দেশ বিদেশ

আবজাল দম্পতির সম্পদে বিলবোর্ড

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ মার্চ ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

 আদালতের নির্দেশে জব্দ হওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের সম্পদে বিলবোর্ড লাগানোর কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে সাড়ে তিন কাঠা প্লটের ওপর নির্মিত ছয়তলা ‘তামান্না ভিলা’য় সম্পত্তি জব্দের প্রথম বিলবোর্ডটি লাগানো হয়।
এরপর উত্তরার আরো দুটি বাড়ি ও দুটি প্লট এবং বাড্ডার একটি প্লটে বিলবোর্ড লাগানো হয়। দুদক কর্মকর্তারা জানান পর্যায়ক্রমে আবজাল ও তার স্ত্রীর ক্রোক করা সব সম্পদেই বিলবোর্ড দেয়া হবে। আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম এবং উপ-পরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ১৫ সদস্যের একটি দল বিলবোর্ড লাগানোর সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশে আবজাল ও তার স্ত্রীর নামে থাকা অবৈধ সম্পদের ওপর ক্রোক আদেশের বিলবোর্ড লাগিয়ে যাচ্ছি। আজ (গতকাল) উত্তরায় তাদের দুটি বাড়ি ও দুটি প্লট এবং বাড্ডায় আরেকটি প্লটে এ ধরনের আদেশের বিলবোর্ড লাগানো হবে। তাদের নামে থাকা অন্য সম্পত্তির ওপর পর্যায়ক্রমে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। জানা যায়, ‘তামান্না ভিলা’ নামের যে বাড়িটি উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত সেটি আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানমের নামে। ওই বাড়িতে মোট আটটি পরিবার ভাড়া নিয়ে থাকেন। আবজালের ভাইয়ের পরিবারও সেই বাড়িতে থাকেন। তবে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না।  
এর আগে গত ২১শে জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক অর্থাৎ হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। আবজাল হোসেনের বাড়ি ফরিদপুরে। ১৯৯২ সালে তৃতীয় বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আর পড়াশোনা করা হয়নি তার। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের সুপারিশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে অফিস সহকারী পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন তিনি। ২০০০ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হলে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ক্যাশিয়ার পদে বদলি হন। এই ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমান পদে যোগ দেন। সমপ্রতি সাতক্ষীরায় বদলি করা হলেও দুই মাসের মধ্যেই ঢাকা ফিরে আসেন আবজাল। আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানম একই প্রকল্পে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত স্বামী-স্ত্রী মিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য তারা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। অফিস সহকারী বা কেরানী হিসেবে চাকরি নিলেও আবজাল হোসেন অল্প সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমতে, বিএনপি আমলে নিয়োগ পেলেও সব আমলেই সমানভাবে প্রভাবশালী ছিলেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status