এক্সক্লুসিভ
মিরপুর কাউন্দিয়াবাসীর আক্ষেপ
নুরে আলম জিকু
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন
‘শুনলাম ব্রিজ হইবো কিন্তু কই, ব্রিজ হইতে হইতে আমাগো সন্তানেরাও বুড়া হইয়া যাইবো।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার লাগোয়া কাউন্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধা বিবি জহুরা। বিবি জহুরার মতো প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষের স্বপ্ন থমকে আছে একটি ব্রিজের অভাবে। ব্রিজের স্বাদ নৌকাতেই মেটাতে হচ্ছে কাউন্দিয়াবাসীর। গাবতলী বেড়িবাঁধের শিরনীরটেক, দিয়াবাড়ী ও মিরপুর বেঁড়িবাধ দিয়ে তুরাগ নদ পার হলেই কাউন্দিয়া ইউনিয়ন। চারদিক নদ বেষ্টিত কাউন্দিয়া তুরাগ নদের বুকে জেগে ওঠা ছোট্ট একটি দ্বীপ। যা কালের আবর্তে জনবহুল এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঢাকা ও সাভারের সীমান্ত এলাকা এটি। ২০০ বছরের বেশি বয়সী কাউন্দিয়ার আয়তন ১১ দশমিক ৪৭ বর্গমাইল। ২২টি গ্রামে সমন্বেয়ে গঠিত কাউন্দিয়া ইউনিয়নটি যার চারদিক পানি বেষ্টিত। নৌকাই একমাত্র যাতায়াতের বাহন। কয়েকশ’ গজ প্রশস্তের তুরাগ নদ পার হতে নৌকায় সময় লাগে ৭-১০ মিনিট। যা ব্রিজ হলে এক মিনিট লাগার কথা। অল্প কয়েক মিনিটের সংযোগ স্থলটির কারণে কাউন্দিয়াবাসীর কান্না থামছে না। একটি ব্রিজের অভাবে যেন সবকিছু থমকে আছে। ব্রিজের কারণে এই ইউনিয়নের মানুষের উন্নত জীবনের স্বপ্ন বন্দি। নানা সমস্যায় জর্জরিত এখানকার জনজীবন। প্রতিদিন ভোর থেকেই কাউন্দিয়া-দিয়াবাড়ীর ঘাটে দীর্ঘ লাইন ধরে নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় অফিস ও স্কুলগামী কাউন্দিয়াবাসীকে। নৌকায় পারাপারের একমাত্র অবলম্বন হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষাথীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। ছোট নৌকায় করে পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় কোলের শিশুসহ নদীতে পড়ে গেছে অনেক বাবা-মা। নদীর পানি যখন নেমে যায়, গার্মেন্ট ও ট্যানারির বর্জ্যে উৎকট গন্ধ হয় নদীতে। নৌকায় করে চলাচল করা এখানকার মানুষের কষ্টকর হয়ে পড়ে। এভাবেই প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার মানুষ নৌকায় যাতায়াত করে। কাউন্দিয়া-দিয়াবাড়ি ঘাটটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছরে বহুসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এই ঘাটে। তুরাগ ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নদী ও বিভিন্ন খানাখন্দ ভরাট করতে বালিবাহী জাহাজ চলাচলের একমাত্র পথ এই তুরাগ খাল। প্রতিদিনই কয়েক সহস্রাধিক বালির জাহাজ এই পথে যাতায়াত করে। এসব বালিবাহী ডুবো জাহাজের সঙ্গে যাত্রীবাহী নৌকার ধাক্কা খেলে শিশুসহ বহু সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারায়। সর্বশেষ ৭ই ফেব্রুয়ারিও বালিবাহী জাহাজের সঙ্গে নৌকার ধাক্কায় ২ জন পানিতে ডুবে মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০ বছরে অন্তত শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এত দুর্ঘটনা হওয়ার পরও ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় কাউন্দিয়াবাসীর দুঃখের শেষ নেই। বিগত নির্বাচনগুলোতে ব্রিজটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেউ কথা রাখেনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বহু চেষ্টা করেও ব্রিজ নির্মাণের সফলতা পায়নি।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, একটি প্রভাবশালী মহল ব্রিজ নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে। ব্রিজটি না হওয়ায় তারা ঘাট ইজারার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের হাতে কাউন্দিয়াবাসীর উন্নয়ন বন্দি হয়ে আছে।
কাউন্দিয়ার বাসিন্দা বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল জানায়, প্রতিদিনই আমাকে কলেজ ও পারিবারিক কাজে দিনে কয়েকবার নৌকা পাড়ি দিতে হয়। নৌকা ভাড়ার সঙ্গে গুনতে হয় টোলের টাকা। নদী পার হতে গিয়ে বহুবার বইপত্রসহ পানিতে পড়ে গেছি। ব্রিজটি থাকলে এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে যেত।
দিনমজুর আবুল কালাম জানান, আমি মিরপুর ১-এ রিকশা চালাই। ঢাকায় এসেই কম ভাড়ায় থাকার জন্য গত ৭ বছর আগে কাউন্দিয়া বাসাভাড়া নিই। এখনো প্রতিদিন আমাকে ৪ বার করে নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। ব্রিজ না থাকায় রিকশা নদীর ওপারে তালা মেরে আসতে হয়। আর সব সময় ভয়ে থাকি কখন রিকশা চুরি হয়ে যায়। রিকশা চুরি হলে আমার ছেলেমেয়েরা না খেয়ে থাকতে হবে। ব্রিজটি হলে চিন্তা করতে হতো না।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০ বছরে অন্তত শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এত দুর্ঘটনা হওয়ার পরও ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় কাউন্দিয়াবাসীর দুঃখের শেষ নেই। বিগত নির্বাচনগুলোতে ব্রিজটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেউ কথা রাখেনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বহু চেষ্টা করেও ব্রিজ নির্মাণের সফলতা পায়নি।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, একটি প্রভাবশালী মহল ব্রিজ নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে। ব্রিজটি না হওয়ায় তারা ঘাট ইজারার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের হাতে কাউন্দিয়াবাসীর উন্নয়ন বন্দি হয়ে আছে।
কাউন্দিয়ার বাসিন্দা বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল জানায়, প্রতিদিনই আমাকে কলেজ ও পারিবারিক কাজে দিনে কয়েকবার নৌকা পাড়ি দিতে হয়। নৌকা ভাড়ার সঙ্গে গুনতে হয় টোলের টাকা। নদী পার হতে গিয়ে বহুবার বইপত্রসহ পানিতে পড়ে গেছি। ব্রিজটি থাকলে এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে যেত।
দিনমজুর আবুল কালাম জানান, আমি মিরপুর ১-এ রিকশা চালাই। ঢাকায় এসেই কম ভাড়ায় থাকার জন্য গত ৭ বছর আগে কাউন্দিয়া বাসাভাড়া নিই। এখনো প্রতিদিন আমাকে ৪ বার করে নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। ব্রিজ না থাকায় রিকশা নদীর ওপারে তালা মেরে আসতে হয়। আর সব সময় ভয়ে থাকি কখন রিকশা চুরি হয়ে যায়। রিকশা চুরি হলে আমার ছেলেমেয়েরা না খেয়ে থাকতে হবে। ব্রিজটি হলে চিন্তা করতে হতো না।