বিনোদন
তার গাওয়া গান আলো ছড়াবে অনন্তকাল
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার, ৮:০৬ পূর্বাহ্ন
মায়ের কাছেই ছোটবেলায় শাহনাজ রহমতুল্লাহর গানের হাতেখড়ি। পরিবারের সবার কাছে তিনি ছিলেন আদরের শাহীন। ছোটবেলাতেই তিনি শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। বিশিষ্ট সুরকার আনোয়ার পারভেজ ও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক জাফর ইকবালের বোন আর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আলতাফ মাহমুদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে শিশু বয়সেই গানের জগতে জায়গা করে নেন এ শিল্পী। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গান গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। সে সময়ে তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রের শুরুর দিকে প্রযোজক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ। তার অনুষ্ঠানেই শাহনাজ রহমতুল্লাহ অসংখ্য কালজয়ী গান গেয়ে অগণিত মানুষের মন জয় করেছেন। দেশের গান যেমন তার কণ্ঠে হয়েছে জনপ্রিয় ঠিক তেমনি চলচ্চিত্রের গানও। শাহনাজ রহমতুল্লাহ সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন। পুরনোদের পাশাপাশি তিনি প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন পরবর্তীকালে উঠে আসা শিল্পীদের কাছেও। এ শিল্পী প্রথম উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম নেন ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে। এরপর তিনি ওস্তাদ মনির হোসেন, গজল সম্রাট মেহেদী হাসান, শহীদ আলতাফ মাহমুদের কাছেও তালিম নেন। বিয়ের পরে তিনটি চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেছিলেন তিনি। এগুলো হচ্ছে খান আতাউর রহমানের সুরে ‘আবার তোরা মানুষ হ’, আলাউদ্দীন আলীর সুরে ‘সাক্ষী’ ও আনোয়ার পারভেজের সুরে ‘ছুটির ফাঁদে’। এর মধ্যে ‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রে গাওয়া ‘সাগরের সৈকতে কে যেন দূর থেকে’ গানটির জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। পরবর্তীতে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। আগামীকাল মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি বেসরকারি টিভির লাইভ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এ শিল্পীর। সেখানে তার গান গাওয়ার কথা ছিল দিনাত জাহান মুন্নীর সঙ্গে। ২২শে মার্চ এই অনুষ্ঠানের জন্য মুন্নীকে গানও তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে অনুষ্ঠানে আর থাকা হলো না শাহনাজ রহমতুল্লাহর। তার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। কিন্তু তার গাওয়া গান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আলো ছড়াবে অনন্তকাল।