বাংলারজমিন

বদরগঞ্জে খুরা রোগে ২০০ গরুর মৃত্যু

রেজাউল করিম, বদরগঞ্জ (রংপুর) থেকে

২১ জানুয়ারি ২০১৯, সোমবার, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

রংপুরের বদরগঞ্জে এক মাসের ব্যবধানে খুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই শতাধিক গরু মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরো সহস্রাধিক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারিদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। একের পর এক গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন গরু খামারিরা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ রোগ প্রতিরোধে মাঠে নেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের লোকজন। তবে ওই রোগে উপজেলায় কতটি গরু মারা গেছে- এমন কোনো তথ্য নেই স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. ওমর ফারুক দাবি করেন, তার লোকজন মাঠ পর্যায়ে চিকিৎসা দেয়ায় এখন খুরা রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে খুরা রোগে উপজেলার ৪-৫টি  বাছুর মারা যাওয়ার সংবাদ তিনি শুনেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, উপজেলায় খুরা রোগে সহস্রাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। গত ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত এক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন এলাকায় খুরা রোগে দুই শতাধিক গরু মারা গেছে ।
শাহাপুর গ্রামের খামারি রহিদুল হক বলেন, ‘এক মাস আগে আমার পাঁচটি গরু খুরা রোগে আক্রান্ত হলে আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে যাই। সেখানে ডাক্তার আমাকে গরুর মুখে দেয়ার জন্য একটু সোটা ও পাউডার দেন। আমি চিকিৎসককে গরুগুলোকে দেখার জন্য বাড়িতে আসার অনেক অনুরোধ করেও আনতে পারিনি। ১৫ দিন আগে আমার বিদেশি জাতের ১টি গাভী ও ১টি বাছুর  মারা গেছে।’ রহিদুল অভিযোগ করে বলেন, যারা টাকা দিতে পারেন, চিকিৎসক তাদের বাড়িতে যান।’ তার স্ত্রী জিয়াছমিন বেগম বলেন, ‘আমি খেয়ে না খেয়ে গরুগুলোকে খাওয়াই। সঠিক চিকিৎসার অভাবে দু’টি গরু মারা গেল।’
কালুপাড়া ইউনিয়নের মোকরেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজাদুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘এ রকম ভয়াবহ খুরা রোগ আগে কখনো দেখিনি। এলাকার প্রায় গরুকে খুরা রোগ আক্রান্ত করেছে। মারা গেছে অর্ধশতাধিক গরু। কিন্তু এই এলাকায় এখন পর্যন্ত পশু হাসপাতাল থেকে কোনো চিকিৎসক আসেনি।’
কয়েকজন গরুর খামারি জানান, গরুর প্রথমে মুখে ও জিহ্বায় এবং পরে চার পায়ের খুরার মাঝে ঘা হয়। এর পর মুখ দিয়ে প্রচুর লালা পড়তে থাকে। গরু খাওয়া ছেড়ে দেয়। ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে মারা যায়।
এই খুরা রোগ বেশি দেখা দিয়েছে উপজেলার কালুপাড়া, দামোদরপুর, বিষ্ণুপর ও রামনাথপুর ইউনিয়নে এবং বদরগঞ্জ পৌরসভায় ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সম্পর্ক জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. ওমর ফারুক বলেন, উপজেলায় একযোগে খুরা রোগ দেখা দেয়। অফিসে কম জনবল দিয়ে সবার বাড়িতে গিয়ে গরুকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, খুরা রোগ একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগ একটি গরুকে আক্রান্ত করলে তা দ্রুত ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত গরুকে ভ্যাকসিন দেয়া যায় না। শুধু অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দিতে হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status