ভারত

মতুয়াদের বড় মা’র মৃত্যু পরিবারে বিরোধ তীব্র করল

কলকাতা প্রতিনিধি

৬ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ১২:৪১ অপরাহ্ন

ভারতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মমাতা বড় মা হিসেবে পরিচিত বীনাপাণী দেবী মঙ্গলবার রাতে কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। তার বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। বুধবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের এই গুরুমাতার জন্ম অবিভক্ত ভারতের বরিশাল জেলার জব্দকাঠিতে। অল্প বয়সেই গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দির মতুয়া আশ্রমের প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরকে বিয়ে করেন। দেশ বিভাগের পর তিনি স্বামীকে নিয়ে চলে যান কলকাতা। পরবর্তীতে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্প্রদায়ের আশ্রম গড়েন। স্বামীর মৃত্যুর পর তার দুই ছেলেকে নিয়ে আশ্রমের দায়িত্ব নেন তিনি।

বড় মার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কয়েক লাখ মতুয়ার মধ্যে। বড় মার মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোকবার্তায় বড়মার চলে যাওয়াকে অপূরণীয় ক্ষতি বলে বর্ণনা করেছেন। তবে বড়মার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরবাড়িতে পারিবারিক বিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে চলেছে। বড় মার ছোট নাতি শান্তনু ঠাকুর অভিযোগ করেছেন, বড় মাকে খুন করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। বড় মা বেঁচে থাকাকালীন অবস্থাতেই ঠাকুর পরিবারে বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। মতুয়া মহাসংঘও দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক ভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বড় মার বড় পুত্র প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী তৃণমূল এমপি মমতাবালা ঠাকুর।

অন্য অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শান্তনু ঠাকুর। আসলে রাজনীতিই এই বিরোধের অন্যতম কারণ। বড়মার বড় বধূ মমতা বালা ঠাকুর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। তিনি তৃণমূলের হয়ে এমপিও হয়েছেন। অন্যদিকে বড় মার ছোট পুত্র  মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং তার পুত্র শান্তনু বিজেপির ঘনিষ্ঠ। বাংলাদেশ থেকে চলে আসা মতুয়া সম্পদায়ের কয়েক লাখ মানুষ পশ্চিমবঙ্গের নানা জেলায় রয়েছেন। ভোট ব্যাংক হিসেবে রাজনৈতিক দলের কাছে এদের গুরুত্ব যথেষ্ট। পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি রাজ্য বিধানসভার আসনের ৫৭টি আসনের এখনো নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে রয়েছে মতুয়ারা। পাশাপাশি লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনেরও নির্ণায়ক শক্তি তারা। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী অনেক দিন ধরেই বড় মার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছিলেন।

কিছুদিন ধরে বিজেপিও সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বড়মাকে প্রণাম করতে ঠাকুরনগরের আশ্রমেও গিয়েছিলেন। বড় মার অনুপস্থিতিতে মতুয়া মহাসংঘের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে লড়াই শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। কে হবেন নতুন ধর্মগুরু সেটাই নির্ধারণের জটিলতা রয়েছে। তবে বিভ্রান্ত মতুয়াদের একাংশ আর রাজনীতি চাইছেন না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status