শেষের পাতা

অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দুই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি

সংসদ রিপোর্টার

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, সোমবার, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দ্রুত দুই হাজার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে সারা দেশে সাড়ে ৯ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানের ধরন ও গুরুত্বানুসারে দুই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ধাপে ধাপে এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে। গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে এমপিও প্রত্যাশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে করা তালিকা অনুযায়ী এমপিওভুক্তির জন্য অর্থের প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোপ হয়েছে।

তিনি এ বিষয়ে আন্তরিক। অর্থ সংস্থানের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই কার্যক্রম শুরু হবে। একত্রে সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারি দলের সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি জানান, যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপি-জামায়াত আমলে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বেশি নম্বর পাওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক প্রশ্ন। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি দলের আরেক সদস্য মোতাহের হোসেন নিজের এলাকা বঞ্চিত দাবি করে তার এলাকার ৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তির সঙ্গে ন্যায্যতার প্রশ্নটি জড়িত হয়েছে। কারণ বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে অনেক এলাকা বঞ্চিত হয়েছে। যে কারণে এমপিওভুক্তির আগে সংসদীয় আসন অনুযায়ী তালিকা করা হবে। সেক্ষেত্রে ন্যায্যতার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস: আওয়ামী লীগের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে সময়োপযোগী ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ২০১৮ সালের জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, এমনকি প্রশ্নের ফাঁসের গুজবও রটেনি। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। তিনি জানান, পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়ে সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে। প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বাস্তবতার নিরীখে পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। মন্ত্রী জানান, শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস রোধে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরীক্ষার ৩০ মিনিট পূর্বে সব পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রত্যেক বিষয়ের সব প্রশ্নপত্র সিকিউরিটি টেপযুক্ত একটি বড় খামে প্যাকেটজাত করা হয়েছে। তিনি জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্রের সব সেট নিয়ে যাওয়া এবং পরীক্ষার ২৫ মিনিট পূর্বে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট প্রশ্নের সেট ঘোষণা ও সে অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা এবং সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সরকারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে অনুরোধ করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, পরীক্ষার সময় সব কোচিং সেন্টার একমাস বন্ধ রাখার নির্র্দেশ দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রকে শনাক্ত করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য বিটিআরসি কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ হয়।

কোচিং ব্যবস্থা বন্ধে নীতিমালা: অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। নীতিমালায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটিগুলোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত নীতিমালাকে আপহেল্ড করায় কোচিং বাণিজ্য বন্ধে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই ২০০৯ সাল থেকে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছে। এর ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর কর্মসংস্থানসহ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার আরো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status