দেশ বিদেশ

আন্দোলন করেই দাবি আদায় করতে হবে: গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার

২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন

এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেই সব দাবি আদায় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আয়োজনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। গয়েশ্বর রায় বলেন, কিছু আদায় করতে হলে কিছু করতে হয়। আর কিছু করতে গেলে কিছু ত্যাগ করতে হয়, প্রয়োজনবোধে মরতেও হয়। পরিশ্রম ছাড়া, ত্যাগ ছাড়া কোনো কিছুই অর্জন করা যায় না। দানবের কাছে দাবি করে কখনো কিছু অর্জন হবে না। রাষ্ট্র ক্ষমতায় দানবকে বসিয়ে মুখে মুখে দাবি আদায় সম্ভব হবে না। গয়েশ্বর রায় বলেন, খালেদা জিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় জেলখানায় বন্দি রেখেও প্রধানমন্ত্রী এখন স্বস্তি বোধ করছেন না। প্রধানমন্ত্রী তখনই পুরোপুরি স্বস্তিবোধ করবেন যখন খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ তার কানে পৌঁছবে। এর আগ পর্যন্ত তিনি বিচলিত। সরকার খালেদা জিয়াকে ছাড়ার জন্য কারাগারে নেয়নি। তাকে মানসিক ও শারীরিক কষ্ট দেয়া প্রধানমন্ত্রীর পণ ও অঙ্গীকার। আর এজন্য তাকে এক সঙ্গে সহযোগিতা করছে প্রশাসন ও আদালত। বিএনপির অন্যতম এ নীতিনির্ধারক বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সেখানে গণতন্ত্র থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগের জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে। আর জনগণের জন্য জন্ম হয়েছে বিএনপির। তাই জনগণের মনের ভাষা বিএনপিকে বুঝতে হবে। জনগণ এখন নেতৃত্বের অপেক্ষায় আছে। সঠিক নেতৃত্ব পেলে জনগণই তাদের অধিকার আদায় করে নিতে জানে। জনগণ এখন অধিকার আদায়ের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, দেশের মানুষের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা শেখ হাসিনাকে আনন্দিত করে। তাকে পুলকিত করে। দেশটা আজ এরকম একটা বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের কবলে পড়েছে। গয়েশ্বর রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো কিছুতেই তৃপ্ত হন না। সে তার অতৃপ্ত বাসনা নিয়েই রাজত্ব চালাবেন, যতই পান ততই চান। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছেন। তারপরও তিনি সন্তুষ্ট নন। দলের নেতাদের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনি একটি রাজনৈতিক দল করেন, যে দলটি বার বার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেছে। তার বিপরীতে যে দলটি আছে তার চরিত্র কি? ভাষা কি? ইচ্ছে কি? রাজপথে থেকে এটা বোঝা দরকার। যদি বুঝতে না পারেন তাহলে যে দুর্গতিতে থাকার কথা সেটাই আসছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে নেতারা বলেছেন- খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচন করবেন না, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। কই কোনোটাইতো কার্যকর করলেন না। হাসিনাকেও রাখলেন, খালেদা জিয়াকেও মুক্ত না করে নির্বাচনে গেলেন।
সেই নির্বাচনে কেউ থাকলো জেলে, কেউ হাসপাতালে। কোনো নেতা মাঠেও নামলেন না। দানবের সঙ্গে পারবেন না যখন, তাহলে দানবের সঙ্গে লড়াই করতে যান কেন? যে দানবের কাছ থেকে আপনার অধিকার আদায় করতে পারবেন না, সেই দানবকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় রেখে মানবিকতা কায়েম করবেন সেটা হতে পারে না।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা হচ্ছে না, এটা এদেশের দৈন্যতারই বহিঃপ্রকাশ। দেশের গণতন্ত্র এখন জেলখানায় বন্দি। এটা কোনো সভ্য দেশ নয়। এদেশে কোনো সুশাসন নেই। এই দেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসির ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম ভিসি আগে কখনো দেখিনি। এই শিক্ষকরা ডাকসু নষ্ট করে ফেলেছে। আমার এদেরকে শিক্ষক ভাবতে কষ্ট হয়। তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় ৭১ বছর বয়সী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। আদালত থেকে তাকে সুচিকিৎসা দেয়ার কথা বললেও তাকে সেটা দেয়া হচ্ছে না। আমরা সরকারের এই নৃশংসতার প্রতিবাদ জানাই। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে আছে মানে গণতন্ত্র কারাগারে, ম্যাডাম জেলখানায় অর্থ হচ্ছে এটা কোনো সভ্য দেশ না, ম্যাডাম জেলখানা থাকাকে বুঝায় এদেশে কোনো আইনের শাসন নেই, ম্যাডাম জেলখানায় থাকার অর্থ হলো এই দেশ বসবাসের অযোগ্য একটি দেশ। লজ্জাহীন একটি সরকার দেশ পরিচালনা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দেশের গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে, সেই দেশে নির্বাচন তো দূরে থাক গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই। কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসকে সাদীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তকদির হোসেন মোহাম্মাদ জসিম, নাজিম উদ্দীন মাস্টার, সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনসহ শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status