দেশ বিদেশ
তিন রাজ্যে শক্তি ফিরে পেয়েছে কংগ্রেস
কলকাতা প্রতিনিধি
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
ভারতে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার এক বছরের মাথায় চমক দেখালেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর পুত্র রাহুল গান্ধী। ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ভরাডুবি হয়েছে। অন্যদিকে গোবলয় বলে পরিচিত তিন রাজ্যে কংগ্রেস তাদের হারানো শক্তি ফিরে পেয়েছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মিজোরামের মোট ৬৭৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গণনার শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়েছে বিজেপির ভরাডুবির সম্ভাবনা। শেষে দেখা গেছে, ৫ রাজ্যেই বিজেপি গো হারা হেরেছে। একমাত্র মধ্যপ্রদেশে বিজেপি খানিকটা টক্কর দিয়েছে। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি। রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস বিজেপিকে কয়েক যোজন পেছনে ফেলে জয়ী হয়েছে। জয়ী হয়েছে মধ্যপ্রদেশেও। তবে মিজোরামে কংগ্রেস ক্ষমতা হারিয়েছে। তেলেঙ্গানাতেও কংগ্রেস ও তেলেগু দেশম জোট চন্দ্রশেখর রাওয়ের ধাক্কা সামলাতে পারেনি। চন্দ্রশেখর রাও দ্বিতীয়বারের জন্য তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায় বসতে চলেছেন। পর্যবেক্ষকরা লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিধানসভা নির্বাচনকে কার্যত সেমিফাইনাল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। আর এই সেমিফাইনালে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কী হতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। কোনো রাজনৈতিক দল আবার আঞ্চলিক স্তরে ভালো ফল করার পর জাতীয় পর্যায়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। রাজস্থানে কংগ্রেসের জয়ের অন্যতম কারিগর সচিন পাইলট বলেছেন, রাজস্থানের মানুষ স্পষ্ট জনাদেশ দিয়েছেন। বিজেপির অধিকাংশ মন্ত্রীই এই নির্বাচনে হেরেছেন। তা থেকেই স্পষ্ট, সাধারণ মানুষ বিজেপিকে সব রকমভাবে বর্জন করেছেন। বিজেপির এই বিপর্যয় নিয়ে এনডিএ শরিক শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, এই জয় কংগ্রেসের নয়। মানুষ আমাদের ওপর রাগ করে কংগ্রেসের দিকে চলে গিয়েছে। কেন এরকম হলো, তা খতিয়ে দেখতে হবে আমাদের। বিজেপিরও নিজেদের ভূমিকা নিয়ে আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ভোট গণনা শেষে জানা গেছে, রাজস্থান বিধানসভার ২০০ আসনের মধ্যে ৯৯টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। আর বিজেপি পেয়েছে ৭৫টি আসন। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি ৬টি এবং অন্যরা ১৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। ছত্তিশগড়ে ম্যাজিক সংখ্যা পার করে দিয়েছে কংগ্রেস। ৯০টি আসনের মধ্যে ৬৬টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি মাত্র ১৫টি আসন পেয়ে রাজ্য থেকে ক্ষমতা হারিয়েছে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশে জোর টক্কর হলেও বিজেপিকে পিছনে ফেলে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে ২৩০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ১১৩টি। অন্যদিকে ১০৯টি আসন পেয়েছে বিজেপি। বহুজন সমাজ পার্টি ২টি এবং অন্যরা ৬টি আসনে জয়লাভ করেছে। তেলেঙ্গানায় ৮৮টি আসন জিতে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। মাত্র ২১টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস-তেলেগু দেশম জোট। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১টি আসন। মিজোরামে অবশ্য কংগ্রেস ক্ষমতা হারিয়েছে। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট ২৬টি আসন পেয়েছে। ৫টি আসনে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১টি আসন এবং অন্যরা ৮টি আসন। ছত্তিশগড়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বিজেপির পরাজয় স্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই জয় গণতন্ত্রের। অবিচার, অত্যাচার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন দেশের মানুষ।
পরে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন। তার মতে, এই জয় সারা দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তির জয়।
পরে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন। তার মতে, এই জয় সারা দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তির জয়।