বাংলারজমিন
ওসমানীনগরে স্বামীকে খুনের পর স্ত্রীকেও খুনের চেষ্টা চালায় ঘাতকরা গ্রেপ্তার ৩, পলাতক ২
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ৮:৪২ পূর্বাহ্ন
টাকার জন্য খুন করা হয়েছে ওসমানীনগরের সাদিপুরে কানাডা প্রবাসীর বাড়ির কেয়ারটেকার আনিস উল্লাহকে। এই খুনের পর তার স্ত্রী হাফসাকেও খুন করার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু হাফসা বেগমকে না পেয়ে খুনিরা চলে যায়। আলোচিত এ খুনের তিন ঘাতককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। গতকাল এ নিয়ে সিলেট জেলা পুলিশ প্রেস ব্রিফিংও করে। পুলিশ জানায়, রোববার রাতে তাজপুরের কানাডা প্রবাসী আলাউদ্দিনের বাসার পানির ট্যাংকিতে ফেলে দিয়ে খুন করা হয় বাসার কেয়ারটেকার আনিস উল্লাহকে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতে সোমবার অভিযান চালিয়ে খুনের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সুমন ও শাওন আহমদকে ওসমানীনগরের মঙ্গলপুর গ্রাম থেকে ও নানু মিয়াকে শেরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহত আনিস উল্লাহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে টাকা-পয়সা দান করেন। আসামি সুমন অনেক লোকের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে শোধ করতে না পেরে পলাতক অবস্থায় ছিল। রোববার শেরপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে সুমন শাওন ও নানুর সঙ্গে তাকে অপহরণ করে টাকা আদায়ের ছক করতে থাকে। সুমন তাদের বলে, তাজপুরের একজন লোকের কাছে সে ১৫ লাখ টাকা ও ১৫ ভরি সোনা পায়। কিন্তু সেই লোক তাকে এ টাকা ও সোনা ফিরিয়ে দিতে নানা টালবাহানা করছে। তাই তাকে হত্যা করতে পারলে সুমন তাদের মোটা অঙ্কের টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখায়। রাত ৮টার দিকে তারা প্রবাসী আলাউদ্দিনের বাসায় যায়। নানু ও শাওনকে প্রবাসীর বাসায় রেখে সুমন বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে কেয়ারটেকার আনিস উল্লাহকে তার বাসা থেকে ডেকে আনে। তিনজন মিলে প্রবাসীর বাসার ভেতরে ঢুকে ঘুরে-ফিরে বাসার সকল কক্ষ দেখতে থাকে। এমন সময় সুযোগ বুঝে গামছা দিয়ে আনিস উল্লাহর মুখ বেঁধে ফেলে। তারপর সুতলি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এরপর সুমন ও নানু তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে টান দিতে থাকে যতক্ষণ না তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। পরে ছাদে পানির ট্যাংকির ভেতর তার লাশ লুকিয়ে রাখে। এরপর আসামিরা ঘণ্টাখানেক বাসার ভেতরে অবস্থান করে। তারা কেয়ারটেকারের স্ত্রী আফসা বেগমকেও মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। সুমন ও শাওন ওই বাসা থেকে বের হয়ে বাসার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করতে থাকে। পরে তারা ভিকটিমের স্ত্রীকে হত্যার সুযোগ না পেয়ে যার যার বাসায় চলে যায়। সন্দেহভাজন আরো দুই আসামিকে ধরতে ওসমানীনগর থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।