দেশ বিদেশ
ডাকসুতে অফিস করলেন ভিপি নুর
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদে প্রথম দিন অফিস করেছেন নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। গতকাল বেলা দেড়টার দিকে এক বন্ধুর মোটরবাইকে চড়ে ডাকসু কার্যালয়ে যান নুর। দীর্ঘ ২৮ বছর পর দেশের ‘দ্বিতীয় পার্লামেন্ট’খ্যাত ডাকসুর ভিপি আনুষ্ঠানিক অফিস করলেন। প্রথম দিন অফিসে এসে খোশগল্পে মেতেছিলেন তিনি। নিজের অফিস কক্ষটিও গোছানোর ব্যাপারে সবার সঙ্গে কথা বলছিলেন নবনির্বাচিত এ ভিপি। প্রথম দিন অফিস করতে এসে নুরুল হক নুর সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের যে ত্রুটি ছিল আমি এখনো স্বীকার করে নিচ্ছি, এবং আমার জায়গা থেকে আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো যত দ্রুত সম্ভব সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যেন আরেকটি নির্বাচন দেয়। আমি মনে করি নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রশাসন আগাবে। তার আগ পর্যন্ত ততদিন দায়িত্ব পালন করবো। ২৮ বছর পর ডাকসুর যে অচলায়তনটি ভেঙে সচলায়তন হয়েছে এটি যেন সামনে মসৃণ ভাবে আগাতে পারে সেই চেষ্টাই করবো। পুনঃনির্বাচন আমাদের যেমন একটি চাওয়া, তেমনি শিক্ষার্থীদের ডাকসু না থাকার কারণে যে দাবি-দাওয়াগুলো উপেক্ষিত রয়েছে সেগুলো যেন আমরা পূরণ করতে পারি সেদিকেও আমাদের নজর থাকবে। অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ে তিনি বলেন, সকল ছাত্র সংগঠনের কিছু কমন ইশতেহার আছে যেমন রিডিং রুম বৃদ্ধি করা, গবেষণা বৃদ্ধি করা, ক্যাম্পাসে বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, হল থেকে ছাত্র বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তীব্র আবাসিক সমস্যা রয়েছে সেটা দূর করা। এ কাজগুলো করতে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে কেউ পিছুপা হবে না বলে আমার মনে হয়। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন নিয়ে হয়তো বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত থাকবে, তবে যেহেতু ডাকসু সচল হয়েছে, আমি মনে করি এসব ইশতেহারগুলো বাস্তবায়নে সকল ছাত্রসংগঠনগুলো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। আমার প্রত্যাশা- ডাকসুতে কোনো রাজনীতিকীকরণ না করে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলবেন প্রতিনিধিরা। কোনো ধরনের রাজনৈতিক এজেন্ডা ডাকসুতে বাস্তবায়ন করা হবে না। ডাকসুর সদস্যদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে তারা ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি। ছাত্রলীগ নিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি, ছাত্রলীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তারা কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবে না। কারণ শিক্ষার্থীর যেসব প্রত্যাশা আমাদের ওপর আছে, সেটা সবাই চায় যেন বাস্তবায়ন হোক। প্রথম কার্যদিবসে নিজের কক্ষে বসে নুর বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরো বেগবান করার জন্য আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব অঙ্গ সংগঠন বা কথা বলার জায়গা রয়েছে, সেসব জায়গায় অনিয়ম নিয়ে কথা বলতেই আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি। দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দাবি করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মেধাভিত্তিক সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তে অর্থ ও পেশিশক্তিনির্ভর অপরাজনীতির বিকাশ ঘটেছে। যে মেধা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে, সেই মেধা ও অর্থনৈতিক অবস্থা দেখেই হলে তাদের আসন নিশ্চিত করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো যাবে না এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে হলে সিট দেয়া যাবে না।