বাংলারজমিন

মণিরামপুরে অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ

মো. মাসুম বিল্লাহ, মণিরামপুর থেকে

১৮ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২১ পূর্বাহ্ন

 যশোরের মণিরামপুরে অন্তত অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাঠদান করা হচ্ছে। এখনো ভবন না হওয়ায় অন্তত ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা মানহীন পরিবেশে লেখাপড়া করছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৩৩টি বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। জরাজীর্ণ এসব ভবনে ঝুঁকির মধ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। কোথাও কোথাও অভিভাবকদের চাপের মুখে বাধ্য হয়ে স্কুল চত্বরে অস্থায়ী খুপড়ি ঘরে, কোথাওবা সামিয়ানা (বড় চাদর) টানিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
সরজমিন উপজেলার পাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা স্কুলের মূল ভবন ছেড়ে স্কুল চত্বরে অস্থায়ীভাবে চাচের তৈরি একটি খুপরি ঘরে ক্লাস করছে। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান জানান, স্কুল ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েকমাস আগে ছাদ খসে পড়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাছাড়া অভিভাবকরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে বাধা দিচ্ছেন। তাই এখানে ক্লাস নিচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্ধেন্দু কুমার দাস বলেন, ‘১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। স্কুলটি রাস্তার পাশে হওয়ায় অল্প দিনেই ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।’
এভাবেই অতি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে উপজেলার শৈলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাঁপা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালঝাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মণিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া উপজেলার অন্তত ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো ভবন নেই। ফলে ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা  মানবেতর পরিবেশের মধ্যদিয়ে পাঠদান ও গ্রহণ করছেন।
সরজমিন উপজেলার নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটির জীর্ণ দশা। সেটি যে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা কেউ মনেই করবে না।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিতুনজিরা খাতুন জানায়, ‘বৃষ্টির সময় আমাদের স্কুল ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে, আর গরমের সময় ঘরের মধ্যে গরমে থাকতে পারি না, তাই স্যার-আপারা গাছতলায় ক্লাস নেয়।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল মণ্ডল বলেন, বিল্ডিংয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোসা. মনিরা খাতুন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনগুলোর তালিকা করে উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এসব ভবন সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ হবে। তাছাড়া যে সব বিদ্যালয়ে ভবন নেই তার তালিকাও যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status