দেশ বিদেশ
হেরোইনের আগ্রাসন রুখতে সর্বাত্মক অভিযান মেক্সিকো সেনাবাহিনীর
মানবজমিন ডেস্ক
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, সোমবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
মেক্সিকোর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সিয়েরা অঞ্চল যেন পপিচাষিদের অভয়ারণ্য। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা আর ঘন অরণ্য, অবৈধ পপির চাষের জন্য স্বর্গরাজ্য। মানুষের চোখের আড়ালে খুব সহজেই এখানে চাষ করা যায় পপি। মাঝে মাঝে পপিক্ষেত লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য অন্য নানারকম শস্য, যেমন ভুট্টার চাষ করা হয়। ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, সরকারও পপিচাষিদের বৈধ শস্য চাষের জন্য নানা সহায়তা করে থাকে। কিন্তু পাহাড়ের পাথুরে ঢালে পাতলা মাটির আস্তরণে অন্য কোনো শস্যই তেমন ভালো হয় না। গুয়েরেরো রাজ্যের দরিদ্র পাহাড়ি জেলাগুলোতে অবৈধ পপির চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে এগিয়ে আছে মার্কিন সীমান্ত থেকে ৮০০ মাইল দূরে অবস্থিত হুকিলা ইউকুচানি জেলা। দেশটিতে অপরাধের হারও সবচেয়ে বেশি গুয়েরেরো রাজ্যেই। চাষ, সরবরাহ, বাজারজাতকরণ, সবকিছুই আইনত দণ্ডণীয় হলেও অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলে পপি বীজের কেনাবেচা। এখন আর অনেক ক্ষেত্রে তেমন রাখঢাকেরও প্রয়োজন দেখছেন না পপিচাষিরা। কেউ কেউ কষ্ট করে পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে চাষ না করে নিজের বাড়ির উঠানেই বুনছেন গাছ। পপি ও এ থেকে উৎপাদিত আফিম ও হেরোইনের দৌরাত্ম্য কমাতে এবার জোরেশোরে মাঠে নেমেছে মেক্সিকোর সেনাবাহিনী। দুর্গম পাহাড়ি এলাকাতেও চলছে বিশেষ অভিযান। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা পপিক্ষেত খুঁজে বের করছেন সেনারা। তারপর সেগুলে কেটে কেটে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে। শুধু পপি গাছ কেটেই নিরস্ত হচ্ছেন না সৈনিকরা। পরবর্তীতে গাছের বীজ থেকে যাতে চাষিরা আবার বীজ উৎপাদন করতে না পারেন, সে জন্য জড়ো করা গাছে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে আগুন। দুর্গম এ পাহাড়ি এলাকায় যারা থাকেন, তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা। সবচেয়ে কাছের হাসপাতাল বা স্কুলও কয়েক ঘণ্টার পথ। ফলে, ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বিগ্ন পপিচাষিদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও ভাবছেন সীমানা পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার কথা।