শেষের পাতা

সিলেটে মাঠে সরব ১৮ বিদ্রোহী প্রার্থী

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন

উপজেলা নির্বাচনে সিলেটে মাঠ ছাড়ছেন না আওয়ামী লীগের ১৮ বিদ্রোহী প্রার্থী। নির্বাচন করবেনই- এমন ঘোষণা দিয়ে শেষ দিনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এবারের নির্বাচনে তারা দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এলাকার সমর্থন দিয়ে তারা প্রার্থী হয়েছেন বলে জানান। এদিকে জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলের ভেতরে বিভাজনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোথা কোথাও বিদ্রোহীদের পক্ষে নেতাকর্মীরা একাট্টা হয়ে উঠছেন। তবে- এ বিদ্রোহীদের নিয়ে এখনই চিন্তা করছে না আওয়ামী লীগ। বিরোধীজোটের প্রার্থীরা নির্বাচনে না আসার কারণে বিদ্রোহীরাই নির্বাচন জমিয়ে তুলবেন। ফলে যারাই বিজয়ী হবে তারা আওয়ামী লীগেরই হবে।

সিলেট জেলার ১২টি উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সোমবার ছিল  মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এ দিন সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ প্রতিটি উপজেলা সদরে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। সিলেটের ১২ উপজেলার মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। এর মধ্যে বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী এসএম নুনু মিয়া, বালাগঞ্জে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর ও জকিগঞ্জে লোকমান আহমদ চৌধুরী। তাদের সঙ্গে দলের ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কেউ নেই। ফলে তারা বিদ্রোহী ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

বাকি ৯টি উপজেলায় বিদ্রোহের ছড়াছড়ি। ছাড় পাননি সিলেট সদর উপজেলার বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র ও মুহিত পরিবারের ঘনিষ্ঠজন আশফাক আহমদও। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট নুরে আলম সিরাজী। বিদ্রোহী সিরাজীর সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট সুজাত আলী রফিক সহ সিনিয়র নেতারা রয়েছেন। এবার সুজাত আলী রফিক দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তবে- টানা দুই বারের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ এবারের নির্বাচনেও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগেরই দুইজন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবু জাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ ময়নুল ইসলাম। আগে থেকে আবু জাহিদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ময়নুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের একাংশ বিরোধ করে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে নির্বাচনেও জাহিদকে ছাড় দেয়নি ওই অংশ।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত হয়ে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান জকন। তিনি জাতীয় নির্বাচনেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি।

শেষ মুহূর্তে তাকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রার্থী দেয়া হয়। জকিগঞ্জ স্থানীয় বিভক্ত রাজনীতির ভেতরের মানুষ না হলেও তাকে ছাড় দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তিনি বিদ্রোহী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু তার সঙ্গে ৬ প্রার্থী রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরা বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল বাছির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে শামীম আহমদ, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, ইয়াকুব আলী, তার ভাই ইকবাল হোসেন। হাজী শামীম আহমদ জানিয়েছেন- তিনি বিগত নির্বাচন থেকে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তার পিতা উপজেলা নির্বাচন হওয়ার কারণে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হবেন বলে জানান।

গোয়াইনঘাট উপজেলায় আওয়ামী লীগে প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া হেলাল। তার সঙ্গে বিদ্রোহী হয়ে মাঠে রয়েছেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগর সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মো. গোলাপ মিয়া। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে সরব রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি কামাল আহমদ। কামাল আহমদ জানিয়েছেন- এলাকার মানুষ তাকে সমর্থন দিয়েছে। এ কারণে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ আব্দুল মুমিন চৌধুরী। তার সঙ্গে বিদ্রোহী হয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাঁতবাক ইউপির সদ্য পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান আলহাজ মোস্তাক আহমদ পলাশ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের চৌধুরী। বিয়ানীবাজার উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতাউর রহমান খান। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলার সাংগঠনিক জাকির হোসেন ও শামীম আহমদ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status