এক্সক্লুসিভ

ঢাকা-১১

মাঠে আওয়ামী লীগ গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি

মারুফ কিবরিয়া

১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৩০শে ডিসেম্বর। মাঠে ময়দানে প্রচারণায় ব্যস্ত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পোস্টার টানানো, লিফলেট বিতরণ চলছে পুরোদমে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন প্রার্থীরা। উৎসবের আমেজ নেতাকর্মীদের ভেতর। অন্যদিকে প্রচারণার সময় শুরু হয়ে গেলেও নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নামতে পারছে না বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে ভর করেছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। এরকম চিত্রই পুরো ঢাকা-১১ আসনের।
রাজধানীর ১৫টি আসনের অন্যতম বড় আসন এটি। এখানে  ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান এমপি একেএম রহমতুল্লাহ। অন্যদিকে তার বিপক্ষে লড়ছেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুমের স্ত্রী শামীম আরা বেগম। প্রথমবারের মতো তিনি ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। গত দুইদিন রাজধানীর বাড্ডা, ভাটারা ও শাহজাদপুর, মেরুল বাড্ডা, দক্ষিণ বাড্ডা, রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচনী হাওয়া শুধু যেন আওয়ামী লীগের জন্যই এ আসনটিতে। এসব এলাকার অলিতে গলিতে সর্বত্র শুধু নৌকার প্রচারণা। পোস্টার, ব্যানার এবং লিফলেট সব ধরনের প্রচারণা চলছে এই আসনে। নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযানে কেউ বাসায় থাকতে পারছে না। রাত হলেই নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় হানা দেয় পুলিশ। এছাড়া একেক নেতার নামে-বেনামে ৩০টিরও বেশি মামলা বাড্ডা, ভাটারা, রামপুরা থানায় রয়েছে। তবে এসব প্রতিকূলতার মাঝেও নিয়মিত কর্মীদের নিয়ে মাঠে থাকার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার সকালে গণসংযোগ করেছেন তিনি। বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকা থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ধানের শীষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির এই নেত্রী। তবে ধরপাকড় নিয়েই বেশি আতঙ্কে রয়েছেন দলটির নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির মহানগর উত্তরের এক নেতা জানান, তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। গত দুই মাসে তার বিরুদ্ধে বাড্ডা ও ভাটারা থানায় এসব মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি হাইকোর্ট থেকে অনেক মামলার জামিন নিয়েছি। এখনো তিন চারটির জামিন পাইনি। অপেক্ষা করছি শিগগিরই জামিন পেয়ে যাবো। তখন দলের জন্য পুরোদমে মাঠে নামবো। আমি ছাড়াও ঢাকা উত্তরের অনেক বড় বড় নেতার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছে। কেউ ঘরে থাকতে পারছে না। আমি গত তিন মাস বাড়ির বাইরে। বাসায় পুলিশ এসে হানা দেয়। স্ত্রী সন্তানরা ভয়ে কান্নাকাটি করে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। সামনে নির্বাচন। নির্বাচনী  প্রচারণায় দলের সঙ্গে থাকা জরুরি। কিন্তু আমরা অনেকেই সেটা পারছি না। কেউ প্রচারণায় অংশ নিলেই তাকে আটক করে মামলা দিয়ে দেয়। ধরপাকড়ের পাশাপাশি গতকাল ভাটারা থানার বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট কফিল উদ্দিনকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার অভিযোগও করে দলটি। এ প্রসঙ্গে দলের প্রার্থী শামীম আরা বেগম সাংবাদিকদের জানান, আমরা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানাবো। এভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের মারা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে অভিযোগ দেবো।
ঢাকা-১১ আসনে গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে রয়েছেন একেএম রহমতুল্লাহ। লম্বা সময়ে সম্পূর্ণটা না হলেও বাড্ডা ও ভাটারা পুরোটাই এখন তার নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করছেন এখানকার এলাকাবাসী। তারা মনে করছেন, রহমতুল্লাহর নিজের এলাকা বলেই এখানে আধিপত্য বিস্তার করতে পারছেন। অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করেন, নিয়ন্ত্রণ বা আধিপত্য যে-ই করুক ৩০শে ডিসেম্বরের হিসাব-নিকাশেই সব নির্ধারণ হবে। ভোটের জয়েই বোঝা যাবে কে কত বেশি জনপ্রিয়। আতিক নামের এক চাকরিজীবী বলেন, আমি জন্ম থেকে বাড্ডা এলাকায় থাকি। এখানকার নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগের প্রার্থীরই। তবে আমি মনে করছি নিয়ন্ত্রণ আসলে বড় কোনো বিষয় নয়। নির্বাচনের দিন জনগণের ভোটে যে জয়ী হবে সেদিনই বোঝা যাবে কে বেশি জনপ্রিয়। আসলে জনগণ কাকে চায়। অন্যদিকে নাফিউর রহমান নামের ব্যবসায়ী বলেন, এই এলাকায় এমপি রহমতুল্লাহই বারবার এমপি হয়েছেন। পুরো ঢাকা-১১ আসনে তিনি বেশ জনপ্রিয়। বিজয় হলে তারই হবে। গত পাঁচ বছরে অনেক উন্নয়ন তার হাত ধরেই হয়েছে।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status