খেলা

ম্যারাডোনার চেয়ে মেসিই সেরা: ফার্গুসন

স্পোর্টস ডেস্ক

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শনিবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

আর্জেন্টিনার ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসির মধ্যে কে সেরা এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এবার তাতে শামিল হলেন লিভারপুল কিংবদন্তি ও স্কাই স্পোর্টসের বোদ্ধা বিশ্লেষক গ্রায়েম সাউনেস,  প্রখ্যাত ক্রীড়ালেখক হিউ ম্যাকলভ্যানি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। গত সপ্তাহে ম্যাকলভ্যানির মৃত্যুতে বিষয়টি নতুন করে উঠে আসে। ম্যারাডোনা ও মেসির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রশ্নে সাউনেসের পছন্দ মেসি। তবে, এতে দ্বিমত পোষণ করেন ম্যাকলভ্যানি। তার চোখে, মেসির চেয়ে ম্যারাডোনাই সেরা। আর বন্ধু ম্যাকলভ্যানির সঙ্গে একমত নন ফার্গুসন। ম্যারাডোনার চেয়ে মেসিকেই এগিয়ে রাখেন তিনি। সাউনেস ও ম্যাকলভ্যানির মধ্যে কথোপকথনের সাক্ষী আরেক স্কটিশ ফুটবল লেখক জোনাথন নর্থক্রফট। বৃটিশ দৈনিক ‘দ্য টাইমস’ এ লেখা কলামে বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। সেখানে টের পাওয়া যায়, ম্যাকলভ্যানির পছন্দ ম্যারাডোনা আর সাউনেসের পছন্দ মেসি। এ নিয়ে বিতর্কে দু’জনের কথার লড়াই। সাউনেসকে উদ্ধৃত করে নর্থক্রফট বলেন, ‘দেখ, আমি ম্যারাডোনার বিপক্ষে পাঁচবার খেলেছি এবং আমি তোমাকে মেসির কথাই বলবো।’ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ম্যাকলভ্যানির কথা এমন ছিল, ‘তুমি কার বিপক্ষে খেলেছো তা আমি পরোয়া করি না। আমার চোখে মেসির চেয়ে ম্যারাডোনাই সেরা।’ ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ফার্গুসনের আত্মজীবনী ‘ম্যানেজিং মাই লাইফ’ লিখেছিলেন ম্যাকলভ্যানি ও সাউনেস। স্কটিশ গ্রেট ফুটবল কোচ ফার্গুসন বলেন, ‘আমি এদিক থেকে সাউনেসের সঙ্গে একমত। ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে ম্যারাডোনার ক্যারিয়ার মাত্র কয়েক বছরের।’ অর্থাৎ, লম্বা সময় ধরে পারফরমেন্স ধরে রাখাই মেসিকে ফার্গুসনের চোখে এগিয়ে রাখে। ফুটবল ক্যারিয়ারে বোকা জুনিয়র্স ও নাপোলির হয়ে লীগ শিরোপা জেতেন ম্যারাডোনা। সিরি আ’তে ধুঁকতে থাকা নাপোলিকে ইউয়েফা কাপ চ্যাম্পিয়ন বানান তিনি। তার আগে বার্সেলোনার হয়েও দু’বছর খেলেছিলেন ম্যারাডোনা। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন আসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। ফুটবলপ্রেমীদের মন্ত্রমুগ্ধ করে একক ণৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতান ম্যারাডোনা। পরের আসরেও শিরোপার খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন। কিন্তু আগেরবারের রানার্সআপ পশ্চিম জার্মানির কাছে ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হয়। আর ২০০০ সালে শতাব্দির সেরা ফুটবলার হিসেবে ম্যারাডোনার নাম ঘোষণা করে ফিফা। ম্যারাডোনার উত্তরসূরি মেসির ক্যারিয়ারে কালো অধ্যায় হয়ে আছে জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা শূন্যতা। ব্রাজিলে ২০১৪ বিশ্বকাপে দলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি তার। এরপর কোপা আমেরিকায় টানা দুই আসরের ফাইনালেও মেসির সঙ্গী হয় স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। আর্জেন্টিনার জার্সিতে তিনবার কোপা আমেরিকা ফাইনাল খেলেন ৩১ বছর বয়সী মেসি। আর ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো রাউন্ডে বিদায় নিয়ে অধরাই থেকে যায় তার অধরা বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। তবে, আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারের সাফল্যগাঁথা অবিশ্বাস্য। একমাত্র ক্লাব বার্সেলোনায় ১৫ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ৪টি ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, ৯টি লা লিগা শিরোপা জেতেন তিনি। আর বার্সার জার্সিতে ৬৬১ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫৭৭ বার বল পাঠান মেসি। পাঁচবার তার হাতে ওঠে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর।

মেসির ক্যারিয়ার
পজিশন: ফরোয়ার্ড
ক্লাব: বার্সেলোনা (২০০৪ থেকে)
মেজর শিরোপা: চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ৪টি, লা লিগা ৯টি, কোপা দেল রে ৬টি, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ৩টি, স্প্যানিশ সুপার কাপ ৮টি, ইউয়েফা সুপার কাপ ৩টি।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার: ১২৮ ম্যাচ, ৬৫ গোল
ব্যক্তিগত অর্জন: ৫টি ব্যালন ডি’অর

ম্যারাডোনার ক্যারিয়ার
পজিশন: অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার
ক্লাব: আর্জেন্টিনোস জুনিয়র (১৯৭৬-৮১), বোকা জুনিয়র্স (১৯৮১-৮২), বার্সেলোনা (১৯৮২-৮৪), নাপোলি (১৯৮৪-৯১), সেভিয়া (১৯৯২-৯৩), নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ (১৯৯৩-৯৪), বোকা জুনিয়র্স (১৯৯৫-৯৭)।
মেজর শিরোপা: ইউয়েফা কাপ ১টি, সিরি আ ২টি, ইতালিয়ান কাপ ১টি, ইতালিয়ান সুপার কাপ ১টি, আজেন্টাইন লীগ ১টি, কোপা দেল রে ১টি, স্প্যানিশ লীগ কাপ ১টি।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার: ৯১ ম্যাচ, ৩৪ গোল
আন্তর্জাতিক শিরোপা: ১৯৮৬ বিশ্বকাপ
ব্যক্তিগত অর্জন: ফিফা’র শতাব্দির সেরা খেলোয়াড়
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status