে বর্ণিত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের বিষয় বেরিয়ে আসবে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল আহম্মদ বলেন মামলার এজাহারভুক্ত ২ আসামি কারাগারে থাকলেও অপর আসামিকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মামলা অগ্রসরের প্রাথমিক পর্যায়ের সকল কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এই মামলাটি তারা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছেন। এদিকে বাস থেকে ফেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিম আব্বাস। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কমলগঞ্জের সুমন মিয়ার হত্যার প্রতিবাদে ও ঘাতক পরিবহন শ্রমিকদের শাস্তির দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন মৌলভীবাজার জেলা শাখা। ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে জেলার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিককে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
২৪শে মার্চ গ্রেপ্তারকৃতদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- বাস চালক জুয়েল আহমদ (২৬), হেলপার মাসুক মিয়া (৩৮) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়া (২৫)। সুপারভাইজার এখনও পালতক রয়েছে। আর সাক্ষী রাখা হয়েছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দশ শিক্ষার্থীকে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩শে মার্চ শনিবার বিকালে ওয়াসিম আব্বাস ও তার ১০ সহপাঠী একটি বিয়ের দাওয়াত থেকে ফিরে আসার পথে নবীগঞ্জের বালিধারা বাজার সংলগ্ন নাইমা ফিলিং স্টেশনের সামন থেকে সিলেটগামী (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-১২৮০) উদার পরিবহনের বাসে উঠেন।
তারা মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর পয়েন্টে বাস থেকে নামার জন্য ভাড়া নিয়ে বাসের সুপাভাইজারের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে বিকাল ৪.৪৫টায় রাকিব ও ওয়াসিম বাদে বাকি নয়জন ভালোভাবে বাস থেকে নেমে যান। রাকিব ও ওয়াসিম নামার আগেই বাসের চালক বাসটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে দেয়। এবং বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার ওয়াসিম ও তার সহপাঠী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। রাকিব হেলপারের ধাক্কায় গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে তার বাম হাতের কনুইতে আঘাত প্রাপ্ত হয়। তখন ওয়াসিম আব্বাস তার ডান হাত দিয়ে বাসের দরজার হাতল ধরে ফেলে। এ সময় তার পা দুটি ঝুলে যায় ও কোমরের নিচের অংশ গাড়ির নিচে চলে যায়। এরপর বাসের হেলপার ওয়াসিম আব্বাসের হাত দরজার হাতল থেকে ছাড়িয়ে দেয়। এ সময় ওয়াসিম আব্বাস ও তার সহপাঠীরা গাড়ি থামানোর জন্য চিৎকার করলেও গাড়ি চালক তাদের চিৎকারে কর্ণপাত না করে দ্রুত গতিতে চালাতে শুরু করলে ওয়াসিম আব্বাস রাস্তার ওপর পড়ে যায় এবং শরীরের বেশির ভাগ অংশ গাড়ির নিচে চলে যাওয়াতে চাকার সঙ্গে পিষ্ঠ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তখন বাস দ্রুত গতিতে সিলেটের দিকে চলে যায়। পরে ওয়াসিম আব্বাসের সহপাঠীরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ও রাকিব হাসানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিম আব্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে এসএমপি কোতোয়ালি পুলিশ ওয়াসিমকে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। ঘটনার পর সিলেটের ওসমানী থানাধীন উনিশমাইল নামক স্থানে গাড়ি চালক ও তার দুই সহযোগী বাস ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গাড়িটি আটক করে পুলিশ। মামলার বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর, দাফন কাফন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। মামলার তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন খানকে দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী ওই কর্মকর্তা গতকাল বিকালে মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন থানা হেফাজতে থাকা গাড়ির মালিকানা ও ফিটনেস যাচাই। আটককৃত কারাগারে থাকা আসামিদের রিমান্ডের জন্য আবেদনসহ মামলার এজাহারে বর্ণিত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের বিষয় বেরিয়ে আসবে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল আহম্মদ বলেন মামলার এজাহারভুক্ত ২ আসামি কারাগারে থাকলেও অপর আসামিকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মামলা অগ্রসরের প্রাথমিক পর্যায়ের সকল কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এই মামলাটি তারা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছেন। এদিকে বাস থেকে ফেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিম আব্বাস। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কমলগঞ্জের সুমন মিয়ার হত্যার প্রতিবাদে ও ঘাতক পরিবহন শ্রমিকদের শাস্তির দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন মৌলভীবাজার জেলা শাখা। ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে জেলার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিককে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।