এক্সক্লুসিভ
শ্বশুর-জামাতা দু’জনেই মহাজোট প্রার্থী!
জাবেদ রহিম বিজন/মাহবুব খান বাবুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থ
১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন
শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা মাঠে। মেয়ের জামাই রেজাউল ইসলাম ভূঁঁইয়াও আছেন। সমস্যা হয়েছে দু’জনেই নিজেদের দাবি করছেন মহাজোট প্রার্থী হিসেবে। মহাজোট প্রার্থী বলে পরিচয় দেয়া হয়েছে দু’জনের পোস্টারেই। মৃধার প্রতীক ‘সিংহ’ আর রেজাউলের ‘লাঙল’। মৃধার সমর্থকরা ‘নৌকা’-‘সিংহ’ এক ভাই বলেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে খোঁজখবরে জানা গেছে মৃধা-ই মহাজোটের আসল প্রার্থী। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ে যে কমিটি করেছে সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে জিয়াউল হক মৃধার নাম রয়েছে। তাছাড়া জাতীয় পার্টির চূড়ান্ত তালিকাতেও মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বী ২৯ জনের তালিকায় নাম রয়েছে মৃধার। মানবজমিনকে মৃধা বলেন- প্রতীক যাই হোক আমি মহাজোটের প্রার্থী। আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী। আমি ছাড়া এখন আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টির কারো থাকার বৈধতা নেই। কারণ এটি উন্মুক্ত আসন নয়। বিপুল ভোটে জয় পাওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি। মৃধা বলেন, ‘চেনা বাউনের পইতা লাগে না। আমার পইতা আছে’। শুধু প্রতীকটাকে পরিচয় করাতে হবে। আমি ১০ বছর এ মাঠে ছিলাম। কাজ করেছি। তিনি জানান, সকলেই তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। সরাইল ও আশুগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই মাঠে নেমেছেন। মৃধা মেয়ের জামাতার কাজকে অন্যায় অবহিত করে বলেন- জামাতা হোক, অন্যায় যে করে এর প্রতিবাদ করতে হবে। সে যেটা করেছে নিতান্ত্ত অন্যায়, গর্হিত আচরণ। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ সালে এই আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে আবারো মহাজোটের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মহাজোটের মনোনয়ন বাগিয়ে নেন জেলা সদরের বাসিন্দা তার নিজের মেয়ের জামাই রেজাউল ইসলাম ভূইয়া। রেজাউল সদর আসনের প্রার্থী ছিলেন। সেখানে মনোনয়ন পাওয়া কঠিন হওয়ায় শ্বশুরের আসনের দিকে ঝোঁকেন রেজাউল। রেজাউলের এই কাণ্ডে ফুঁসে উঠেন শ্বশুরের সমর্থকরা। তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে এর প্রতিবাদ জানান। পরে মনোনয়ন পরিবর্তন হলেও দলের প্রতীক ‘লাঙ্গল’ পাননি তিনি। রেজাউল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করায় তাকে দেয়া হয় ‘লাঙ্গল’ প্রতীক। আর শ্বশুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করায় তাকে ‘সিংহ’ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। এদিকে স্বতন্ত্র মৃধাকে মহাজোট প্রার্থী ঘোষণা করায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানান আশুগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা। রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নাসির আহমেদ সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা মনোনয়নপত্র দাখিল করে সিংহ প্রতীক গ্রহণ করেছেন। তারপরেও তিনি মহাজোটের নাম উল্লেখ করে বিভিন্নভাবে প্রচার করে আসছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য বিষয়টি বিব্রতকর। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা করে সর্বসম্মতিক্রমে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মঈন উদ্দিন মঈনের নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।