ভারত
একজন ভোটারের ভোট নিতে পাড়ি দিতে হবে ৩৯ কিলোমিটার পথ
কলকাতা প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
একটি বুথে একজন মাত্র ভোটার। সেই ভোটারের ভোট নিতে রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসার, নিরাপত্তা রক্ষী ও বাহক সহ ভোট পার্টিকে দুর্গম পাহাড়ি পথে পায়ে হেঁটে ৩৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। সেখানে পৌঁছে ভোটের দিন সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বসে থাকতে হবে ভোটকর্মীদের একমাত্র ভোটারের অপেক্ষায়। কেননা, নিয়ম অনুযায়ী কোনো ভোটারকে চাপ দেয়া যায় না তাড়াতাড়ি ভোট দিতে আসার জন্য। অরুণাচল প্রদেশের আনজাউ জেলার প্রধান শহর হায়ুলিয়াং থেকে ৩৯ কিলোমিটার দূরে মালোগাম গ্রামে বাস করেন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার। তবে গ্রামের সব ভোটারের নাম অন্য পোলিং স্টেশনে নথিভুক্ত থাকলেও ৩৯ বছরের সোকেলা তায়াং-এর নাম রয়েছে এই পোলিং বুথেই। ২০১৪ সালেও এই কেন্দ্রে ছিলেন দু’জন ভোটার। তবে সোকেলার স্বামী অন্য ভোট কেন্দ্রে নাম নথিভুক্ত করার পর এখন এই বুথে একজন মাত্র ভোটার। নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে কেউ বাদ না যায় এবং নিজের ভোট যেন নিজে দিতে পারেন সেজন্যই গোটা একটা দিন পাহাড়ি পথ হেঁটে পাড়ি দেবেন ভোটকর্মীরা। অরুণাচল প্রদেশে লোকসভা এবং বিধানসভার নির্বাচন হচ্ছে একই সঙ্গে। ১১ই এপ্রিল নেয়া হবে এই ভোট। এবারের ভোটে রাজ্যে ১১টি পোলিং স্টেশন রয়েছে শুধু নারীদের জন্য। অরুণাচলে এমন অনেক ভোটকেন্দ্র রয়েছে যেখানে ভোটারের সংখ্যা খুবই কম। পাক্কে-কেশাং আসনের লামতা পোলিং বুথে ভোটার রয়েছেন মাত্র ৬ জন। রাজ্যের ২২০২টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে ৭টিতে ভোটারের সংখ্যা ১০ জনের কম, ২৮১টি কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ১১ থেকে ১০০’র মধ্যে আর ৪৫৮টি কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ১০১ থেকে ২০০’র মধ্যে। রাজ্যের ৫১৮টি পোলিং স্টেশন দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। এই কেন্দ্রগুলোতে যেতে হলে ভোটকর্মীদের ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়। কোথাও পৌঁছাতে তিন দিনও সময় লেগে যায়। অবশ্য ভারতে একজন ভোটার নিয়ে একটি পোলিং স্টেশন রয়েছে আরো একটি। সেটির অবস্থান ভারতের পশ্চিম প্রান্তে। গুজরাটের গির অঞ্চলের বানেজ এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রেও রয়েছেন একজন ভোটার। তিনি স্থানীয় শিব মন্দিরের পুরোহিত, নাম গুরু ভরত দাস। এই এলাকাটি গুজরাটের জুনাগড় লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।