ভারত
প্রণব মুখোপাধ্যায়সহ তিনজনকে ভারতরত্ন সম্মান
কলকাতা প্রতিনিধি
২৬ জানুয়ারি ২০১৯, শনিবার, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মরণোত্তর এই সম্মান দেওয়া হয়েছে সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকা ও রাজনীতিবিদ নানাজি দেশমুখকে। ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৫ সালের পর গত কয়েক বছরে কাউকে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হয় নি। ভারতরত্ন সম্মান পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রণববাবু বলেছেন, ভারতের জনগণকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নম্রতার সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মান গ্রহণ করছি। আমি বাঙালি হিসেবেও এ জন্য গর্বিত। আমি একটা কথা সবসময় বলেছি, আজ আবার সেটাই বলতে চাই। আমি আমার প্রিয় দেশের মানুষকে যা দিয়েছি তার চেয়ে জীবনে অনেক বেশি পেয়েছি। ‘ভারতরত্ন’ ঘোষণার পর মোদী টুইট করে বলেছেন, প্রণবদা আমাদের সময়ে অসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক। নিঃস্বার্থ ও অক্লান্তভাবে দশকের পর দশক ধরে দেশের সেবা করেছেন। তাঁর প্রজ্ঞা ও মেধার তুলনা হয় না। প্রণববাবুর ভারত রত্ন পাবার ফলে বাঙালি হিসেবে এ পর্যন্ত মোট ৭ জন এই সম্মান পেয়েছেন। তবে প্রণববাবু সহ তিনজন এমন ব্যক্তিকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে যা নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের বছরে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই এই ব্যক্তি বাছাই করা হয়েছে বলে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত। অবশ্য প্রতিবছরই ভারতরত্ন দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা হয়। এবারও হচ্ছে। পর্যবেক্ষদের একাংশের মতে, হিন্দি বলয়ে জমি হারানোর আশঙ্কায় আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ভারতকে বিজেপি জয়ের জন্য বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছে। তাই প্রণববাবুকে ‘ভারতরত্ন’ দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার বাংলার মন জয়ের চেষ্টা করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অসমিয়াদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে তাকে প্রশমিত করার জন্যই অসমের ভূমিপুত্র ভূপেন হাজরিকাকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হয়েছে। আবার সঙ্ঘ নেতাদের মন রাখতেই এতদিন পরে নানাজি দেশমুখকে ভারত সম্মান জানানো হয়েছে। এদিকে রাজনীতিক নেতারা তাদের মতো করে এই ভারতরত্ন সম্মান নিয়ে নিজেদের মত করে টুইট করেছেন। যেমন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, আমাদেরই এক জনের অপরিসীম অবদান যে স্বীকৃতি পেল, তা কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত গর্বের। তবে দিল্লির আপ নেতা টুইট করে বলেছেন, সঙ্ঘের শাখায় একবার যাও, আর রত্ন হয়ে যাও। কিন্তু প্রকাশ্যে স্বাভাবিক কারণেই এই বিতর্ককে আমল দিতে নারাজ কংগ্রেস নেতারা। উল্টো বিজেপির কৌশলের পাল্টা হিসেবে তাঁরা বলছেন, যে গান্ধী-নেহেরুর উত্তরাধিকার মুছে ফেলতে মোদী এত মরিয়া, প্রণববাবু সেই ভাবধারাই বহন করে চলেছেন আজীবন।