ভারত
এনআরসিতে নাম না ওঠায় আসামে ফের আত্মহত্যা
কলকাতা প্রতিনিধি
১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
ফাইল ফটো
আসামে এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জিতে নাম না উঠায় আতঙ্কে ফের আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে আসামে একই কারণে বেশ কয়েকজন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। গত অক্টোবরেই নীরদবরণ দাস নামে এক বাংলাভাষী আইনজীবী নাম বাদ পড়ার অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন। তার আগে আত্মহত্যা করেছেন এক শিক্ষকও। মোট এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ জন এনআরসি তালিকায় নাম বাদ পড়ায় আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেছেন হাইলাকান্দি জেলার ধলাই চা বাগানের শ্রমিক কৈলাস তাঁতি। কৈলাসের নিজের তো বটেই, তার পরিবারেরও কারও নাম ওঠেনি এনআরসি তালিকায়। ফলে বেশ কয়েক মাস ধরে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আতঙ্কও গ্রাস করেছিল। মৃতের স্ত্রী অনিতা তাঁতির অভিযোগ, এনআরসি-র খসড়ায় পরিবারের সদস্যদের নাম না থাকায় তার স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন শ্রমিক বাগানেরই একটি গাছের ডালে তাঁর নিথর দেহটি ঝুলতে দেখেন। বাগান শ্রমিকরা জানিয়েছেন, খসড়ায় নাম না ওঠায় সব সময় আতঙ্কে থাকতেন কৈলাস। প্রায়ই বলতেন, পুলিশ এসে সবাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে জেলে পুরে দেবে। এক সময় উন্মাদের মতো আচরণও করতে শুরু করেন। কৈলাসের মৃত্যুতে গোটা বাগান এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাগান শ্রমিকদের কথায়, এনআরসিতে নীতি স্থির হয়েছে, আদিবাসী বাগান শ্রমিকরা বিশেষ সুবিধে পাবেন। ভারতের আদি বাসিন্দা ধরে নিয়ে তাঁদের কাছে ১৯৭১ সালের আগের কাগজ খোঁজা হবে না। এর পরেও দেখা যাচ্ছে, খসড়া এনআরসিতে বহু বাগান শ্রমিকের নাম নেই। অশিক্ষিত শ্রমিকরা তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ দিকে, আসামে এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে ফের ভারত সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে জাতিসংঘের ধর্মীয় স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু সমস্যা, শ্রেণি ও বর্ণবৈষম্য, বেআইনি বন্দিত্ব সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এলিনা স্টেনার্ট। এ বারের চিঠিতে খসড়া থেকে বাদ পড়া ধর্মীয় ও ভাষা-সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। পুনরায় আবেদনের জন্য নাম বাদ পড়াদের যথেষ্ট সময় দেওয়ার জন্যও তাঁদের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ভূমিকা ও বিনা বিচারে বা প্রমাণপত্র থাকার পরেও অনেককে ডি-ভোটার ঘোষণা করা নিয়েও সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ।