অনলাইন

আচরণবিধির ব্যাপক লঙ্ঘন রোধে ইসি’র নিস্ক্রিয়তায় উদ্বিগ্ন টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ২:৫৩ পূর্বাহ্ন

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রকাশ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যক্রমে উপর্যুপরি বাধাদান, হামলা-মামলার মাধ্যমে হয়রানি, ভীতিপ্রদর্শনসহ বিভিন্নভাবে নির্বাচনী আচরণবিধির ব্যাপক লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান নিস্ক্রিয়তায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এছাড়া নির্বাচনী কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে গণমাধ্যমের সরাসরি সম্প্রচার না করার অনুরোধ এবং ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে কমিশনের স্ববিরোধী অবস্থান জনমনে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থার সংকট আরো বাড়াবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। নির্বাচনী মাঠে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র ও পরিবেশ নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সক্রিয় হয়ে আত্মসম্মানবোধ ও সৎসাহসের সাথে নিরপেক্ষভাবে তৎপর ও দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

আজ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী, বহুল প্রতীক্ষিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শুরু থেকেই প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যক্রমে উপর্যুপরি মামলা-হামলার মাধ্যমে বাধাদান, হয়রানি, ভীতিপ্রদর্শন মোকাবেলায় নির্বাচন কমিশনের ক্রমাগত ব্যর্থতা এমনকি আত্মমর্যাদাশীল উদাসীনতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। বিভিন্ন বিরোধী পক্ষের প্রার্থীরা শুধু ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হাতেই লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছেন না; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিনই সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে, এমনকি ঘোষণা দিয়ে আইন-শৃংখলা বিরোধী কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে কলুষিত করার হীন প্রচেষ্টা কঠোর হস্তে দমনের উদ্যোগের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্তভাব যেন নিজেকে পাথরের মূর্তিতে পরিণত করেছে, যেমনটি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রত্যাশিত ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইসি থেকে বলা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের মত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কার্যকরতার এ ধরনের দৃষ্টান্ত লজ্জাজনক ও সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’ তফসিল ঘোষণার পর থেকে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিধায় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে তাদের ব্যর্থতার দায় কমিশনের উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘নির্বাচনে সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে কিছু ফাঁকা বুলি ছাড়া কোন প্রকার ইতিবাচক দৃষ্টান্ত এখনো কমিশন স্থাপন করতে পারেনি, যা অত্যন্ত বিব্রতকর। অন্যদিকে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিও আমরা আহ্বান জানাই নিজেদের পেশাগত দায়দায়িত্বের ওপর শ্রদ্ধাবোধে সচেতন হয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জনগণের আস্থা অর্জনের প্রয়াস করার জন্য।’

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে গণমাধ্যমের সরাসরি সংবাদ প্রচার না করার অনুরোধ সম্পর্কে ড. জামান বলেন, ‘বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে এ প্রথা চালু থাকলেও নির্বাচনী কার্যক্রমে বিঘœ ঘটাবে উল্লেখ করে এ ধরণের পরামর্শের পিছনে যুক্তি বোধগম্য নয়। ভোটকেন্দ্রে ফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কমিশনের স্ববিরোধী অবস্থান কমিশনের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হতে পারে এই যুক্তিতে ফোনের ব্যবহার বন্ধ করা মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার সমতুল্য। তদুপরি ফোন ব্যবহার বন্ধ করা বাস্তবে কোন বিশেষ মহলের কার্যক্রম বিশেষ করে কারচুপি ও সহিংসতামূলক তৎপরতাকে সুরক্ষা প্রদানের নামান্তর কিনা এ প্রশ্ন উঠাও স্বাভাবিক।’ পাশাপাশি, নির্বাচনকালে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীন ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন প্রণয়নে অংশীজনদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান ড. জামান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status