বিশ্বজমিন

বৃটেনে শামিমা, যুক্তরাষ্ট্রে মুথানার নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক

মানবজমিন ডেস্ক

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ২:৩০ পূর্বাহ্ন

বৃটেনে শামিমা বেগম (১৯)। যুক্তরাষ্ট্রে হুদা মুথানা (২৪)। দু’জনেই জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিয়েছেন। শামিমা ফিরতে চাইছেন বৃটেনে। মুথানা ফিরতে চাইছেন যুক্তরাষ্ট্রে। বৃটিশ সরকার এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শামিমার নাগরিকত্ব বাতিলের। অন্যদিকে হুদা মুথানাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেবেন না প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার তিনি স্পষ্ট করে এ কথা বলে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী মুথানা মার্কিন নাগরিক নন বলে তিনি জানিয়েছেন। একক কোনো ব্যক্তির অভিবাসন বিষয়ক ইস্যুতে তার বক্তব্য দেয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে তিনি প্রটোকল ভেঙেছেন বলে বলা হচ্ছে। ওদিকে মুথানা বলেছেন, তার ব্রেনওয়াশ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ম্যাসেজ। তাই ২০১৪ সালে পিতামাতার অজ্ঞাতে তিনি চলে যান সিরিয়ায়। এর অল্প পরেই তিনি নিজের ও অন্য তিনজন নারীর একটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায় তাদের পশ্চিমা পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলছেন। এর মধ্যে একটি পাসপোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এতে বলা হয়, মুথানার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। তার পিতা ইয়েমেনি। তিনি সাবেক একজন কূটনীতিক। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে কেউ জন্মগ্রহণ করলেই সে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং পূর্ণাঙ্গ অধিকার পাবে। এখানে উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপিয় দেশগুলোকে আইএসে যোগ দেয়া তাদের নিজেদের নাগরিকদের  ফিরিয়ে নিয়ে আইনের মুখোমুখি করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনিই উল্টো সুরে কথা বলছেন। টুইটারে তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি যেনো হুদা মুথানাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি না দেন। ওদিকে মাইক পম্পেও নিজেও একটি কড়া বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হুদা মুথানা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন দেয়া হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি যাওয়ার জন্য তার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ পাসপোর্ট নেই। পাসপোর্ট পাওয়ার কোনো অধিকার নেই। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য কোনো ভিসাও নেই।

এএফপি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সবাইকে সাধারণত নাগরিকত্ব দেয়া হয়। বিশ্বাস করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় বড় হয়ে ওঠা মুথানা সিরিয়া সফর করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট ব্যবহার করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা পরে এক তদন্তে দেখিয়েছেন যে, মুথানা পাসপোর্ট পেতে পারেন না। তার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয় আসতে পারে না। কারণ তিনি তো কখনো নাগরিক ছিলেনই না।
তবে এক্ষেত্রে একটি ফাঁকফোকর আছে। তাতে মার্কিন সরকাই সুবিধা পেতে পারে। তা হলো, মুথানার পিতা ছিলেন একজন ইয়েমেনি কূটনীতিক। কূটনীতিকদের সন্তানদের অটোমেটিক নাগরিকত্ব দেয়া হয় না যুক্তরাষ্ট্রে।

মুথানার আইনজীবী হাসান শিলবি দেখিয়েছেন মুথানার জন্ম সনদ। এ অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালে নিউ জার্সিতে জন্মগ্রহণ করেন মুথানা। তার জন্মের বেশ কয়েক মাস আগে তার পিতা কূটনৈতিক মর্যাদা হারিয়েছেন। টাম্পা’য় নিজের অফিসে বসে এএফপিকে হাসান শিলবি বলেন, মুথানা মার্কিন নাগরিক। তার বৈধ পাসপোর্ট ছিল। তিনি হয়তো আইন ভঙ্গ করেছেন। যদি তিনি তা করে থাকেন তাহলে তার মূল্য দিতে প্রস্তুত তিনি। মুথানা যথাযথ প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যেতে চান এবং যদি অভিযুক্ত হন তাহলে জেলে যেতে চান। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে মহান এক আইনি ব্যবস্থার মধ্যে আছি। তা আমাদেরকে মেনে চলতে হবে।

সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তাই এ সপ্তাহে তিনি তার ইউরোপিয় মিত্রদের তাড়না দিয়েছেন যেন, তারা সিরিয়ায় আটক শত শত আইএস জঙ্গিকে ফেরত নিয়ে যায়।  
মুথানা সিরিয়ায় যাওয়ার পর পর একে একে বিয়ে করেন তিন পুরুষকে। এখন আইএস ওই এলাকায় তাদের দখলদারিত্ব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার পথে। এরই মধ্যে শামিমার মতোই তারও একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। বলেছেন, আমার কথায়, যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, আমার পরিবার বা অন্য কাউকে তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status