দেশ বিদেশ
মার্চে জাতীয় কাউন্সিল করতে পারে বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন
আগামী মার্চে দলের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করতে পারে বিএনপি। মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে। বিএনপির দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী মার্চেই বর্তমান জাতীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। বৈঠকে নীতিনির্ধারক ফোরামের একজন সদস্য মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাউন্সিল আয়োজনের প্রস্তাব দেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে সাজানো ফল প্রকাশের পর সবকিছু নতুন করে ভাবতে চাইছেন বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরাম। তারা পর্যালোচনা করছেন দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনসহ নানা বিষয়ে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা ও রাজনীতিতে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে নীতিনির্ধারক ফোরামের সদস্যরা দলকে সাংগঠনিকভাবে পুনর্গঠনের ওপর মতামত দেন। সে অনুযায়ী বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এমনকি দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলের মতো ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রস্তাবও আসে। স্থায়ী কমিটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে দলের বিষয়ভিত্তিক কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে কিছু বিষয়ভিত্তিক কমিটির গঠনের প্রস্তাব অনুমোদিত ও গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে শেষ পর্যন্ত সে কমিটিগুলো গঠন করা হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে খাতওয়াডর সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষু এবং করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অভিমত প্রদানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিষয়ভিত্তিক কমিটি করার জন্য একজন সদস্য মতামত দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন প্রসঙ্গটি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে। জাতীয় নির্বাচনের পরও এ ইস্যুতে কোনো কর্মসূচি না দেয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সেটা নিয়ে নেতারা কথা বলেন। আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি তার কারাবাসের এক বছর পূর্ণ হবে। ফলে এ দিনকে কেন্দ্র করে কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায়, তা নিয়েও তারা আলোচনা করেন। তবে বৈঠকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। বিএনপি স্থায়ী কমিটি সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন ও দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে বৈঠকের আলোচনায়। বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরামের অন্তত দুজন সদস্য হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সাত দফা দাবির ন্যূনতম পূরণ না হওয়ার পর নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হয়নি। নানা যুক্তিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সেটা বাস্তবে রূপ দেয়া যায়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিএনপিসহ দেশবাসীর যে প্রত্যাশা ছিল তারা তা পূরণ করতে পারেননি। নির্বাচনের আগের রাত ও নির্বাচনের দিনে অনিয়মসহ নির্বাচনের প্রতিকূল পরিবেশের বিষয়গুলো ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারেননি। তার পরও জাতীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনীতিতে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে সেটাকে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না বিএনপি। তাই ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তবতা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঐক্যকে আরও জোরদার করার মাধ্যমে সামনের দিনে পথ চলতে চায় তারা। তবে দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামীতে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনেই অংশ নিতে চায় না বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলটির নীতিনির্ধারক ফোরামের বেশির ভাগ সদস্যই এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। তারা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে তাকে দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে।