শেষের পাতা

সরকারি হাইস্কুলে তিন বিষয়ে ১৫০৬টি পদ সৃষ্টি হচ্ছে

নূর মোহাম্মদ

২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০১২ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে পদ সৃষ্টি হলেও সরকারি হাইস্কুলে ব্যতিক্রম। এ বিষয়ে পাঠদানের জন্য কোনো শিক্ষক নেই। ফলে আবশ্যিক এ বিষয়টি পড়ান অন্য বিষয়ের শিক্ষক। এ অবস্থায় সরকারি হাইস্কুলে আইসিটি পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের গবেষণাগারে ব্যবহারিক বিষয়ে শিক্ষা দিতে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদ সৃষ্টি হচ্ছে। আর পাঠাগারে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তা দিতে সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বেসরকারি হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে এসব পদ থাকলেও সরকারি হাইস্কুলে তিনটি পদ সৃষ্টি করা হয়নি। সারা দেশের সরকারি হাইস্কুলে এসব পদে মোট ১৫০৬টি পদ সৃষ্টি করতে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

এ ব্যাপারে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাইস্কুলে এ বিষয়ে কোনো পদ নেই। এজন্য আইসিটি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক, ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ সৃষ্টি করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখন শিক্ষামন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠাবে। সরকারি হাইস্কুলে এসব পদ না থাকলেও বেসরকারি হাইস্কুলে রয়েছে বলে তিনি জানান।

সূত্র জানায়, সারা দেশে ৩৪৮টি পুরাতন সরকারি হাইস্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৪টিতে ডাবল শিফট চালু রয়েছে। প্রতিটি সরকারি হাইস্কুলে আইসিটি ল্যাব আছে। একাধিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম আছে। স্কুলে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। আইসিটি শিক্ষক না থাকায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে ডাবল শিফট স্কুলে দুটি এবং এক শিফটের স্কুলে একটি করে মোট ৫০২টি আইসিটি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো অনুযায়ী ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা বেসরকারি হাইস্কুলের বিজ্ঞানাগার ও আইসিটি ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। কিন্তু সরকারি হাইস্কুলে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্টের কোনো পদ নেই। ফলে ল্যাবগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই কষ্টকর। ল্যাবের সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। আর শিক্ষার্থীরাও হাতে কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একইভাবে সরকারি হাইস্কুলের পাঠাগার রক্ষণাবেক্ষণে কোনো সহকারী গ্রন্থাগারিক নেই। যে কারণে ডাবল শিফটের স্কুলে দুটি করে এবং এক শিফটের স্কুলে একটি করে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মাউশির পদ সৃষ্টির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয় প্রবর্তন করা হয়। ২০১০ সালের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো অনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদ সৃজন করা হয়। তারা বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ে পাঠদান করেন। কিন্তু সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ে কোনো পদ না থাকায় বর্তমানে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করেন।
সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে পাঠদান না করায় শিক্ষার্থীরা সহজেই আইসিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। বিগত বছরগুলোর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী অন্যান্য বিষয়ে ভালো ফলাফল করলে আইসিটি বিষয়ে তুলনামূলক খারাপ ফল করছে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আইসিটি বিষয়ে ফেল পর্যন্ত করেছেন। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উপলব্ধি করে মাউশি আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব করেছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status