খেলা
বার্নাব্যুতে ‘বড় লজ্জা’ রিয়ালের
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন
নিজেদের ইতিহাসে ইউরোপের ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতায় নিজ মাঠে সবচেয়ে বাজে হারের অভিজ্ঞতা নিলো রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সিএসকেএ মস্কো। আর ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্বে রিয়ালকে দুই ম্যাচেই হারানোর রেকর্ডে জুভেন্টাসের পাশে নাম লেখায় রাশিয়ান ক্লাবটি। ২০০৮-০৯ মৌসুমে এই কৃতিত্ব দেখায় জুভিরা। আগেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। আর মস্কোর বিপক্ষে মদরিচ, টনি ক্রুস, গ্যারেথ বেলদের বেঞ্চে রেখে তরুণ দল নামানোর মাশুল গুনেন রিয়াল কোচ সান্টিয়াগো সোলারি। একাদশের গড় বয়স ছিল ২৪ বছর ১০০ দিন। যা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে রিয়াল মাদ্রিদের তৃতীয় বয়োকনিষ্ঠ দল। নিজ মাঠে ৯ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে হার দেখলো লস ব্লাঙ্কসরা। গ্রুপ পর্বে বার্নাব্যুতে রিয়ালের সবশেষ হারের স্মৃতি ২৮ ম্যাচ আগের। ২০০৯ সালের অক্টোবরে এসি মিলানের বিপক্ষে (৩-২)। প্রতিযোগিতায় আগের ৩৩ ম্যাচে একবারই গোল করতে পারেনি রিয়াল। সেটি চলতি আসরে মস্কোর বিপক্ষেই। রাশিয়ার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে মৌসুমের প্রথম হার দেখে গ্যালাকটিকোরা। এবার নিজ মাঠে রীতিমতো ধরাশায়ী হলো রিয়াল। প্রথমার্ধের শেষ বাঁশির আগের ৬ মিনিটে দুই গোল হজম করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ৩৭তম মিনিটে ডি-বক্সের ডান পাশ থেকে গোলপোস্টের বাম দিকে বাঁকানো শটে থিবো কুরতোয়াকে পরাস্ত করেন মস্কোর তরুণ ফরোয়ার্ড ফেদর চালভ। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেয় সিএসকেএ। রাইটব্যাক মারিও ফার্নান্দেসের শট রুখে দিলেও রিয়ালের বেলজিয়ান গোলরক্ষক কুরতোয়ার শেষ রক্ষা হয়নি। বাম পাশে উড়ে আসা বলে এক টাচে ফিনিশিং টানেন লেফটব্যাক জর্জি স্কেনিকভ। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে ডি-বক্স প্রান্ত থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি প্লেসিং শটে ফলাফল ৩-০ করেন তরুণ আইসল্যান্ড মিডফিল্ডার আরনর সিগুরসন। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমে রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ৫০তম ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করেন গ্যারেথ বেল। পুরো ম্যাচে বল দখল ও আক্রমণে এগিয়ে থেকেও বেনজেমা-ইসকো-আসেনসিও-ভিনিয়াসদের চোখেমুখে গোলের জন্য হাহাকারই ফুটে ওঠে। ৬৯% বল পজিশনে রিয়ালের ১৯টি শটের মধ্যে ৬টি ছিল অনটার্গেটে। মস্কোর ১৩ শটের ৫টি অনটার্গেটে। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের ধুয়োধ্বনি শুনতে হয় রিয়ালকে। হারের দায় নিজের কাঁধেই নেন কোচ সান্টিয়াগো সোলারি। রিয়ালের ডাগআউটে ১০ ম্যাচের ৮টিতেই জয় পান এই আর্জেন্টাইন। কিন্তু দুই ম্যাচেই (প্রথমটি লা লিগায় এইবারের বিপক্ষে) ৩-০ গোলে হার দেখলেন রিয়ালের ‘বি’ দল থেকে সিনিয়রদের দায়িত্ব পাওয়া সোলারি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘অনভিজ্ঞ একাদশ নামানোর ঝুঁকি নিয়েছি আমি। এর দায়ভারও আমার। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কিছু তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ফলাফল প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। আমি খুবই ব্যথিত।’ দুর্দান্ত জয় নিয়েও গ্রুপের তলানিতে থেকে আসর শেষ করতে হলো সিএসকেএ মস্কোকে। ‘জি’ গ্রুপের অপর ম্যাচে রোমাকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লীগের শেষ ৩২ রাউন্ডের টিকিট কাটে চেক প্রজাতন্ত্রের ভিক্টোরিয়া প্লাজেন। ভিক্টোরিয়ার সমান ৭ পয়েন্ট হলেও হেড-টু-হেডে তৃতীয় স্থান হাতছাড়া হয় মস্কোর। আগেই দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে শেষ ষোলো রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয় রোমা। ৬ ম্যাচ রিয়ালের সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। রোমার ৯ পয়েন্ট। গ্রুপ পর্বে সিএসকেএ মস্কোর দুইটি জয়ই আসে রিয়ালের বিপক্ষে। আর চার জয়ের বিপরীতে রিয়ালের হারও দুই ম্যাচে। আসরের শেষ ষোলো রাউন্ডের ড্র হবে আগামী ১৭ই ডিসেম্বর।
নকআউট পর্বে উঠলো যারা
গ্রপ ‘এ’: বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
গ্রুপ ‘বি’: বার্সেলোনা, টটেনহ্যাম হটস্পার
গ্রুপ ‘সি’: প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, লিভারপুল
গ্রুপ ‘ডি’: এফসি পোর্তো, শালকা জিরো ফোর
গ্রুপ ‘ই’: বায়ার্ন মিউনিখ, আয়াক্স আমস্টারডাম
গ্রুপ ‘এফ’: ম্যানচেস্টার সিটি, অলিম্পিক লিঁও
গ্রুপ ‘জি’: রিয়াল মাদ্রিদ, এএস রোমা
গ্রুপ ‘এইচ’: জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
নকআউট পর্বে উঠলো যারা
গ্রপ ‘এ’: বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
গ্রুপ ‘বি’: বার্সেলোনা, টটেনহ্যাম হটস্পার
গ্রুপ ‘সি’: প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, লিভারপুল
গ্রুপ ‘ডি’: এফসি পোর্তো, শালকা জিরো ফোর
গ্রুপ ‘ই’: বায়ার্ন মিউনিখ, আয়াক্স আমস্টারডাম
গ্রুপ ‘এফ’: ম্যানচেস্টার সিটি, অলিম্পিক লিঁও
গ্রুপ ‘জি’: রিয়াল মাদ্রিদ, এএস রোমা
গ্রুপ ‘এইচ’: জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড