এক্সক্লুসিভ
ঐতিহাসিক সেই আমতলা
মরিয়ম চম্পা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশদ্বারের বাঁ পাশে একটি তালাবদ্ধ গেইট। বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে আছে এটি। এ গেইটকে ঘিরে রেখেছে হরেক রংয়ের পাথর, কংক্রিটের বক ও চিত্রা হরিণের ছোট্ট একটি নন্দনকানন। এসবে অবহেলা ও অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। সরজমিন গেইটের বাইরে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন রং মিস্ত্রি গেইটের দেয়ালে চুনকাম করছেন। রংমিস্ত্রি রহিম বলেন, এটা কিসের গেইট জানি না। আমাদের কাজ রং করা। তাই রং করছি। ২১শে ফেব্রুয়ারির আগে রং- এর কাজ শেষ করতে হবে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমএলএস রাম বলেন, এটা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেইট। আমরা পুরান ঢাকার বাসিন্দা। এক সময় এই গেইট খোলা থাকলেও অনেক বছর ধরে এটা বন্ধ। এটা আগে ইমার্জেন্সি গেইট ছিল।
ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা আতর আলী বলেন, অনেক বছর ধরে এখানে চা বিক্রি করি। এই গেইট সবসময় তালামারা দেখি। এটা দিয়ে কোনো যাতায়াত নেই। ঢামেকে আসা এক তরুণ জন ডিকস্ত্রা বলেন, জানি না এটা কিসের গেইট। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে গেইটের উপরে তাকিয়ে বাংলায় ঐতিহাসিক আমতলা প্রাঙ্গণ লেখা দেখে বললেন ‘ওহ মনে পড়েছে এখান থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক শিক্ষার্থী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে পড়েছি, বাহান্ন সালে এই আমতলা গেইটটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের অংশ। কলাভবন থেকে সরিয়ে বর্তমান স্থানে নেয়া হয়। এরপর সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)-এর বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হয়। এরপর এই স্থানটি চলে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধীনে। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেইট দিয়ে ঢোকার বাঁ পাশের গেইটটিই বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ‘আমতলা’ প্রাঙ্গণ।
অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকেই হয়তো এই আমতলার ইতিহাস জানেন না। অথচ আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা। তার কথা-এটা নিয়মিত ব্যবহার করা হলে হয়তো এর ইতিহাস সম্পর্কে মানুষ জানতো। এ সম্পর্কে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, তালাবদ্ধ এই গেইটটিই হচ্ছে সেই ঐতিহাসিক গেইট। যেখান থেকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছিলেন। শহীদদের রক্তের ফল্গুধারাবাহী স্থানটি এখন পুরোটাই হকারদের দখলে। সেই আমগাছটিও কেটে ফেলা হয় ১৯৯৫ সালে। বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। কিন্তু, বাংলা রক্ষার প্রথম সাহসী উচ্চারণ যেখান থেকে শুরু সেই আমতলার কথা বর্তমান প্রজন্ম জানেনই না। এখানেই পাকিস্তান পুলিশের বর্বর বুলেটে লুটিয়ে পড়েন সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা যায়, দেশের তৎকালীন ছাত্র রাজনীতির সব কর্মকাণ্ডই এই আমতলা থেকে পরিচালিত হতো। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির বহু স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই আমতলা। ১৯৪৮ সালের ১৬ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আমতলায় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সরজমিন দেখা গেছে, আমতলা গেইটের দু’পাশে বসেছে ছোটখাটো একটা বাজার। প্লাস্টিকের বালতি, মগ, টুল, চেয়ার, বালিশ-চাদর-মাদুর-মশারি, জুতা, প্রসাধনীদ্রব্য, ফল, পান-সিগারেট, চা-শিঙ্গাড়া-পুরি ও খাবারের দোকান। যে স্থানে এই ছোট্ট বাজার গড়ে ওঠেছে তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানেন না অনেকেই। গেইটের উপরের দিকে ঝুলছে একটি সাইনবোর্ড। কালো প্লেটে সাদা কালিতে সাইনবোর্ডে লেখা ‘ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত আমতলার ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণ থেকে, এর পর লাল কালিতে নিচের দিকে একটি তীর চিহ্ন দিয়ে সাদা কালিতে লেখা ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এই দিনে ছাত্র সমাজ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে।
ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা আতর আলী বলেন, অনেক বছর ধরে এখানে চা বিক্রি করি। এই গেইট সবসময় তালামারা দেখি। এটা দিয়ে কোনো যাতায়াত নেই। ঢামেকে আসা এক তরুণ জন ডিকস্ত্রা বলেন, জানি না এটা কিসের গেইট। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে গেইটের উপরে তাকিয়ে বাংলায় ঐতিহাসিক আমতলা প্রাঙ্গণ লেখা দেখে বললেন ‘ওহ মনে পড়েছে এখান থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক শিক্ষার্থী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে পড়েছি, বাহান্ন সালে এই আমতলা গেইটটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের অংশ। কলাভবন থেকে সরিয়ে বর্তমান স্থানে নেয়া হয়। এরপর সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)-এর বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হয়। এরপর এই স্থানটি চলে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধীনে। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেইট দিয়ে ঢোকার বাঁ পাশের গেইটটিই বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ‘আমতলা’ প্রাঙ্গণ।
অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকেই হয়তো এই আমতলার ইতিহাস জানেন না। অথচ আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা। তার কথা-এটা নিয়মিত ব্যবহার করা হলে হয়তো এর ইতিহাস সম্পর্কে মানুষ জানতো। এ সম্পর্কে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, তালাবদ্ধ এই গেইটটিই হচ্ছে সেই ঐতিহাসিক গেইট। যেখান থেকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছিলেন। শহীদদের রক্তের ফল্গুধারাবাহী স্থানটি এখন পুরোটাই হকারদের দখলে। সেই আমগাছটিও কেটে ফেলা হয় ১৯৯৫ সালে। বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। কিন্তু, বাংলা রক্ষার প্রথম সাহসী উচ্চারণ যেখান থেকে শুরু সেই আমতলার কথা বর্তমান প্রজন্ম জানেনই না। এখানেই পাকিস্তান পুলিশের বর্বর বুলেটে লুটিয়ে পড়েন সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা যায়, দেশের তৎকালীন ছাত্র রাজনীতির সব কর্মকাণ্ডই এই আমতলা থেকে পরিচালিত হতো। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির বহু স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই আমতলা। ১৯৪৮ সালের ১৬ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আমতলায় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সরজমিন দেখা গেছে, আমতলা গেইটের দু’পাশে বসেছে ছোটখাটো একটা বাজার। প্লাস্টিকের বালতি, মগ, টুল, চেয়ার, বালিশ-চাদর-মাদুর-মশারি, জুতা, প্রসাধনীদ্রব্য, ফল, পান-সিগারেট, চা-শিঙ্গাড়া-পুরি ও খাবারের দোকান। যে স্থানে এই ছোট্ট বাজার গড়ে ওঠেছে তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানেন না অনেকেই। গেইটের উপরের দিকে ঝুলছে একটি সাইনবোর্ড। কালো প্লেটে সাদা কালিতে সাইনবোর্ডে লেখা ‘ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত আমতলার ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণ থেকে, এর পর লাল কালিতে নিচের দিকে একটি তীর চিহ্ন দিয়ে সাদা কালিতে লেখা ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এই দিনে ছাত্র সমাজ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে।