অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারুণ্যের লড়াই

দল ও জোটে লড়াই করে জিতে যাওয়া ফয়সল আহমদ চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের নৌকার মুখোমুখি। সিলেট-৬ আসনে দীর্ঘদিন পর বিএনপি নিজেদের প্রতীক ও প্রার্থী পেয়েছে। এ কারণে এ আসনে উজ্জীবিত বিএনপি নেতাকর্মীরা। জোট নেতারাও ধানের শীষের পক্ষে মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আর শিক্ষামন্ত্রী এ আসনের পরিচিত নেতা। দুই যুগের বেশি সময় ধরে তিনি এ আসনে নির্বাচন করছেন। সর্বশেষ এমপি হয়ে মন্ত্রীও হয়েছেন। এ আসনে এবার নাহিদের নির্বাচনী দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে তরুণ ফয়সলকে।
এবারের নির্বাচনে নিজ এলাকায় নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বিগত ১০ বছরে নির্বাচনী এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু টেকসই উন্নয়ন না হওয়ার কারণে ভোটারের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিশেষ করে রাস্তার উন্নয়ন নিয়ে তিনি এবারের ভোটে বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন। আর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হলেও নিজ নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব এককভাবে তিনি ধরে রাখতে পারেন নি। আগে থেকেই এলাকায় তার বিপক্ষে আওয়ামী লীগের একাংশ অবস্থান নিয়েছিল। এই অবস্থানের কারণে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে পৌর এবং উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহ ছাড়া প্রার্থী দিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ মাত্র তিনমাস আগে অনুষ্ঠিত হওয়া গোলাপগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই জয়লাভ করেন।
এই অবস্থায়ও সুসংহত অবস্থানে রয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর অবস্থান। এবারের নির্বাচনে তিনি শুরু থেকেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। নিজেই ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতারা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী নুুরুল ইসলাম নাহিদ সজ্জন ব্যক্তি হওয়ার কারণে মানুষ তাকে বিমুখ করছে না। যেখানেই যাচ্ছেন মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে অসমাপ্ত কিছু কাজ রয়েছে। এই কাজগুলো শেষ করতে শিক্ষামন্ত্রীর প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি শিক্ষামন্ত্রী হয়ে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারবাসীর মুখ উজ্জ্বল করায় তার পক্ষেই জনসমর্থন বেশি রয়েছে বলে জানান।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। এখন তিনি শিল্পপতি। বারাকা পাওয়ার কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তি। পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বেশ কয়েক বছর ধরে নিজ এলাকা গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে হাঁটছেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। ধনাঢ্য ব্যক্তি হওয়ার কারণে এলাকাবাসীর দুর্যোগ-দুর্দিনে পাশে থেকে কাজ করছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। এ কারণে ফয়সল আহমদ চৌধুরী এবার ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার পর থেকে সিলেট-৬ নির্বাচনী আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। দুটি উপজেলায় দলের মধ্যে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে একাট্টা রয়েছেন। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধানের শীষ প্রতীক পাননি। এবার প্রতীক ও দলীয় প্রার্থী পেয়ে উজ্জীবিত সবাই।