খেলা

টাইগার অধিনায়কের সতর্ক বার্তা

স্পোর্টস রিপোর্টার

১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

দলের তিন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীম ফিফটি হাঁকালেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ স্পর্শ করলেন ৩০-এর ঘর। কিন্তু চারজনই আউট হলেন বাজেভাবে। রান তোলার পাগলামিতে জীবন দিয়ে ফিরলেন সাজঘরে। তাদের এমন আউট হওয়ার কারণে দল যেন আকাশ থেকে আবার নেমে এলো মাটিতে। যেখানে রান হতে পারতো ৩০০, সেখানে ২৫৫ রানেই গুটিয়ে গেল দল তা-ও হাতে তিন উইকেট রেখে। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠের উইকেট, শীতের শিশির আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের কব্জির জোর সবকিছু বাংলাদেশের বিপক্ষে গেলে হার ছিল নিশ্চিত। হলোও তাই যত সময় গড়িয়েছে উইকেট হয়েছে ব্যাটিং স্বর্গ। টাইগার ব্যাটস্যানদের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে শেই হোপ ১৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। বোলারদের দোষ দিয়েও তেমন লাভ নেই। কারণ, ফিল্ডাররা নিশ্চিত পাঁচ ক্যাচ ছেড়েছেন। যেখানে এক রান হয় না দিয়েছেন তারও বেশি। আর তাতেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের আনন্দের সুযোগ মিলিয়ে গেছে ৪ উইকেটের হারে। এখন সিলেটে শেষ ম্যাচই ভরসা। জিতলে বছরটা জয়ের রঙে রাঙিয়ে শেষ হবে। তাই ভুল করা চলবে না। সিলেটে যাওয়ার আগে অধিনায়ক মাশরাফি সতীর্থদের দিয়েছেন সেই সতর্কবার্তা।

বিশেষ করে সিরিজের শেষ ম্যাচে ভুল করা চলবে না বলেই সতর্ক করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি বলেন, ‘ভুলগুলো ঠিক করে নিলে অবশ্যই পরের ম্যাচে আমাদের জেতা সম্ভব হবে। এখানে যা খেলেছি তার চেয়ে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। সিলেটে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে।’ দ্বিতীয় ম্যাচে কোন ভুলে হার তাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘১৫-২০টা রান আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। তামিম-সাকিব টিকে থাকলে রান তিনশ’র কাছে যাওয়ার সুযোগ ছিল। যখন রিয়াদ ও সাকিব ব্যাটিং করছিল, ৪১ ওভার হয়ে গিয়েছিল। আরও ৬-৭ ওভার ব্যাটিং করতে পারলে রান ২৭০-৮০ হয়ে যেত। তখন বোলারদের জন্য সুবিধা হতো।’

 অধিনায়কের কথাতেই স্পষ্ট যে ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে তার আক্ষেপ বেশি। কারণ, দলের তিন সেট ব্যাটসম্যান যেভাবে আউট হয়েছেন তা রীতিমতো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। মাশরাফি বলেন, ‘যেমন উইকেট ছিল, আমরা আলাপ করছিলাম এখানে ২৭০-২৮০ রান হলে ভালো হয়। তামিম ও মুশফিক আউট হওয়ার পরও আমরা ঠিক পথেই ছিলাম। কারণ রাতে উইকেট আরও ভালো হবে, আমরা আলাপ করছিলাম। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দু-তিনটি ফিফটি হলে একটি সেঞ্চুরি বা ৮০-৯০ হচ্ছিলই। দুজন একশ করেছেন, এমনও আছে। আজকে অস্বাভাবিক হয়ে গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে এটা দেখা যায়নি।’

শুধু কি ব্যাটিংয়ের দোষ! বাজে ফিল্ডিং ছিল চোখে পড়ার মতো। শেই হোপ ৬ষ্ঠ উইকেটে কিমো পলকে নিয়ে জুটি বাঁধেন। সেখানে পল নিজের ১৮ রানের ইনিংসে দুবার ক্যাচ দেন। আর তা প্রতিবারই ফেলে দিয়েছেন নাজমুল ইসলাম অপু। এছাড়া গোটা ম্যাচে আছে আরো তিনটি ক্যাচ ছাড়ার আক্ষেপ। ফিল্ডিং কোচের অধীনে এত অনুশীলনেও কি তাহলে কোনো উন্নতি হচ্ছে না! এ নিয়ে টাইগার অধিনায়কের কণ্ঠেও ঝরলো আক্ষেপ। যদিও কোচের কোনো দোষ দিতে চাইলেন না। তিনি বলেন, ‘দেখেন আমাদের কিন্তু ফিল্ডিং  অনুশীলন অনেক ভালো লেভেলে হয়। ছেলেরাও দারুণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু ম্যাচে এমন হয়ে যায়। অপু আসলে চোখে দেখছিল না। তবে আমাদের উন্নতির প্রয়োজন। ভুলগুলো শুধরাতে হবে। এই ভুলগুলো পরের ম্যাচে করা যাবে না।’

অন্যদিকে সিলেটে এখন পর্যন্ত প্রথম টি-টোয়েন্টি, টেস্ট কোনোটিতে জয় আসেনি। এবার প্রথম ওয়ানডেতে জয়টা আসবে কি না তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। তবে অধিনায়ক বিশ্বাস করেন সিলেটে শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে দল। তবে তার জন্য খেলতে হবে দাপুটে ক্রিকেট। মাশরাফি বলেন, ‘আমি মনে করি, সেই দাপট নিয়েই খেলা উচিত। আজকের ম্যাচ অবশ্যই হতাশাজনক, আমরা হেরেছি। তবে একই সঙ্গে কিছু ইতিবাচক ব্যাপারও ছিল। আমরা আরেকটু ভালো করলে হয়তো ম্যাচটা বের করে নিতে পারতাম।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status