শেষের পাতা

রাখাইনে সেনা অভিযানকে গণহত্যা আখ্যা দিলো মার্কিন কংগ্রেস

মানবজমিন ডেস্ক

১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক চালানো হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি রেজ্যুলেশন পাস করেছেন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষের সদস্যরা। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’র স্বীকৃতি দেয়ার  জন্য ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের উপর চাপ আরো জোরালো হয়েছে। বৃহসপতিবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে উভয় দলের ৩৯৪ সদস্যের ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। শুধু একজন রিপাবলিকান এর বিরোধিতা করেছেন।

এদিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে দেশটিতে আটক রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়। এছাড়া গত বছরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সংঘটিত বর্বরতা মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা নাকি আন্তর্জাতিক অন্য আইনের অধীনে পড়ে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র প্রতি আহ্বান জানান নিম্নকক্ষের সদস্যরা।     

এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে হাউস ফরেন এফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস বলেন, মিয়ানমারে সংগঠিত অপরাধকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। স্বীকৃতি না দেয়ার অর্থ হলো অপরাধকে আড়াল করা এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করা। এই প্রস্তাবটি পাসের মাধ্যমে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ওই হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতি-নির্মূল অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তখন রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞে জড়িত চারজন কমান্ডার এবং সেনাবাহিনীর দুইটি ইউনিটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তখন থেকেই এ হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতি-নির্মূল অভিযান’ ছাড়াও গণহত্যা বা আরো কঠোর আইনের আওতায় আনা যায় কি-না সে প্রচেষ্টা চলছে। গত মাসে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে বর্বরতা চালিয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তবে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে পাস হওয়া প্রস্তাবের প্রতি উচ্চকক্ষ সিনেটও  যদি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে, তাহলে ট্রামপ প্রশাসনের উপর চাপ আরো বৃদ্ধি পাবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নির্যাতন- নিপীড়ন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা দেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। তবে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে এ হত্যাযজ্ঞকে অস্বীকার করে ওই ঘটনাকে মুসলিম উগ্রপন্থিদের হামলার প্রতিউত্তর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status