ষোলো আনা
একজন লিমার গল্প
প্রণব কর্মকার
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২৬ পূর্বাহ্ন
লিমাস বুটিক। ২০১৫ সালে মাত্র চারটি পণ্য দিয়ে পথ চলা শুরু করেন মাহমুদা নাসরিন লিমা। এরপর শত বাধা পেরিয়ে বুদ্ধি, সাহসিকতাকে সঙ্গী করে আজ একজন সফল ব্যবসায়ী।
দুই সন্তানের জননী লিমা। প্রথম অবস্থায় তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করতেন রাজধানীতে। তবে বর্তমানে সারা দেশে রয়েছে তার তৈরি পণ্যের চাহিদা। তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করে থাকেন।
প্রথম অবস্থায় তিনি শুধু সালোয়ার, থ্রিপিস তৈরি করতেন। বর্তমানে এগুলোর পাশাপাশি শাড়ি, নকশীকাঁথা, বিছানার চাদর তৈরি করে থাকেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভিন্ন ধরনের ও রঙের পোশাক তৈরির কাজও করে থাকেন তিনি।
লিমা জানান, ব্যবসা শুরুর দিকে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তবে এই ব্যবসা দাঁড় করানোর পেছনে তার মা ও স্বামীর সহযোগিতা অপরিসীম। তার সার্বিক কাজে তার ছোট ভাই তাকে সাহায্য করে থাকেন।
লিমা বলেন, প্রথমদিকে অনেকে পণ্য অর্ডার করেও পণ্য নিতে চাইতো না। কিন্তু বর্তমানে তিনি বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করেছেন। পণ্য অর্ডার করার সময় ন্যূনতম ৫শ’ টাকা অগ্রিম দেয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু গ্রাহকের আস্থা অর্জনের ফলে অনেকেই পণ্য হাতে পাবার পূর্বেই মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।
লিমা তার বাসার একটি রুম অফিস হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। তিনি সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন ২০১৪ সালে। প্রথম অবস্থায় তার ব্যাংকে চাকরি করার ইচ্ছা থাকলেও পরে নিজে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যয়ে তিনি এই কাজ শুরু করেন। তার এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ‘লিমাস বুটিক’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ রয়েছে। এই পেইজে প্রায় আড়াই লাখ ব্যক্তি লাইক দিয়েছেন। সর্বনিম্ন ২৪শ’ টাকা থেকে ১৩ হাজার টাকার পণ্য পর্যন্ত পাওয়া যায় এখানে। স্বপ্ন আছে প্রথমে ঢাকায় একটি দোকান দেবেন এরপর ঝিনাইদহ এবং চট্টগ্রামে করবেন শাখা।
তার কারিগররা মূলত ঝিনাইদহের প্রান্তিক পরিবারের মহিলা। তার কাজের মাধ্যমে অনেক মহিলা স্বাবলম্বী হয়েছেন। এতে তিনি অনেক খুশি। লিমা আরো বলেন, গ্রাহকের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে নতুন ডিজাইনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তার বর্তমান মাসিক আয় প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। তিনি পিছিয়ে পড়া নারীদের উদ্দেশে একটা কথাই বলেন, ঘরে বসে থাকার দিন শেষ। চাইলে সব সম্ভব।